ভারতীয় ধরন শনাক্ত

আন্তর্জাতিক এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন সারাদেশ স্বাস্থ্য

২৪ ঘন্টায় করোনায় বেড়েছে মৃত্যু, কমেছে শনাক্ত

 

বিশেষ প্রতিবেদক : দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট (ধরন) শনাক্ত হয়েছে। শনিবার রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইডিসিআর) এ তথ্য জানিয়েছে। আইডিসিআর জানায়, রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের একটি নমুনা পরীক্ষায় এ ভারতীয় স্টেইন ধরা পড়েছে। যা জার্মানির গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডাটাতে (জিএসআইডি) প্রকাশিত হয়েছে।
সম্প্রতি জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ভারতে প্রথম শনাক্ত ‘বি.১.১৬৭’ নামে করোনার ধরনটি বিশ্বের এক ডজনের বেশি দেশে পাওয়া গেছে। এমন দেশের সংখ্যা কমপক্ষে ১৭টির বেশি। এদিকে, মহামারি করোনায় ভারতে আবারও মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে। প্রথমবারের মতো একদিনে মৃতের সংখ্যা চার হাজার ছাড়াল। গেল ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে চার হাজার ১৯৪ জন।
এ নিয়ে দেশটিতে দুই লাখ ৩৮ হাজার ২৬৫ জন মারা গেছে। ভারতে মোট শনাক্ত ছাড়িয়েছে দুই কোটি ১৮ লাখ। একদিনে শনাক্ত চার লাখের বেশি। ভারতে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছে এক কোটি ৭৯ লাখ ১৭ হাজার ৮৫ জন এবং আক্রান্ত অবস্থায় রয়েছে ৩৭ লাখ ৩১ হাজার ২৬১ জন। সে দেশে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হওয়ার হার ৯৯ শতাংশ এবং মারা যাওয়ার হার এক শতাংশ।
ভারতের কর্নাটকে সংক্রমণ বাড়ায় সোমবার থেকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার একদিনেই প্রায় ৫০ হাজার করোনা শনাক্ত হওয়ায় লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্নাটক রাজ্য কর্তৃপক্ষ। অক্সিজেন সংকটের জেরে সুপ্রিম কোর্টের করা মামলায় হেরে গেছে কর্নাটকের রাজ্যের সরকার। উচ্চ আদালত, রাজ্যে মেডিক্যাল অক্সিজেন বাড়াতে কেন্দ্রকে আদেশ দিয়েছিলেন।
এদিকে রাজধানী দিল্লিতে প্রতিদিন সাতশ’ মেট্রিকটন অক্সিজেন সরবরাহ করতে কেন্দ্রকে আদেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। ভারতের পার্শ্ববর্তী দেশ নেপালে মোট মৃত্যু তিন হাজার পাঁচশ ছাড়িয়েছে। একদিনে মারা গেছে অর্ধশত মানুষ। দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত তিন লাখ ৭৭ হাজারের বেশি।
বিশ্বে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হওয়ার হার ৯৮ শতাংশ এবং মারা যাওয়ার হার দুই শতাংশ। সারাবিশ্বে বর্তমানে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় রয়েছে এক লাখ আট হাজার ৫৯৮ জন এবং বাকিদের অবস্থা স্থিতিশীল।
বিশ্বে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় সবার ওপরে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সে দেশে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে তিন কোটি ৩৪ লাখ ১৮ হাজার ৮২৬ জন এবং মারা গেছে পাঁচ লাখ ৯৪ হাজার ৯১১ জন।
এদিকে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন আরও ৪৫ জন।এনিয়ে করোনায় দেশে মোট মৃত্যু হয়েছে ১১ হাজার ৮৭৮ জনের। এ সময়ে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ২৮৫ জন।গত ৮ সপ্তাহের মধ্যে এটিই সর্বনি¤œ শনাক্ত। এতে মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৭ লাখ ৭২ হাজার ১২৭ জনে।
শনিবার স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনামুক্ত হয়েছেন ২ হাজার ৪৯২ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ৬ হাজার ৮৩৩ জন।
এর আগে শুক্রবার করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৩৭ জনের মৃত্যু হয়। আর নতুন করে আক্রান্ত হন ১ হাজার ৬৮২ জন। এদিকে, বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ কোটি ৭৫ লাখ ছাড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারস-এর তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মহামারিতে এ পর্যন্ত বিশ্বের ২১৯টি দেশ ও অঞ্চল আক্রান্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা ১৫ কোটি ৭৫ লাখ ৩০ হাজার ৭২৯। এর মধ্যে ৩২ লাখ ৮৩ হাজার ৭২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছে ১৩ কোটি ৪৯ লাখ ৫৪ হাজার ৯৪৭ জন।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। এক পর্যায়ে উৎপত্তিস্থল চীনে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব কমলেও বিশ্বের অন্যান্য দেশে এর প্রকোপ বাড়তে শুরু করে। চীনের বাইরে করোনাভাইরাসের প্রকোপ ১৩ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে গত ১১ মার্চ দুনিয়াজুড়ে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। তবে আশার কথা হচ্ছে, এরইমধ্যে করোনার একাধিক টিকা আবিষ্কৃত হয়েছে।
এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা তিন কোটি ৩৪ লাখ ১৮ হাজার ৮২৬। মৃত্যু হয়েছে পাঁচ লাখ ৯৪ হাজার ৯১১ জনের।
আক্রান্তের হিসাবে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দুই কোটি ১৮ লাখ ৮৬ হাজার ৬১১। এর মধ্যে দুই লাখ ৩৮ হাজার ২৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। ব্রাজিলে আক্রান্তের সংখ্যা এক কোটি ৫০ লাখ ৮৭ হাজার ৩৬০। এর মধ্যে চার লাখ ১৯ হাজার ৩৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
উৎপত্তিস্থল চীনে আক্রান্তের সংখ্যা ৯০ হাজার ৭৪৬। এর মধ্যে চার হাজার ৬৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও দেশটির বিরুদ্ধে প্রকৃত পরিস্থিতি গোপন করার অভিযোগ রয়েছে।


বিজ্ঞাপন