জাপানি ব্যবসায়ীদের প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য জাপানি বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমরা আমাদের রপ্তানি বাণিজ্যে বৈচিত্র্য দেখতে চাই। এক্ষেত্রে, জাপানি ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে রপ্তানি কেন্দ্রিক খাতগুলোতে বিনিয়োগের জন্য নতুন নতুন ক্ষেত্র অনুসন্ধানের আহ্বান জানাই।
বুধবার সকালে টোকিওতে জাপান-বাংলাদেশ বিজনেস ফোরাম আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে জাপানের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের এ আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ-জাপানের মধ্যকার চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সুযোগ নিয়ে বাণিজ্যিক সম্পর্ককে সর্বোচ্চ উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। বলেন, বিদেশি বিনিয়োগে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ অন্যতম উদার একটি দেশ। বাংলাদেশে আইনের মাধ্যমে বিদেশি বিনিয়োগ সুরক্ষা, উদার ট্যাক্স পলিসি, যন্ত্রপাতি আমদানিতে কর রেয়াত সুবিধা দিচ্ছে বাংলাদেশ। শতভাগ বিদেশি মালিকানা, লভ্যাংশ এবং মূলধনের পূর্ণ প্রত্যাবর্তন সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ইইউ, কানাডা এবং জাপান সহ বিশ্বের বেশিরভাগ শীর্ষ বাজারে অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্রবেশাধিকারের কথা উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, খরচ, মানব সম্পদ, বিশাল অভ্যন্তরীণ বাজার, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ সুবিধা, বাণিজ্য সুবিধা, বিনিয়োগ সুরক্ষা ইত্যাদির বিচারে বাংলাদেশ দ্রুত উদীয়মান আকর্ষনীয় বিনিয়োগ স্থল। বহু জাপানী কোম্পানি এ সুবিধা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যবসা করছে।
জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৮ দশমিক ১৩ অর্জনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চলমান প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকলে এটিকে ডাবল ডিজিটে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। প্রাইস ওয়াটার হাউস কুপারস এর প্রতিবেদনে বাংলাদেশ অর্থনীতিতে শীর্ষ ৩২টি দেশের মধ্য রয়েছে, ২০৫০ সালের মধ্যে অন্যতম শক্তিশালী দেশের মধ্যে একটি হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকা শক্তি বেসরকারি সেক্টর উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি উদ্যোক্তা তৈরিতে এবং বেসরকারি বিনিয়োগে, এটা দেশি বা বিদেশি হতে পারে। সারা দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। এর মধ্যে আড়াই হাজারে জাপানের জন্য একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্দিষ্ট করা আছে। সরকার টু সরকার এবং পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ মডেলে চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরীতে প্রচুর জায়গা নেওয়া হয়েছে। দুটি সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের কাজ চলছে এবং আরো ২৬টি হাই-টেক পার্ক ও সফটওয়ার টেকনোলজি পার্ক নির্মাণাধীন রয়েছে।
বাংলাদেশের ৮০০ আইটি কোম্পানির মধ্যে দেড়শ কোম্পানি বিদেশি গ্রাহকদের বিশেষ আইটি সেবা দিচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাইক্রোসফট, ইনটেল, আইবিএম, ওরাকল, সিকসোসহ স্বনামধন্য কোম্পানিগুলোতে বাংলাদেশের ২০ হাজার আইটি বিশেষজ্ঞ কাজ করছে বলে জানান শেখ হাসিনা।
জাপানি ব্যবসায়ীদের কাছে বাংলাদেশের তৈরি পোষাক শিল্পের বৈশ্বিক সুনাম, ওষুধ শিল্প ও জাহাজ নির্মাণ শিল্পের সম্ভবনার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে বাংলাদেশ সরকারের নীতির প্রশংসা করেন জাপানের শীর্ষ ব্যবসায়ীরা।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ও জাপানের বিভিন্ন ব্যবসায়ীক ও অর্থনৈতিক সংগঠনের নেতারা।