অনুষ্ঠানে অংশ নিতে লাগবে করোনা নেগেটিভ সনদ
নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষ্যে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে ১০ দিনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে সরকার। অনুষ্ঠানে চার দেশের রাষ্ট্রনেতা আসছেন। বুধবার সচিবালয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে গঠিত নিরাপত্তাবিষয়ক উপ-কমিটির সভা শেষে কমিটির আহ্বায়ক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষ্যে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে আগামী ১৭ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত ১০ দিনব্যাপী ধারাবাহিকভাবে অনুষ্ঠান আয়োজন হবে। সেই অনুষ্ঠানে এখন পর্যন্ত চারজন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান অংশগ্রহণ করবেন বলে আমরা জেনেছি। অনুষ্ঠানস্থলে নিরাপত্তার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন নিরাপত্তাবিষয়ক উপ-কমিটি নিরাপত্তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
কোন কোন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান আসছেন জানতে চাইলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি, শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী, নেপালের রাষ্ট্রপতি এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফর নিশ্চিত হয়েছে।
এর আগেরবার যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে এসেছিলেন, তখন বিক্ষোভ হয়েছিল। এবার তেমন কোনো আশঙ্কা আছে কিনা-জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কাছে এ ধরণের কোনো গোপন সংবাদ নেই। এ ধরণের পরিস্থিতি হবে কিনা আমরা এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। আমরা মনে করি, সবাই বাংলাদেশকে ভালোবাসে, সবাই বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসে। আমাদের জাতির পিতার উৎসবে কেউ ডিস্টার্ব করবে বলে আমরা মনে করছি না।’
‘এটা গণতান্ত্রিক দেশ, তাদের বাকস্বাধীনতা রয়েছে। কে কী বলল, সেটা তো আপনারা সবসময় দেখেন। অনেক কিছু বলে, যেটার কোনো মিনিং হয় না। আমি মনে করি এই ধরণের কোনো সিচুয়েশন হবে না। আমরা সবার সহযোগিতা চাই’- বলেন আসাদুজ্জামান খান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা ধানমন্ডিতে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তক অর্পণকালে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিদেশি কূটনৈতিকদের সব অনুষ্ঠানস্থলে আনা-নেয়ার সময় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। ১০ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে আগত রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান, বিশিষ্ট ব্যক্তিসহ বিদেশি অতিথিদের সব যাতায়াতে নিরাপদ ব্যবস্থা এবং যে হোটেলে তারা অবস্থান করবেন সেখানে নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হবে। সব অনুষ্ঠানে গোয়েন্দা নজরদারি থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সমন্বয়ের জন্য একটি নিরাপত্তা কন্ট্রোল রুম থাকবে। তাছাড়া যেকোনো ধরণের অনাকাঙ্খিত ঘটনা রোধে ৯৯৯ সেবা সার্ভিস সবসময় চালু থাকবে। সব অনুষ্ঠানে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, প্রয়োজনীয় অ্যাম্বুলেন্সসহ ফায়ার সার্ভিস নিয়োজিত থাকবে। ইমার্জেন্সি মেডিকেল সাপোর্ট সেখানে থাকবে। বিদেশি রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা ঢাকার বাইরে যেসব অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বা পরিদর্শনে যাবেন সেখানে গোয়েন্দা নজরদারিসহ নিরাপত্তার সব ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
১০ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের সময় কীভাবে যান চলাচল করবে সে বিষয়ে আগেই জানিয়ে দেয়া হবে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে অংশ নিতে লাগবে করোনা নেগেটিভ সনদ : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষ্যে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের অংশ নিতে করোনা নেগেটিভ সনদ লাগবে।
বুধবার সচিবালয়ে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে গঠিত নিরাপত্তা বিষয়ক উপ-কমিটির সভা শেষে কমিটির আহ্বায়ক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষ্যে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে আগামী ১৭ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত ১০ দিনব্যাপী ধারাবাহিকভাবে অনুষ্ঠান আয়োজন হবে। অনুষ্ঠানস্থলে নিরাপত্তার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন নিরাপত্তা বিষয়ক উপ-কমিটি নিরাপত্তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘অনুষ্ঠানে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে সরকারের নেয়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ করা হলো। সবাইকে অনুষ্ঠানস্থলে গেলে করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে।’
পরে এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, ‘আমরা যে আয়োজনটা করছি এখানে সীমিত আকারে করছি। যেহেতু স্বাস্থ্যবিধি মেনে করতে হচ্ছে সেজন্য বড় আকারে জনসমাগম করা হচ্ছে না। পুরো প্রোগ্রামটি সারা পৃথিবীতেই সম্প্রচার করা হবে, সেভাবে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। এটা বড় ধরণের প্রোগ্রাম এবং সবাই যাতে দেখতে পারে। সেজন্য একটা প্রোডাকশন টিমও এটার জন্য কাজ করছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যে ক-দিনে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র বা সরকার প্রধানরা আসবেন, সেই দিনগুলোতে আমরা বিশেষ ব্যবস্থা রেখেছি, তখন সীমিত আকারে বিশেষ ব্যবস্থা। বিভিন্ন সেক্টরে ৫০০-এর মতো মানুষকে দাওয়াত দেয়া হবে। ভাগ করে করে এই দাওয়াত দেয়া হবে, এতে যতটুকু কাভার করা যায়।’
নাসের চৌধুরী বলেন ‘যেহেতু স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে, সেজন্য যারা দাওয়াত পাবেন আমরা প্রত্যেককে বলে দিচ্ছি কোভিড টেস্ট করতে হবে, এটা বাধ্যতামূলক। এটার মেয়াদ থাকবে ৪৮ ঘণ্টা। নেগেটিভ রিপোর্টটা তারা সঙ্গে নিয়ে আসবেন। যাতে সেখানে অন্য কোনো পরিস্থিতি না হয়। আমরা কোভিড পরিস্থিতিতেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে সুন্দর অনুষ্ঠান করতে চাই। আমরাও দেখাতে চাই, এই রকম একটা অনুষ্ঠান করার সক্ষমতা এই রকম পরিস্থিতিতে আমাদের আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘১০ দিনের অনুষ্ঠানে ফিজিক্যালি হচ্ছে চারদিন। ওই চারদিনের অনুষ্ঠানেই আমন্ত্রিত অতিথিরা থাকবেন। বাকি ছয়দিন প্রোগ্রামটা সরাসরি অনুষ্ঠান করবো। সেখানে কাউকে আমরা আমন্ত্রণ জানাচ্ছি না। তবে চারদিনের অনুষ্ঠানও সরাসরি সম্প্রচারিত হবে। এখন পর্যন্ত এইভাবেই অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছে। দাওয়াত দেখার মতো বিশাল একটা তালিকাও করেছি। স্বাস্থ্যবিধি সিরিয়াসলি পালন করা হবে।’
কতটি দেশ থেকে লোকজন এই অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন-জানতে চাইলে প্রধান সমন্বয়ক বলেন, ‘বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানরা এবং বিশিষ্টজনরা ভিডিও বার্তার মাধ্যমে সম্পৃক্ত হবেন। প্রতি মুহূর্তে অনেকে আসার আগ্রহ প্রকাশ করছেন, যেটা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আমাদের জানিয়েছে। আমরা বিষয়টি হয়তো জানিয়ে দেব, পরবর্তী দিন কারা সংযুক্ত থাকছেন। এতে সবার দেখার আগ্রহও থাকবে।’