ডিএসসিসিকে মর্যাদাশীল সংস্থা হিসেবে গড়ে তুলবো: তাপস

রাজধানী

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন-ডিএসসিসিকে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ও মর্যাদাশীল সংস্থা হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন ডিএসসিসির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
মঙ্গলবার দুপুরে নগর ভবনের মেয়র হানিফ অডিটোরিয়ামে ডিএসসিসি’র কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মেয়র বলেন, ‘আজ আপনারা জনবল সংকটসহ অনেক সমস্যার কথা বলেছেন, অনেক সংকটের কথা বলেছেন। আমি খুব খুশি হতাম যদি আপনারা বলতেন, ডিএসসিসি’র মর্যাদা ফিরিয়ে আনতে আপনারা নিরলসভাবে পরিশ্রম করবেন। আপনাদের কর্মক্ষেত্র তথা আপনাদের পেশার সম্মান ফিরিয়ে আনতে কাজ করে যাবেন। আপনারা কেউ সেটা বলেননি। আপনাদেরকে মনে রাখতে হবে, প্রতিকূলতা বিহীন কোনও যাত্রা পথ নেই। সেটা যেমন জীবন সংগ্রামে আছে, তেমনি সব যাত্রাপথেই সেই প্রতিকূলতা থাকবে। কিন্তু সেই প্রতিকূলতার কারণে কেউ কোনও কিছু অর্জন করতে চেয়ে তা পারেনি, সেরকম নজির নেই। সব প্রতিকূলতা অতিক্রম করেই অর্জন হয়ে থাকে। তাই, আগে কীভাবে চলছে, আমি সেদিকে ফিরে যেতে চায় না। কিন্তু আমার সংস্থায় আমি ভিক্ষা করে চলতে চাই না। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা দেওয়ার পরে সেই যুদ্ধবিধ্বস্ত অবস্থাতেই বলেছিলেন, আমি ভিক্ষুকের জাতি চাই না। আমি চাই বাংলাদেশ স্বয়ং সম্পূর্ণ হোক। আমার লক্ষ্য থাকবে, জাতির পিতার সেই স্বপ্ন ও প্রধানমন্ত্রীর রূপকল্প বাস্তবায়নে ডিএসসিসিকে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ও মর্যাদাশীল সংস্থা হিসেবে গড়ে তোলা। ’
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজের সুবিধার্থে ও রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে পর্যায়ক্রমে সব সমস্যা ও সংকটের যথাযথ সমাধান করা হবে জানিয়ে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস আরও বলেন, ‘দুষ্টের দমন সৃষ্টের লালন অব্যাহত থাকবে। যারা ভালো কাজ করবেন, যারা আন্তরিকতা-নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন, আমরা তাদেরকে অবশ্যই মূল্যায়ন করবো। আর যারা দুর্নীতিগ্রস্ত থাকবেন, তাদের বিরুদ্ধে অনতিবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তাদেরকে অপসারণ করা হতে পারে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে। এ ব্যাপারে কোনও রকম ছাড় দেওয়ার প্রশ্ন তো নেই, এ ব্যাপারে কোনও অলসতাও বরদাস্ত করা হবে না।’
রাজস্ব আদায় তদারকির লক্ষ্যে প্রতি তিনমাস অন্তর সব কর্মকর্তাদেরকে নিয়ে পর্যালোচনা সভা করা হবে জানিয়ে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস এ সময় আরও বলেন, এখন থেকে সব উপ-কর কর্মকর্তারা প্রতিদিন কর কর্মকর্তাদের নিকট দৈনন্দিন পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেবেন। কে কোথায় কী কাজ করেছেন? কত আদায় হয়েছে, আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা কতটুকু অর্জিত হয়েছে ও কতটুকু হয়নি? এসব তথ্যাদি প্রতিবেদনে থাকতে হবে। এরপর সব কর কর্মকর্তারা সপ্তাহের প্রতি বৃহস্পতিবার প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তার নিকট তাদের কাজের পরিপূর্ণ প্রতিবেদন দাখিল করবেন। কাজ করতে গিয়ে কোথাও কোনও সমস্যা হলে তা প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তার মাধ্যমে আমাদেরকে অবহিত করবেন। আমরা চেষ্টা করবো তার তাৎক্ষণিক সমাধান দিতে।
রাজস্ব আদায়ের চিত্র পরখ করে দেখতে যে কোনও সময় যে কোনও বাড়ি, স্থাপনা বা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে যেতে পারেন জানিয়ে ডিএসসিসি মেয়র সতর্ক করে বলেন, কোথাও গিয়ে কারও বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা, গাফিলতি পরিলক্ষিত হলে, সে সময় কোনও অজুহাত চলবে না। তখন সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ডিএসসিসির নবনিযুক্ত প্রধান নিবার্হী কর্মকর্তা এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, ‘সিটি করপোরেশন একটি সেবামূলক সংস্থা। এই সংস্থাকে জনবান্ধব সংস্থায় পরিণত করতে আপনাদের আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলে, আমরা এই অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করতে পারওবা বলেই বিশ্বাস করি। ’
মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে করপোরেশনের সচিব আকরামুজ্জামানসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


বিজ্ঞাপন