বৃষ্টি হলেই জমে হাঁটু পানি

রাজধানী

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাতভর টানা বৃষ্টিতে রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন নগরবাসী। রোববার রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত টানা বৃষ্টিতে ডুবে গেছে রাজধানীর রাস্তা ও ফুটপাত। এতে অনেক সড়কে সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ যানজট।
গুলিস্তান, মতিঝিল, কারওয়ানবাজার, ফার্মগেট, মালিবাগ, রামপুরা, পুরান ঢাকা, মিরপুর, তেজগাঁও, মোহাম্মদপুর, শান্তিনগর, বাড্ডা, মতিঝিল ও খিলক্ষেতসহ বিভিন্ন এলাকার সড়কে পানি উঠে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। শুধু প্রধান সড়কগুলোই নয়, বিভিন্ন অলিগলি এবং বিভিন্ন বাসা-বাড়িতেও পানি উঠেছে বলে জানান নগরবাসী।
শনিরআখড়া থেকে তেজগাঁওয়ে যাওয়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আসিফ মাহবুব জানান, টানা বৃষ্টিতে গুলিস্তান, মালিবাগ, মগবাজার, সাতরাস্তা, তেজগাঁওয়ের সব রাস্তায়ই পানি জমে গেছে। ফলে এই পথ দিয়ে অফিসে আসা আজ খুব বেশিই কষ্টকর ছিলো। জলাবদ্ধতার কারণে এসব সড়কে যানজটও ছিল, যা গত কয়েকমাসে দেখিনি।
কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী সুমন পাটোয়ারি জানান, বাসা থেকে আসতে সব রাস্তায়ই পানি দেখেছি। টানা বৃষ্টিতে অনেক রাস্তাই তলিয়ে গেছে। কারওয়ানবাজারে আমার প্রতিষ্ঠানের নিচেও হাঁটু পানি। আর জমে থাকা পানিতে চলাচলও অনেক কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে।
রাজধানীর অভিজাত এলাকার মধ্যে অন্যতম ধানমন্ডি। তাই এই এলাকার অধিকাংশ রোডেই জলাবদ্ধতা খুব একটা চোখে পড়ে না। তবে ধানমন্ডির জিগাতলা বাসস্ট্যান্ড থেকে হাজারিবাগ ও ট্যানারি মোড় যাওয়ার রাস্তায় অল্প বৃষ্টিতেই তৈরি হয় জলাবদ্ধতা। এ রাস্তার এক থেকে দেড় কিলোমিটারে অল্প বৃষ্টিতেই জমে যায় হাঁটু পানি, কোথাওবা তার চেয়েও বেশি। ফলে এলাকাবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সোমবার ওই রাস্তায় সরেজমিনে গিয়ে এবং এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র পাওয়া গেছে। রাত থেকে শুরু হয়ে সকাল ৯টায় বৃষ্টি থামলেও দুপুর ১টা পর্যন্ত ওই রাস্তায় কোথাও হাঁটু আবার কোথাও তার চেয়েও বেশি জলাবদ্ধতা দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ধানমন্ডির জিগাতলা বাসস্ট্যান্ড থেকে হাজারিবাগ দিকে ঢুকতেই শুরু হয়েছে জলাবদ্ধতা। বাসস্ট্যান্ড থেকে হাজারিবাগের দিকে প্রায় আধা কিলোমিটার পর্যন্ত রাস্তায় জমে রয়েছে হাঁটু পানি। এছাড়া এ রাস্তা দিয়েই পুরোনো জিগাতলা কাঁচাবাজারের দিকে প্রায় এক কিলোমিটারে কোথাও আধ হাঁটু আবার কোথাও হাঁটুর চেয়েও বেশি পানি জমে থাকতে দেখা গেছে।
এ রাস্তা দিয়ে বাস চলাচল না করলেও হিউম্যান হলার, রিকশা, মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার, সিএনজিসহ অন্যান্য যানবাহনে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের যাতায়াত। হাঁটু পরিমাণ ময়লা পানিতে কাপড় নাষ্টসহ আছাড় খাওয়ার তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়েই এ রাস্তায় নিত্য যাতায়াত এলাকাবাসীর। কারণ হাজারিবাগ, ট্যানারি মোড়সহ রায়ের বাজার টালি অফিসের বাসিন্দাদের জন্য এছাড়া বিকল্প কোনো রাস্তা নেই।
জলাবদ্ধাতার বিষয়ে জানতে চাইলে জিগাতলা পুরোনো কাঁচাবাজার এলকার বাসিন্দা পিন্টু ইসলাম বলেন, এ রাস্তায় অল্প বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। আর সকালের দিকে বৃষ্টি হলে এ জলবদ্ধতা থেকে যায় সারাদিন। এ এলাকার পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো নয়। একটা পাম্প থাকলেও সেটা অধিকাংশ সময় বন্ধ থাকে। এর জন্য যে তেল রবাদ্দ থাকে তা চুরি হয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, গত পাঁচ থেকে ছয় বছর যাবৎ এ সমস্যা রয়েছে। কাউকে সংস্কারের কথা বলে কাজ হয়নি। তবে এতদিন পর এই বর্ষা মৌসুমে স্যুয়ারেজ ব্যবস্থা ঠিক করার কাজ শুরু হয়েছ। এতে আজ জলাবদ্ধতা আরও বেড়েছে।
এ প্রসঙ্গে রিকশাচালক জাহিদুল ইসলাম বলেন, এ রাস্তায় অল্প বৃষ্টিতেই পানি জমে যায়। এতে যাত্রীদের নিয়ে যেতে খুব কষ্ট হয়। বিশেষ করে নারী যাত্রী কোথাও নামতে চাইলে খুবই বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয় তাদের।
এদিকে আবহাওয়া অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৯টা পর্যন্ত রাজধানী ঢাকায় ৬৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।


বিজ্ঞাপন