নিজস্ব প্রতিনিধি : ২ মাসের প্রতিবেদন ১৬ মাসে ও দেয়নি পিবিআই, হাইকোর্টের অসন্তোষ প্রকাশ। প্রকৃত আসামির পরিবর্তে নোয়াখালীর মোহাম্মদ জহির উদ্দিনকে আসামি করার অভিযোগ উঠে।

এ বিষয়ে তদন্ত করে ২ মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। কিন্তু গত ১৬ মাসে ও ওই প্রতিবেদন পাননি হাইকোর্ট। এ অবস্থায় হাইকোর্ট অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

এ বিষয়ে ২২ আগস্টের মধ্যে অগ্রগতি জানাতে রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দেন। জহির উদ্দিনের আইনজীবীর করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (১৮ আগস্ট) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ভার্চুয়াল বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনকারীপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
এর আগে হাইকোর্টের একই বেঞ্চ গত বছর ১০ মার্চ এক আদেশে ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত থেকে জহির উদ্দিনের বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানার কার্যকারিতা স্থগিত করেন। একইসঙ্গে নোয়াখালীর জহির উদ্দিন মামলার যথাযথ আসামি কি-না তা তদন্ত করে ২ মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে পিবিআইকে নির্দেশ দেন।
এ অবস্থায় ওই রিট আবেদনটি আদালতে শুনানির জন্য উপস্থাপিত হলে আদালত রাষ্ট্রপক্ষের কাছে জানতে চান পিবিআই-এর প্রতিবেদন পাওয়া গেছে কি-না?
জবাবে রাষ্ট্রপক্ষ না বললে আদালত বলেন, ২০১৩ সালের মামলা। পিবিআইকে তদন্ত করে ২ মাসের মধ্যে একটি রিপোর্ট দিতে গত বছর ১০ মার্চ একটি আদেশ দিয়েছিলাম। কিন্তু ১৬ মাস সময় পার হওয়া সত্ত্বেও আজও সে রিপোর্ট পাওয়া গেল না।
এতদিনেও কেন পাওয়া গেল না রিপোর্ট? ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল, আপনি খোঁজ নিয়ে রোববারের মধ্যে অগ্রগতি জানাবেন। ওই দিন এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশ দেয়া হবে।
এ বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার সাংবাদিকদের জানান, ইতোমধ্যে এ বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া শুরু করেছি। আশা করি নির্ধারিত দিনে সঠিক তথ্য জানানো সম্ভব হবে।
অ্যাডভোকেট শিশির মনির জানান, রাজধানীর খিলগাঁও থানায় ২০১৩ সালের ৯ এপ্রিল দায়ের হওয়া মামলায় (নম্বর-১২(৪)১৩) পুলিশ নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের আহসান উল্লাহর ছেলে মোদাচ্ছের আনছারীকে গ্রেফতার করে।
পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর মোদাচ্ছের তার নাম-ঠিকানা গোপন করে নিজেকে নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মোহাম্মদ আব্দুল কাদেরের ছেলে মোহাম্মদ জহির উদ্দিন নামে পরিচয় দেন।
এরপর ওই বছরের ৩১ অক্টোবর জামিনে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে পালিয়ে যান মোদাচ্ছের। তিনি জহির উদ্দিন নামেই আদালতে জামিনের আবেদন করেছিলেন।
এদিকে পুলিশ তদন্ত শেষে জহির উদ্দিনসহ অপর আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ৮ এপ্রিল অভিযোগপত্র দেয়। এরপর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত ২০১৭ সালের ১১ অক্টোবর জহিরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।
এ অবস্থায় জহির উদ্দিন সংশ্লিষ্ট কারা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মূল আসামি মোদাচ্ছের আনছারীর ছবি এবং শারীরিক বর্ণনাসহ বিভিন্ন তথ্যাদি সংগ্রহ করেন। পরবর্তীতে জহির উদ্দিন তার বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন।