জয়া আহসান : লালমনিরহাটের আদিতমারার সবার আদরের কুকুর টাকে নির্মমভাবে ছুরিকাহত মারর এই ভিডিওটি দেখে আমার ভাষা হারিয়ে গেছে। আমরা কি মানুষ! এই আমাদের আচরণ! একটা নিরীহ প্রাণীর ওপর এত চরম নিষ্ঠুরতা করতে আমাদের এতটুকু বুক কাঁপল না?
এই সে দিনও দেখেছি, একটা মা–মেছো বাঘকে তার চোখ না ফোটা তিনটি শিশুর সঙ্গে কিছু মানুষ উল্লাসের সঙ্গে পিটিয়ে মারছে। যেন একটা প্রতিযোগিতায় নেমেছে সবাই, কে কত নিষ্ঠুর হতে পারে।
এই ভিডিওর কুকুরটি লালমনিরহাটের আদিতমারার। সবার বড় আদরের কুকুর।
একটা কসাইয়ের দোকানের সামনে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল সে। কেন দাঁড়িয়ে ছিল, তারই শাস্তি হিসেবে ছুরি দিয়ে ওকে এ ফোঁড়–এ ফোঁড় করে দেওয়া হয়েছে।
অতি নিষ্ঠুর এই ঘটনাটি চোখে পড়ার পর এলাকাবাসী ওর চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছে। ঢাকায় প্রাণী কল্যাণ আর অধিকার নিয়ে কাজ করেন Ruksath Hoque আপা আমাকে বিষয় টি আমাকে জানান,আমরা ঠিক করি উন্নত চিকিৎসার জন্য কুকুর টিকে ঢাকায় নিয়ে আসব।আনার আগেই জানতে পারি চিকিৎসা পেয়ে এখন সে আরোগ্যের পথে। আশা করি, ও দ্রুতই পুরো সুস্থ হয়ে উঠবে।
যে কসাই কুকুরটিকে নিষ্ঠুরভাবে ছুরিকাহত করেছিল, আদিতমারি পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে চমকপ্রদ একটা খবর পেলাম গতকাল।
ঘটনাটি আরও নজরে এসেছিল পুলিশ নারী কল্যান সমিতির সভানেত্রী জিশান মির্জার।
অসহায় প্রাণীর ওপর এমন নিষ্ঠুরতায় তিনি উৎকণ্ঠিত হয়ে ওঠেন। এর পর ২০ মে সেই কসাইকে খুঁজে প্রাণী কল্যাণ আইন ২০১৯–এর আওতায় সোপর্দ করেন।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তিনি আটক আছেন।
এমন মানবিক একটি উদাহরণ আমাদের দারুণ উৎসাহিত করেছে। ধন্যবাদ, জিশান মির্জা। ধন্যবাদ, আদিতমারি পুলিশ।
আমরা প্রত্যাশা করব এটি যেন কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা হয়ে না থাকে। আমরা প্রশাসন, বন বিভাগ এবং দেশের বিভিন্ন থানাগুলোর প্রতি আহ্বান জানাই, তারা যেন প্রাণীদের প্রতি সদয় হোন এবং প্রাণী কল্যাণ আইন ২০১৯–এর যথাযথভাবে প্রয়োগ করেন।
পুরো প্রকৃতি আর প্রাণজগৎ নিয়েই আমরা মানুষ। সবাইকে নিয়ে পৃথিবীকে আমরা আনন্দময় কে তুলি। আমরা আরেকটু মানবিক হই, প্রাণবিক হই। আসুন ওদের ভালোবাসি।