ডেস্ক রিপোর্ট : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে ‘বাংলাদেশ উৎসব’ উদযাপিত হয়েছে। ইসলামাবাদে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশন এ উৎসবের আয়োজন করে।
বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদ হাইকমিশন এ তথ্য জানায়।
আয়োজনে সম্পূর্ণ বাঙালি ধারায় আমন্ত্রিত অতিথিদের সম্ভাষণ, জাতির পিতার জীবন ও কর্মের ওপর প্রদর্শনী, জমকালো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং হরেক রকম সুস্বাদু বাংলাদেশি খাবার দিয়ে অতিথিদের আপ্যায়ন ছিল উৎসবের মূল আকর্ষণ। সমগ্র চ্যান্সারি রংবেরঙের ব্যানার, ফেস্টুন, ফুল ও ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি লোকপণ্য দিয়ে সাজানো হয়।
পাকিস্তান সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, সঙ্গীতজ্ঞ, চিত্রশিল্পী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, সুশীল সমাজ, মিডিয়া ব্যক্তিত্বসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রায় দুই শতাধিক অতিথি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্য, পাকিস্তানে প্রশিক্ষণরত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর কর্মকর্তা, হাইকমিশনে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা অনুষ্ঠানে অংশ নেন। সম্মানিত অতিথিদের হাইকমিশনের প্রবেশদ্বারে নির্মিত তোরণে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী নারকেলের নাড়ু, গোলাপের কুড়ি ও ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে বরণ করা হয়।
পাকিস্তানে বাংলাদেশের হাইকমিশনার রুহুল আলম সিদ্দিকীর ‘বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন’ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে উৎসবের শুরু হয়। প্যাভিলিয়নে বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’-এর বাংলা, ইংরেজি ও উর্দু সংস্করণ, কারাগারের রোজনামচাসহ বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত জীবনের ওপর বই, আলোকচিত্র ও পোস্টার প্রদর্শন করা করা হয়। হাইকমিশনার আগত অতিথিদের কাছে বঙ্গবন্ধুর ঘটনাবহুল জীবন সংগ্রামের গল্প শোনান। পৃথিবীর বুকে শান্তি প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা এবং এ উপলক্ষে এ বছরের শেষদিকে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিতব্য শান্তি সম্মেলন সম্পর্কেও তিনি বিদেশি অতিথিদের অবগত করেন।
হাইকমিশনার তার বক্তব্যে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি বিগত একযুগে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সব ক্ষেত্রে যে অভূতপূর্ব অগ্রগতি অর্জন করেছে সে বিষয়গুলি আগত অতিথিদের কাছে তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ‘রূপকল্প-২০২১’ অর্জনের মাধ্যমে মধ্যম আয়ের দেশের কাতারে অবস্থান নিয়েছে এবং ‘রূপকল্প-২০৪১’ অর্জনের মাধ্যমে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবার অভীষ্ট লক্ষ্যে দৃঢ় প্রত্যয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক উন্নয়নের ওপর একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য প্রামাণ্যচিত্রও প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ অনুষ্ঠানে হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের ছেলেমেয়েরা বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী সাজপোশাকে সুসজ্জিত হয়ে র্যালি, নাচ ও গান পরিবেশন করে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শুরুতেই শিশুরা মুজিব শতবর্ষের ব্যানারসহ র্যালিতে অংশ নেয় এবং ‘জয় বাংলা’ ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানে হাইকমিশন প্রাঙ্গণ মুখরিত করে তোলে।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী জিলাপি, পিয়াজু ও চিতই পিঠা সরাসরি তৈরি করে অতিথিদের আপ্যায়ন করা হয়। এছাড়াও ২৫টির অধিক বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ও প্রচলিত খাবারের স্বাদের সঙ্গে অতিথিদের পরিচয় ঘটে। উপস্থিত অতিথিরা এ অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য দূতাবাসকে ধন্যবাদ জানান এবং অনুষ্ঠানটির ভূয়সী প্রশংসা করেন।