মেলান্দহে সুদের টাকা আনতে গিয়ে ফিল্মি স্টাইলে লুটতরাজ, বাধা দিতে গিয়ে আহত-২

অপরাধ

মোস্তাফিজুর রহমান, জামালপুর : ঘোষেরপাড়ায় উচ্চসুদের টাকার লভ্যাংশ আনতে গিয়ে ফিল্মি স্টাইলে লুটতরাজ।বাঁধা দিতে গিয়ে শ্লীলতাহানি ও আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি অসহায় দিনমজুর স্বামী স্ত্রী দুই জন। ঘটনাটি ঘটেছে – ১৫ জুন রাতে জামালপুর জেলার মেলান্দহ উপজেলার ৯নং ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নের বীর ঘোষেরপাড়া মিলন বাজার এলাকায়। লুটতরাজ ও হামলার স্বীকার সুন্দরী বেগম জানান- আমার ছেলে জীবন ( ৪৬) অন্যের বাড়ীতে বাঁশের কাজ করে ৩ মেয়ে ১ ছেলে ও আমাকে নিয়ে কোন মতে কষ্ট করে সংসার চালায়। সংসারের প্রয়োজনে জমসেদের ছেলে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আলোচিত সভাপতি রিফাত আহম্মদ বাবুর ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুদ দের পরিচালিত ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট বঙ্গবন্ধু ক্লাবের নামে একটি সংগঠন থেকে ১৫ হাজার টাকা সুদে ঋণ গ্রহণ করে।যা এই করোনার মধ্যে অনেক কষ্ট করে পরিশোধ করে। কিন্তু সংগঠনের ক্যাশিয়ায় রিফাত আহম্মদের নির্দেশনায় ও তাদের অন্যান্য সদস্যরা ১৫ জুন রাতে তাদের ধরা ১ লক্ষ ৫০ হাজার উচ্চ চক্রবৃদ্ধি সুদের লভ্যাংশের দাবীতে রাত ১১ টায় সবাই বাড়ীতে আসে এবং সুদের টাকার জন্য গালাগালি করে। জীবন সুদের উচ্চ লভ্যাংশ পরিশোধের অপারগতা প্রকাশ করে সময় চায়।সদস্যরা সময় না দিয়ে জোর পূর্বক তার ঘরে ঢুকে জীবনের বিবাহিত মেয়েদের অর্থে কেনা টিভি,ফ্রীজ,সাউন্ড বক্স,কিছু টাকা,রাইজ কোকারসহ বিভিন্ন মালামাল বের করে আনে। এসময় বাধা দেয়ায় জীবন,তার স্ত্রী,বিবাহিত দুই মেয়ে ও স্কুল পডুয়া যুবতী মেয়েদের মারধর ও শ্লীলতাহানি করে ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করে লুটতরাজ করে। এসময় তাদের হাতাহাতি,ধাক্কাধাক্কি ও সুন্দরী বেগমের ছেলে জীবন,ছেলের বৌ স্বপ্না (৩৮) সহ কয়েকজন আহত হয়।আহতদের মেলান্দহ হাসপাতাল ভর্তি করা হয়। এ ব্যাপারে খোজ নিয়ে জানা যায়- নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন- বঙ্গবন্ধুর নামে সুদের ব্যবসা করে যেভাবে অসহায় মানুষদের হয়রানি ও জুলুম করছে এবং আমার চোখের সামনে যেসব জিনিসপত্র লুট করলো তা কোন মানুষের কাজ নয়। রেজিস্ট্রেশন ও সরকারের কর দেয়া ব্যতীত অবৈধভাবে বঙ্গবন্ধুর নামে সুদের দোকান খুলেছে। ক্লাবের সদস্য গিয়াস উদ্দিনের ছেলে আজাদ বলেন,আমরা আশা ব্যাংকের হারে কিস্তি নেই।তোফাজ্জলের ছেলে গেন্দা বলেন, মোট ক্যাশ আমাদের ১০ লক্ষ। জীবন কে ৫ লক্ষ টাকার ঋণ দিছি, তাই আমরা সব সদস্য মিলে রাতে ফ্রিজ সহ কিছু জিনিসপত্র নিয়ে এসেছি।
এবিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রলীগের সভাপতি ও সুদ কারবারি ( ক্যাশিয়ার) রিফাত আহম্মেদ বাবু বলেন- আমি এই সংগঠনের একজন সদস্য মাত্র।আমাকে সবাই এই কারবারি ও সংগঠনের কাজে ডাকে আমি দলের কাজে ব্যস্ত থাকায় সমিতির সব খবর জানি না।আর কোন জিনিস লুটকরা হয়নি। জীবন নিজ ইচ্ছাই সুূদের পরিবর্তে এইগুলো দিয়েছে যা এখনো আমার হেফাজতে রাখা আছে। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জমসেদ আলী ও বর্তমান যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সমিতির সদস্য ওয়াদুদ বলেন- এটা সুদের টাকা বলা ঠিক না।১ লক্ষ ৫০ হাজার আমাদের পাওনা টাকা।জীবনের ঘরে খাবার নাই এবং থাকার ঘর ছিলনা বলেই তাকে আমরা ঋণ দিয়ে ছিলাম। যেই সুদের টাকা ওঠাতে গেছি তেমনি খারাপ হয়ে গেলাম।এগুলো কে করছে বা কে করাচ্ছে সেগুলোও দেখবো। ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওবায়দুর রহনান বলেন- আমার কাছে জীবনেরা এসেছিলো তাদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারি। তবে তাদের কথা মোতাবেক ও এলাকাবাসীর শান্তি আনয়নে আমি আইনের মাধ্যমে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় বিষয়টি নিষ্পত্তি করার ব্যাপারে মিডিয়া ভাইদের সঠিক তথ্য তুলে ধরতে অনুরোধ জানাই এবং যেই দোষী প্রমাণিত হবে তাদের সুবিচার করতে সকলের সু দৃ্ষ্টি কামনা করি।এই ঘটনায় কোন মামলা হয়নি তবে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এ বিষয়ে মেলান্দহ থানার অফিসার ইনচার্জ ময়নুল ইসলাম জানান- এঘটনায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে।


বিজ্ঞাপন