ব্যতিক্রমী মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা

জাতীয় জীবন-যাপন রাজনীতি

মো. নিজাম উদ্দিন খান নিলু : যখন রংপুর রাইডার্সের অধিনায়ক হয়ে মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা বিপিএল জয় করেছিলেন, তখন নিজের জন্য বিলাসবহুল গাড়ি না নিয়ে নড়াইলের সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য তিনি তাদের কাছ থেকে একটি উন্নত মানের অ্যাম্বুলেন্স নিয়েছিলেন। শুধু রংপুর রাইডার্সই নয়, সব প্রতিষ্ঠান থেকেই তিনি নড়াইলের জন্য কিছু না কিছু নিয়ে থাকেন।


বিজ্ঞাপন

এবার এসপিসি’র শুভেচ্ছা দূত হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়ে ব্যক্তিগত কোন আর্থিক সুবিধা না নিয়ে তিনি নড়াইল-লোহাগড়ায় স্থাপনের জন্য ১০০ টি সিসি ক্যামেরা চাইলেন। যদিও বিজ্ঞাপন বা শুভেচ্ছা দূতের চুক্তিমূল্য সেলিব্রিটিদের ব্যক্তিগত আয়ের একটি বড় উৎস। তবে ব্যতিক্রমী মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা, এক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম। বিজ্ঞাপন করে সেই অর্থ তিনি ব্যয় করেন নিজ এলাকার মানুষের জন্য।এমন একজন সেলিব্রিটি আমাদের এলাকার সন্তান,এজন্য আমাদের গর্ব হয়।

ইতিপূর্বে মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা কর্তৃক স্থাপিত সিসি ক্যামেরাগুলো নড়াইল-লোহাগড়ার আইন-শৃঙ্খলা ও জনসাধারণের জানমালের নিরাপত্তা জোরদারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।এই সিসি ক্যামেরার কল্যাণে অনেক দরিদ্র ভ্যানচালক তার হারানো ভ্যান ফেরত পেয়েছেন এছাড়া চুরি-ছিনতাইসহ এলাকার মানুষ এই সিসি ক্যামেরার বদৌলতে অনেক বেশি উপকৃত হচ্ছেন। যা পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা থানা থেকে সরাসরি মনিটরিং করে থাকেন।নিজে টাকা না নিয়ে,সেই টাকা দিয়ে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে এলাকার জনসাধারণের নিরাপত্তা জোরদার করার উদ্যোগ নেওয়ার মতো ঘটনা সারাদেশে বিরল।

পূর্বে স্থাপিত সিসি ক্যামেরার অনেকগুলো অকেজো হয়ে যাওয়ার মাননীয় সাংসদ নতুন ১০০ টি সিসি ক্যামেরা নড়াইল-লোহাগড়ার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।যার ধারাবাহিকতায় তিনি এসপিসি’র সাথে চুক্তির বিনিময়ে তিনি তাদের কাছে সিসি ক্যামেরা চেয়েছিলেন।

তবে তাদের প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে তাঁকে যে ধারনা দেওয়া হয়েছিল,তাদের ব্যবসার ধরন তেমনটা নয়। দুই বছরের চুক্তি থাকলেও দুই মাসের মধ্যেই তাদের সম্পর্কে জানার পরই তিনি তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং ইতোমধ্যেই তাদেরকে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন।আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি শেষ করার আইনি প্রক্রিয়া চলছে এবং তিনি সবাইকে অনুরোধ করেছেন, তাঁর নাম বা ছবি দেখে বিভ্রান্ত হয়ে এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে না জড়াতে।

আর একজন ‘শুভেচ্ছা দূত’ উক্ত প্রতিষ্ঠানের কেউ নয়,এটা সকল সচেতন মানুষের জানা কথা।কোকা- কোলা খারাপ প্রডাক্ট বাজারে ছাড়লে,গালিটা আমরা সালমান খান’কে দেই না। কারণ,আমরা জানি, কোকা-কোলার সাথে সালমান খানের কি সম্পর্ক।তবে কিছু গর্দভ সালমান খানকে গালি দেয়।এমন গর্দভ আমাদের সমাজেও আছে,আজীবনই থাকবে।এদের নিয়ে আলোচনা করার কিছু নাই। না বুঝে, না জেনে মুর্খরা অনেক কিছুই বলবে। সবার কথায় কান দিতে নেই।

যাই হোক নিজেদের কথায় ফিরি,একজন মানুষ তাঁর ব্যক্তিগত আয়ের কথা চিন্তা না করে, তিনি এই জনপদের মানুষের জন্য কি করলে ভালো হয়, কিভাবে করলে ভালো হয়, তার জন্য নিজেকে উজাড় করে দিচ্ছেন। এমন মানুষ গল্পে নয়, বাস্তবেও আছে।আর তিনি চিত্রাপাড়ের নড়াইলের গর্বের ধন,হীরার টুকরো মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা।জন্মভূমির প্রতি এমন অকৃত্রিম ভালোবাসা তাঁকে বাঁচিয়ে রাখবে এই জনপদের বিবেকবান মানুষের অন্তরে।