বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ বাড়ল ১০হাজার কোটি টাকা

অর্থনীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঊর্ধ্বমুখী ধারায় থাকা শেয়ারবাজার আরও একটি সপ্তাহ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্য দিয়ে পার করেছে। মূল্য সূচক বাড়ার পাশাপাশি গত সপ্তাহজুড়ে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। এতে এক সপ্তাহেই বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের পরিমাণ বেড়ে গেছে। তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে এই বিনিয়োগ বেড়েছে।
বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ বড় অংকে বাড়ার সপ্তাহে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্য বেড়েছে প্রায় দুই শতাংশ। তবে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। সপ্তাহটিতে লেনদেনের পরিমাণ প্রায় ৩০ শতাংশ কমে গেছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৭৮৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৯ হাজার ৮৬৭ কোটি টাকা। বাজার মূলধন বাড়ার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ওই পরিমাণ বেড়েছে।
এদিকে গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৭৯ দশমিক ১১ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৬৫ শতাংশ। এর মাধ্যমে টানা ১০ সপ্তাহ সূচকটি বাড়ল। আগের সপ্তাহটি সূচকটি বাড়ে ৯০ দশমিক ৭৫ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৯৩ শতাংশ।
তার আগের আট সপ্তাহে ৩৩৮ দশমিক ৪৯ পয়েন্ট, ১৫০ দশমিক ৪০ পয়েন্ট, ১৩৩ দশমিক ৪৯ পয়েন্ট, ১১ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট, ৭ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট, ৭৪ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট, ১৭ দশমিক ৪৫ পয়েন্ট এবং ৬ দশমিক ৭৩ পয়েন্ট বাড়ে সূচকটি। অর্থাৎ টানা ১০ সপ্তাহের উত্থানে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক বেড়েছে ৯১০ পয়েন্ট।
প্রধান মূল্য সূচকের পাশাপাশি গত সপ্তাহে উত্থান হয়েছে ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচকের। শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত এ সূচকটি গত সপ্তাহে বেড়েছে ৩০ দশমিক ২৭ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এ সূচকটিও টানা ১০ সপ্তাহ বাড়ল। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১১ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট বা ১ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ।
তার আগের আট সপ্তাহে এ সূচকটি ৭৭ দশমিক ৩৬ পয়েন্ট, ৩৪ দশমিক ৬১ পয়েন্ট, ৩০ দশমিক শূন্য ৮ পয়েন্ট, দশমিক ৬১ পয়েন্ট, ৬ দশমিক ৮৫ পয়েন্ট, ১৬ দশমিক ৮৫ পয়েন্ট, ২ দশমিক ৬১ পয়েন্ট এবং দশমিক ৯৪ পয়েন্ট বাড়ে।
বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইর আর একটি সূচক ডিএসই-৩০। এ সূচকটি গত সপ্তাহে বেড়েছে ৪৩ দশমিক শূন্য ৩ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৬১ শতাংশ। এর মাধ্যমে সূচকটি টানা ছয় সপ্তাহ বাড়ল। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৫২ দশমিক ৭৬ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ৩১ শতাংশ। তার আগের চার সপ্তাহে ১১৮ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট, ৫৫ দশমিক ২৪ পয়েন্ট, ৪৬ দশমিক শূন্য ৫ পয়েন্ট এবং ৫ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট বাড়ে সূচকটি।
এদিকে গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ১৮১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫০টির। আর ২৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সূচক ও বাজার মূলধন বাড়ার সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনের গতি কমেছে। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৮২৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ১ হাজার ১৭৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৩৫০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা বা ২৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৪ হাজার ১৪৪ কোটি ২২ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ৫ হাজার ৮৯৮ কোটি টাকা। সে হিসেবে মোট লেনদেন কমেছে ১ হাজার ৭৫৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।
গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনে ‘এ’ গ্রুপ বা ভালো কোম্পানির অবদান ছিল ৮২ দশমিক ১৪ শতাংশ। এছাড়া ‘বি’ গ্রুপের ১৪ দশমিক ৯৪ শতাংশ, ‘জেড’ গ্রুপের ১ দশমিক ৮৪ শতাংশ এবং ‘এন’ গ্রুপের ১ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ অবদান ছিল।
গত সপ্তাহে ডিএসইর মূল বাজারে টাকার অংকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে-বেক্সিমকো, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, ওরিয়ন ফার্মা, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, গ্রামীণফোন, আইএফআইসি ব্যাংক, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো, ব্র্যাক ব্যাংক এবং বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন।


বিজ্ঞাপন