র‌্যাবের অভিযানে প্রতারকচক্রের ২৮জন গ্রেফতার

অপরাধ

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর মিরপুর, ভাটারা এলাকা এবং আশুলিয়া-সাভার থেকে ভুয়া চাকুরিদাতা প্রতিষ্ঠানের ২৮জন প্রতারককে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। একইসঙ্গে পৃথক অভিযানে চাকরিপ্রার্থী ৫০জন ভুক্তভোগীকেও উদ্ধার করা হয়েছে। র‌্যাব-৪ এর অপারেশন অফিসার সহকারী পুলিশ সুপার মো. জিয়াউর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায় যে, কিছু ভুয়া নামধারী ভিন্নভিন্ন কোম্পানি চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে মোটাঅঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-৪ এর বিশেষ আভিযানিক দল রোববার দুপুর ২টার পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজধানীর মিরপুর, ভাটারাসহ ঢাকা জেলার আশুলিয়া-সাভার এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় ভিন্নভিন্ন ভুয়া চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানের চাকরিপ্রার্থী মোট ৫০ ভুক্তভোগীকে উদ্ধারসহ ২৮জন প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়। র‌্যাব জানায়, রাজধানীর শাহআলী থানার মুক্তবাংলা শপিং কমপ্লেক্সে, প্রসেস সিকিউরিটি সার্ভিস লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠান হতে ৬৫টি জীবন বৃত্তান্ত ফর্ম, তিনটি সিল, একটি ব্যানার, চারটি ডায়রি এবং চারজন ভুক্তভোগীসহ ভুয়া চাকরিদাতা ৬জন প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন, মো. মোসলেউদ্দিন (৪২), মো. ফজলুল ইসলাম (৪০), মো. আব্দুল মান্নান (৫২), মো. রেজওয়ান মাহমুদ রনি (২১), রাজুচন্দ্র শর্মা (২৪) ও মো. সাখাওয়াত হোসেন সজিব (২২)। এছাড়া, রাজধানীর কাফরুল থানার সেনপাড়া পর্বতা এলাকায় ইয়েশার ইন্টারন্যাশনাল নামক প্রতিষ্ঠান হতে দ’ুটি ভর্তির আবেদন বই, দুটি অঙ্গীকারনামা বই, চারটি স্ট্যাম্প সিল, একটি ব্যানার, সাতটি আইডি কার্ড, তিনটি টাকা জমার রশিদ বই, একটি টাকা খতিয়ান বই, নগদ ৮ হাজার ৩৯৬ টাকা ও ১৬ জন ভুক্তভোগীসহ ভুয়া চাকরিদাতা ৫জন প্রতারককে গ্রেফতার করে র‌্যাব। তারা হলেন, আল-রাব্বি হাসা (৩৫), নুর কালাম (৩১), হাসিবুর রহমান (২১), ফয়েজ (২৮) ও মো. মামুন মিয়া (২১)।
আবার রাজধানীর প্রগতি সরণির নর্দা এলাকায় আমিন সিকিউরিটি সার্ভিস লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠান হতে ২২টি চাকরির বিজ্ঞাপন, ১৮টি ব্যাংকে টাকা জমার রশিদ, সাতটি রেজিস্টার বই, ৬৫টি জীবন বৃত্তান্ত ফর্ম, ৫০টি লিফলেট, ৭১টি বিজ্ঞাপন, আটটি সিল ও ৯জন ভুক্তভোগীসহ ভুয়া চাকরিদাতা দু’জন প্রতারককে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, গোলাম মোস্তফা (৫৫) ও তোফাজ্জল হোসেন (৫২)। র‌্যাব আরও জানায়, ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন টোংগাবাড়ি এলাকায় জিম সিউিনিটি লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠান হতে ৪০টি নিয়োগ বিজ্ঞাপন ফর্ম, তিনটি ভর্তি ফর্ম, সাতটি হলফনামা, ১০টি আইডি কার্ড, সাতটি যোগদানপত্র ও ১৫জন ভুক্তভোগীসহ ভুয়া চাকরিদাতা ১৪জন প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলেন, মো. সোহেল রানা (৩২), মো. ইমরান (১৮), মো. রাসেল (১৮), মো. বাদল আহমেদ (১৮), মো. তাওসিফ (২০), মো. ইমরুল কায়েস (২৪), মোছা. মোস্তাফিম মজরিনা ওরফে হ্যাপি (২১), মো. রাব্বি মাহমুদ (১৮), ইব্রাহিম শেখ (২৪), চয়ন বাড়ই (১৯), মো. ফাহাদ (১৮), মো. হাবিব (১৮), হালিমা আক্তার (১৮) ও জহুরা আক্তার বিথি (১৯)। র‌্যাব আরো জানায়, ঢাকা জেলার সাভার থানার কালমা এলাকা থেকে আয়কর অফিসে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে দ’ুটি ভুয়া নিয়োগপত্র ও ৬জন ভুক্তভোগীসহ ভুয়া চাকরিদাতা ১জন প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ব্যাক্তির নাম মো. গিয়াস সরদার (৬০)। এসব গ্রেফতারকৃতরা র‌্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, তারা রাজধানী ঢাকাসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় অফিস ভাড়া করে বিভিন্ন নামে বেনামে ভূঁইফোড় প্রতিষ্ঠান খুলে দেশের বিভিন্ন স্থান হতে মধ্যশিক্ষিত বেকার ও আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল যুবক, যুবতীদের আকর্ষণীয় ও উচ্চ বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ প্রতারক চক্রটি ভুক্তভোগী জনসাধারণের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল। এদের বিরুদ্ধে সুনিদিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অন্যান্য প্রতারক সদস্যদের গ্রেফতারের জন্য গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে বলেও জানিয়েছে র‌্যাব-৪।


বিজ্ঞাপন