আওয়ামী লীগের কাউন্সিল আগামী অক্টোবরে। সভাপতির পদ পরিবর্তন না হলেও প্রতিবছর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে কিন্তু চমক থাকে। সভাপতির পর আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারক সংস্থা হলো সভাপতি মন্ডলী বা প্রেসিডিয়াম।
গত কাউন্সিলে প্রেসিডিয়াম আবদুল মান্নান খানের অন্তর্ভূক্তি ছিলো বড় চমক। তার আগের কাউন্সিলে প্রেসিডিয়াম থেকে তোফায়েল আহমেদ, আমীর হোসেন আমুর বাদ পরাটা ছিলো বড় বিস্ময়। বিগত কাউন্সিলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদে পরিবর্তন আনা হয়। গত দুটি কাউন্সিলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এবার কাউন্সিলে কি ধরনের পরিবর্তন হতে পারে? যদিও অনেকেরই মনে হতে পারে, আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের এখনও ঢের সময় বাকি। তাই কাউন্সিলে কি ধরনের চমক থাকবে, কারা আসবে বা বাদ যাবে তা এখনই চুড়ান্ত হবে না। কিন্তু যারা আওয়ামী লীগ সভাপতিকে ঘনিষ্ঠভাবে চেনেন, তারা জানেন, শেখ হাসিনা কমিটি পরিকল্পনা অনেক আগে থেকেই করেন। তার ডায়রীতে তিনি নেতাদের ভালো এবং মন্দ কাজের নোট রাখেন। আগে থেকেই তাই অনুমান করা যায় কমিটিতে কারা নেতৃত্বে আসবেন বা কারা বাদ পড়বেন।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে এবার অনিবার্যভাবেই আসবেন যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী। দীর্ঘ আট বছর তিনি যুবলীগের নেতৃত্ব দিয়েছেন। এবার তাকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে দেখা যাবে তা মোটামুটি নিশ্চিত। তবে তিনি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হবেন নাকি প্রেসিডিয়ামের সদস্য হবেন তা নিশ্চিত নয়। একইভাবে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা কাওসারও এবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আসবেন তা নিশ্চিত। তিনি হয়তো কোনো সম্পাদক পদ পেতে পারেন। মন্ত্রীত্ব থেকে বাদ পড়ায় কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মির্জা আযমের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হবার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। সেটা না হলেও তিনি যে সম্পাদক মণ্ডলীর দায়িত্ব পাবেন তা মোটামুটি নিশ্চিত। আওয়ামী লীগের সাধারণ সাম্পাদক পদে যদি পরিবর্তন না হয় সেক্ষেত্রে জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং আবদুর রহমান প্রেসিডিয়ামে অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন। মনোনয়ন বঞ্চিত সাবেক ডাকসু ভিপি আখতারুজ্জামানকে সম্পাদকমন্ডলীতে দেখা যেতে পারে।
আওয়ামী লীগের একাধিক ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে, এবার আওয়ামী লীগে তারুণ্যের প্রাধান্য দেখা দেবে । যেহেতু মুল নেতৃত্বের পরিবর্তনের ইঙ্গিত ইতিমধ্যে দেয়া হয়েছে; তাই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরুণদের বেশীকরে স্থান দেয়া হতে পারে। তবে, পুরো ব্যাপারটাই নির্ভর করেছে, সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনা কি আরো এক মেয়াদে দায়িত্ব নেবেন কিনা, সেই প্রশ্নের উপর। আওয়ামী লীগ সভাপতি ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এটাই তাঁর শেষ মেয়াদ। এরপর তিনি আর প্রধানমন্ত্রী পদে থাকবেন না। সেই হিসেবে ২০২৪ সালের নির্বাচনে তিনি প্রধানমন্ত্রীত্ব নেবেন না। যদিও তিনি দলের সভাপতির পদ ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেননি। অবশ্য প্রতিবার কাউন্সিলেই তিনি দলের সভাপতি পদ ছাড়ার অভিপ্রায় ব্যাক্ত করেন। কিন্তু কর্মীদের আবেগের কাছে তিনি পরাস্ত হন। তবে আওয়ামীলীগ সভাপতির ঘনিষ্ঠরা বলেছেন আগামি বছর জাতির পিতার জন্মবার্ষিকী এবং মুজিব বর্ষের সূচনা। আর ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি। তাই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের বড় পরিবর্তন এই কাউন্সিলে অসম্ভব।
— বাংলা ইনসাইডার