দুদক নতুন চেয়ারম্যানের চ্যালেঞ্জ থাকবে না অনুসন্ধানের দীর্ঘসূত্রিতা

অপরাধ আইন ও আদালত

নিজস্ব প্রতিবেদক : দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নতুন নেতৃত্বে চেয়ারম্যান হিসেবে এসেছেন মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আব্দুল্লাহ এবং কমিশনার (তদন্ত) হিসেবে এসেছেন মো. জহুরুল হক। গত ১০ মার্চ নতুন দুই কমিশনার ঢাকাস্থ সেগুনবাগিচায় অবস্থিত দুদকের প্রধান কার্যালয়ে প্রথম দিন সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় এর সময় নতুন চেয়ারম্যান কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন দেশবাসী এবং দুর্নীতিবাজদের উদ্দেশ্যে। এরমধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি কথা বলেছেন নতুন চেয়ারম্যান। তিনি বলেছেন, “প্রত্যাশা থাকবে যাতে অনুসন্ধানের দীর্ঘসূত্রিতা কমিয়ে আনা যায় সেদিকে কমিশনের লক্ষ্য থাকবে। আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে এবং সবার প্রতি সমান দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে আমরা চলার চেষ্টা করবো।”
সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ তার বিদায়ী বক্তব্যে বলে গেছেন, “তিনি জনগনের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করতে পারেননি।” তিনি আরো বলেন, অনুসন্ধান এবং মামলার ক্ষেত্রে সরকারের কোন চাপও ছিলনা কিন্তু সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যানের সময়কালে, বর্তমান ১০ ও সাবেক ১১ জনসহ ২১ এমপির অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান ছিল। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, বিদেশে অর্থ পাচারের মতো দুর্নীতি ছাড়াও ক্যাসিনোকা-ে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ছিল সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে। ক্ষমতার অপব্যবহার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে লক্ষ্মীপুর-২ আসনে স্বতন্ত্র এমপি কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল এবং তার স্ত্রী সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি সেলিনা ইসলাম ছাড়া বাকিদের বিরুদ্ধে তেমন কোন সাড়া জাগানো পদক্ষেপ দেখাতে পারেননি প্রাক্তন কমিশন। সে সময় টিআইবি মনে করেছিল প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে চূড়ান্তভাবে পদক্ষেপ নিতে দুদকের যে ঘাটতি তা দূর করাই বড় চ্যালেঞ্জ। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ টিআইবি নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান সে সময় বলেছিলেন, প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দেখা যায় না। যদি এটা করা হয়; তাহলে সেটা দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখানো হবে। তিনি আরো বলেছিলেন, দুদক এখন নখদন্তহীন বাঘের মত। নতুন কমিশনের নেওয়া পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন কতটুকু সম্ভব সেটাই দেখার বিষয়। বিদায়ী চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বিদায়ী বক্তব্যে বলেছিলেন, কমিশনে দক্ষ জনবলের অভাব রয়েছে। তিনি নিজেই যখন এমন কথা অকপটে শিকার করেন তখন দুদকের যে চরম দায়িত্বহীনতা রয়েছে সেটা বলাই বাহুল্য। সবকিছু মিলিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন কবে একটি স্বচ্ছ কমিশনে রুপান্তরিত হতে পারবে সেটাই জনগণের আকাঙ্খার বিষয়।


বিজ্ঞাপন