বিশেষ প্রতিবেদক : প্রতিবারই ঈদের বাজারে গাউছিয়া মার্কেটে ঢুকতে খুব বেগ পেতে হয়। কিন্তু এবার চিত্র ভিন্ন। আগের সেই ঠাসাঠাসি ভিড়ের চিত্র এখন আর নেই। আজ ২৫ রোজা। ক’দিন পরেই ঈদ। তার ওপর শেষ জুমা ছিল আজ। তারপরও তেমন ভিড় লক্ষ্য করা যায়নি।
মার্কেট সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নারীরা এখন আর আগের মতো আসতে চান না এই মার্কেটে। এর মূল কারণ লেডিস পকেটমারদের উৎপাত। কিছুদিন ধরে এই উৎপাত খুব বেড়েছে। একজন দোকানি জানালেন, প্রতিদিন ১০-১৫জন ধরা পড়ে। পুলিশে দিলে পুলিশ দু-চারটা চড়থাপ্পড় মেরে টাকা পয়সা খেয়ে ছেড়ে দেয়।
রাজধানীর গাউছিয়া মার্কেটের নাম শোনেননি এমন লোক মনে হয় ঢাকা শহরে নেই। ঢাকা শহরের নারীদের কাছে এই মার্কেটটি অত্যন্ত জনপ্রিয়। এই মার্কেটে নারীরা বেশি ভিড় জমান, কারণ একটাই- এখানে নারীদের ব্যবহার্য অধিকাংশ জিনিস পাওয়া যায়। কিন্তু ইদানীং এই মার্কেটে নারীরা আর আসতে চান না। কারণ তারা এই মার্কেটে আসতে নিরাপদবোধ করেন না। গত কয়েকদিন ধরে বেশ কিছু পকেটমারের ঘটনা ঘটেছে এখানে।
একাধিক ব্যক্তি এই প্রতিবেদককে জানালেন, অনেকে দোকান থেকে কাপড় কিনে টাকা দেয়ার সময় মানি ব্যাগ বের করার জন্য পকেটে হাত দিয়ে দেখেন মানিব্যাগ নেই। অনেকের ভ্যানিটি ব্যাগের নিচে কাটা দেখতে পান। এ ধরনের উৎপাত বাড়ছে এবং এসব ঘটনা ছড়িয়ে পড়ার কারণে নারীরা এখন আর এই মার্কেটে আসে না। আজ এই মার্কেটে সকালে এবং বিকেলে দু’বার সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, মার্কেটে আগের মতো সেই ভিড় আর নেই।
কথা হয় গাউছিয়া মার্কেটের রাজু ইমেটেশনাল অ্যান্ড জুয়েলারির কর্মচারী বিপ্লবের সঙ্গে। তিনি বলেন, এই মার্কেটের ব্যবসায়ীদের এবার মাথায় হাত। আজ ২৫ রমজান। তার ওপর শেষ শুক্রবার। প্রতিবছর এসব দিনে লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। কাস্টমার ছাড়া কারো সঙ্গে কথা বলার কোনো সুযোগ থাকে না। কিন্তু এখন সে অবস্থা নেই। মার্কেটের গলির ভেতর মানুষ হাঁটছে কিন্তু কারো গায়ের সঙ্গে গা লাগছে না।
ভিড় না থাকার কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখন ঢাকা শহরে অনেক এসি মার্কেট হয়েছে। মানুষ এখন আর ঠেলাঠেলি পছন্দ করে না। সে কারণে হয়তো ভিড় কম। তাছাড়া আগে যেমন সারাদেশের মানুষ ঢাকা শহরে কেনাকাটার জন্য আসত এখন আর তারা আসে না। অনেক জেলা শহরে এবং ঢাকার আশপাশে অনেক মার্কেট গড়ে উঠেছে।
এই দোকানেরই আরেক কর্মচারী মোহাম্মদ হারুন বলেন, ‘মার্কেটে লেডিস চোর এবং পকেটমারের উৎপাত বেড়েছে। বেশ কয়েকজনকে হাতে নাতে ধরা হয়েছে। পুলিশের কাছে দিলে পুলিশ থানায় নিয়ে যায়, তারপর তার কী হয় আমরা জানি না। পকেটমারের অত্যাচারে নারীরা এখন আর এই মার্কেটে আসতে চায় না।’