ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা ও দেশজুড়ে প্রচারণা

জাতীয় রাজনীতি

আজকের দেশ রিপোর্ট : অখণ্ড ভারতবর্ষে দীর্ঘদিন মূলধারার রাজনীতিতে যুক্ত থাকায় তরুণ নেতা শেখ মুজিব বুঝতে পারেন যে- পূর্ববাংলার মানুষের সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকার আদায়ের জন্য গতিশীল সংগঠনের বিকল্প নেই।


বিজ্ঞাপন

এজন্য ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে কর্মীসভা ডেকে (পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম) ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেন। ১৪ সদস্যের এই সাংগঠনিক কমিটির একজন সদস্য হিসেবে থাকেন তিনি নিজে।

কলকাতার ছাত্র রাজনীতিতে হাতপাকানো ছাত্রনেতা শেখ মুজিবের কর্মতৎপরতার কারণে, ছাত্রলীগ গঠনের পরবর্তী এক মাসের মধ্যে দেশের প্রায় সব জেলাতেই কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়।

এরমধ্যেই বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ১১ মার্চ (১৯৪৮) হরতাল ঘোষণা হয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে।

এই পরিষদের অন্যতম একটি সক্রিয় সংগঠন হিসেবে মাঠে নামেন ছাত্রলীগ নেতারা।

জনমত গঠনের জন্য বিভিন্ন জেলায় ভ্রমণ করেন ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা নেতা শেখ মুজিবুর রহমান।

এরপর ১১ মার্চ ঢাকার রাস্তায় সক্রিয় আন্দোলনে অংশ নিয়ে পুলিশি হামলার শিকার ও গ্রেফতার হন তিনি। তবে ১৫ মার্চ তাদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় সরকার।

১৬ মার্চ জেল থেকে বের হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় শেখ মুজিবের সভাপতিত্বে একটি প্রতিবাদী ছাত্রসভা অনুষ্ঠিত হয়। উত্তাল হয়ে ওঠে ঢাকা।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ও মুসলিম লীগ নেতা খাজা নাজিমুদ্দিন সেনাবাহিনীর সহায়তা চান।

অবশেষে পূর্ব পাকিস্তানের জিওসি মেজর জেনারেল আইয়ুব খান তার বাহিনী নিয়ে এসে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে নেন।

২১ মার্চ (১৯৪৮) পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকার তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে বক্তব্য দেন।

সেখানে তিনি উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করেন। তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবাদ করে একদল তরুণ।

তাদের মধ্যে ছাত্রলীগ নেতা শেখ মুজিব ছিলেন অন্যতম। এরপর ২৪ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তনেও একই কথা বলেন জিন্নাহ।

কিন্তু ছাত্রদের প্রতিবাদের মুখে চুপসে যান তিনি। নিরলসভাবে ভাষা আন্দোলনে সম্পৃক্ত থাকার কারণে ১১ সেপ্টেম্বর শেখ মুজিবকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯৪৯ সালের জানুয়ারিতে ছাড়া পান তিনি।