নিজস্ব প্রতিবেদক, আজ বিশ্ব মা দিবস। পৃথিবীর সকল দেশের সন্তানেরা দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় মা’য়ের পদস্থলে কদমবুচি করে নিজেদেরকে সমর্পিত করেছেন। মা’য়ের প্রতি মস্তক অবনত করে সম্মান প্রদর্শন করেছেন। পৃথিবীর কোন সন্তানই মায়ের দুধের মূল্য পরিশোধ করতে পারবেন না এ কথাটি আজ প্রতিটি সন্তান বারংবার উচ্চস্বরে স্মরণ করছেন।
বিখ্যাত দার্শনিক নেপোলিয়ন বলেছিলেন, ‘আমাকে একটি শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাদের শিক্ষিত জাতি দেব’। ‘পথের ক্লান্তি ভুলে, স্নেহভরা কোলে তব মা গো’ হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের এমন গানে কার হৃদয় না দুলে ওঠে। মাকে নিয়ে বিশ্বজুড়েই ছড়িয়ে আছে অনেক গান, কবিতা, গল্প ও কাহিনী।
মা হচ্ছেন একজন নারী, যিনি গর্ভধারণ, সন্তানের জন্ম তথা সন্তানকে বড় করে তোলেন। তিনিই সন্তানের প্রথম অভিভাবক ও আপনজন। সন্তানের পরম আশ্রয়। সন্তানের কাছে তার প্রতিটি দিনই মায়ের। তাইতো আবেগ ভালবাসা দুঃখ ও কষ্টে সবসময়েই সন্তানের মুখে অস্ফুট ‘মা’ শব্দটি সবার আগে বেরিয়ে আসে।
আজ বিশ্ব মা দিবস। বিশ্বজুড়ে চালু হওয়া হাজারো দিবসের ভিড়ে ‘মা’ দিবসটিও পালিত হয়ে আসছে। ১৯১৪ সালের ৮ মে থেকে প্রতি মে মাসের দ্বিতীয় রোববার আন্তর্জাতিকভাবে মা দিবস উদযাপিত হচ্ছে। সবার জীবনের একমাত্র ভরসার জায়গা হলো মা। তারপরও মায়ের সম্মানে একটি বিশেষ দিন এই মা দিবস।
অবশ্য তারও আগে ১৯০৭ সালের ১২ মে প্রথমবার ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার গ্রাফটন শহরে ‘মাদার্স ডে’ পালিত হয়েছিল। অ্যানা জার্ভিস নামের এক মার্কিন নারী তার মা অ্যান মারিয়া রিভস জার্ভিসের মৃত্যুদিনটি একটু অন্যভাবে পালন করার কথা ভেবেছিলেন। অ্যান সমাজকর্মী ছিলেন।
তিনি নারীদের জন্য কাজ শুরু করেন। ছোট ছোট ওয়ার্ক ক্লাব বানিয়ে সমাজের পিছিয়ে পড়া নারীদের জন্য কাজ করতেন তিনি।
একদিন ছোট মেয়েটির সামনেই ধর্মপ্রাণ অ্যান হাত জোড় করে বলেছিলেন, ‘আমি আশা করি, প্রার্থনা করি, একদিন কেউ না কেউ, কোনো মায়েদের জন্য একটা দিন উৎসর্গ করুক। কারণ তারা প্রতিদিন মনুষ্যত্বের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে চলেছেন। এটা তাদের অধিকার’।
মায়ের প্রতিটি শব্দ মনে রেখেছিলেন অ্যানা। আর সেই কারণেই অ্যানের মৃত্যুর দিনটিকে (১২ মে, ১৯০৭) সারাবিশ্বের প্রতিটি মায়ের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেন তিনি।
তবে বিশ্ব ‘মা’ দিবস পালন নিয়ম কিছুতো মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা তাদের মতামত ব্যক্ত করেছেন। দ্বিমত পোষণকারীদের বক্তব্য হল, ‘মা’ দিবস শুধু একদিন উদযাপিত হয় ঠিক নয়। বছরের প্রতিটি দিন, জীবনের প্রতিটি ক্ষণ ‘মা’ দিবস হওয়া উচিত।
তাদের বক্তব্য, শুধু বছরের একটি দিনে মা’কে নিয়ে খুব জাঁকজমকপূর্ণভাবে দিবস উদযাপন করা হবে। আর বছরের বাকি দিনগুলো মায়ের খোঁজ নেয়া হবে না এমনটি হওয়া উচিত নয়। মা’য়েরা আসলে কোন দিবস চাননা সন্তানের কাছে, তারা চান সন্তানের মূল্যায়ন, সন্তানের সম্মান।