আমরা এক অভিশপ্ত প্রজন্ম!

অন্যান্য

আজিজুন্নাহার আখি : আমাদের মা-বাবারা নিজেদের যতটুকু সম্পদ ছিল তা বিক্রি করে আমাদের ডজন খানিক ভাই বোনের পড়ালেখার খরচ যুগিয়েছেন। জমি বিক্রি শেষে মা তাঁর বিয়ের গহনাটুকুও বিক্রি করতে কার্পণ্য করেননি। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল সন্তানরা যেন নিজের পায়ে দাঁড়াতে শিখে।


বিজ্ঞাপন

আলহামদুলিল্লাহ্, তাই হয়েছে; আমরা সবাই কম-বেশী নিজের পায়ে দাঁড়াতে পেরেছি। আমার মনে হয় আমার সমসাময়িক বেশীরভাগ মানুষের ক্ষেত্রেই এ বক্রব্যটি প্রযোজ্য।

আলহামদুলিল্লাহ্, আমাদের মা-বাবারা আমাদেরকে একটা ভালো/সন্তোষজনক অবস্থানেই দেখে গেছেন।

এখন আমরা কি করছি? আমরা আমাদের এক বা দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ ইস্পাত দিয়ে নির্মাণের জন্য পাগোল হয়ে যাচ্ছি। পড়ালেখা দেয়ার পর এমন পরিমাণ সম্পদ রেখে যেতে চাচ্ছি যাতে ওদের ৩/৪ জেনারেশনের কোন সমস্যা না হয়!!! এজন্য চুরি-ডাকাতি, প্রতারণা, শোষণ, জুলুম, নির্যাতন যা প্রয়োজন তাই করছি!

ফলাফল কি দেখছি?
সিংহভাগ ক্ষেত্রে (বিশেষ করে অবৈধ উপার্জনকারীদের) ঐ সন্তানরা হচ্ছে অমানুষ, কুলাংগার! মা-বাবাকে প্রয়োজনে লাঞ্চিত করে নেশার টাকা নিচ্ছে, চোখের সামনে মাতলামি করছে, ব্যাভিচারী হয়ে উঠছে, ব্ল্যাকমেইলিং করছে, খুন-ধর্ষণের সাথে জড়িয়ে পড়ছে! মা-বাবারা বুক চাপড়াচ্ছেন!

এহেন ঘটনা এখন ঘরে ঘরে!

জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করা উচিৎ; তা না হলে জীবন একদিন আমাকে/আমাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করবে।

সম্পদ উপার্জন কোন অপরাধ নয়, কিন্তু শুধু সম্পদের জন্য নৈতিকতা বিসর্জন! মানুষকে ঠকানো! মানুষকে কস্ট দেয়া! মানুষকে শোষণ! কোনদিন ভালো ফল দিবে না, শতভাগ নিশ্চিত।

কত সম্পদ আপনি রেখে যেতে চান আপনার সন্তানের জন্য?
(আপনার সন্তানরা কি অপদার্থ /বুদ্ধি প্রতিবন্ধী?)

আপনার পিতা-মাতা আপনার জন্য কত সম্পদ রেখে গেছেন?
(আপনি এখন আপনার সন্তানদের জন্য সম্পদের পাহাড় রেখে যেতে চাচ্ছেন কেন?)

বেশী সম্পদ রেখে গেলে আপনার সন্তান কি ভালোমানুষ হিসাবে থাকবে নাকি অমানুষে পরিণত হবে, ভেবে দেখেছেন কি?

মানুষের হক ভক্ষণ করে সম্পদ বানাচ্ছেন কেন?
(এই সম্পদ আপনাকে কি নিরাপত্তা দিবে?)

কতদিন বাঁচবেন? ৭০? ৮০? ১০০? তারপর??

আপনি নিজে ডুবছেন, রেখে যাচ্ছেন মাতাল-ব্যাভিচারী সন্তানকে, ওরা আপনার চৌদ্দ প্রজন্মকে ডুবিয়ে দিয়ে যাবে!

সুতরাং…..

মানুষের সাথে প্রতারণা/ঠকবাজি বন্ধ করুন; সত্যের পথে আসুন।

সময় থাকতে মানুষের কল্যানের কথা ভাবুন, মানুষের জন্য কাজ করুন।
একটা শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনে অবদান রাখুন।