আয় আড়াই কোটি থেকে ১৩০ কোটি
নিজস্ব প্রতিবেদক : তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ম্যাজিকের মতো বদলে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সফটওয়ার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিস-বেসিস বলছে, ১৩ বছরের ব্যবধানে খাতটিতে আড়াই কোটি থেকে আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩০ কোটিতে। এমন অভাবনীয় সফলতা সম্ভব হয়েছে কেবল সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ-২০২১ রূপকল্পের পাশাপাশি এ খাতে তরুণ সমাজের আগ্রহের কারণে।
তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ প্রবাহের যুগে বাংলাদেশ এগিয়েছে অনেক। সরকারের সময়োচিত পদক্ষেপের ফলে গেল ১৩ বছরে দেশে তথ্যপ্রযুক্তি উন্নয়নের ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী বিপ্লব ঘটেছে। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ এখন আর কোনো স্বপ্ন নয়, যেন বাস্তবতা।
২০০৮ সালে স্বপ্নযাত্রার শুরু হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণার মধ্য দিয়ে। নাগরিক জীবনমান উন্নয়ন সহজেই নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবস্থাপনা, কর্মপদ্ধতি, শিল্প-বাণিজ্য ও উৎপাদন খাতে শুরু হয় ডিজিটালাইজেশন। অর্থনীতি, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনধারাও এগিয়েছে এ ধারায়।
বর্তমানে দেশে ইন্টারনেট গ্রাহক সাড়ে ১২ কোটি। প্রতিটি ইউনিয়নে ডিজিটাল সেন্টার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি ২৫ হাজার ওয়েবসাইট নিয়ে প্রতিষ্ঠা হয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম ওয়েব পোর্টাল ‘জাতীয় তথ্য বাতায়ন’। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন থেকে শুরু করে সরকারি প্রায় সব ধরনের সেবা, বেসরকারি সেবার তথ্য, বিদেশে কর্মসংস্থানের নিবন্ধন, পরীক্ষার ফলপ্রাপ্তি, চাকরির আবেদন সবই করা যাচ্ছে প্রযুক্তির মাধ্যমে।
এতেই শেষ নয়, গেল ৪ বছরে জরুরি প্রয়োজনে ৯৯৯ কলসেন্টার থেকে দিন রাত ৪ কোটিরও বেশি মানুষ সেবা পেয়েছে। ৩৩৩ তথ্য ও সেবা কলসেন্টারে সেবা পেয়েছে ৬ কোটি মানুষ। সরকারের অফিস আদালতকে পেপারলেস করতে সম্পাদন হচ্ছে ই’নথি ডিজিটাল ফাইল ম্যানেজমেন্ট সফটওয়ার।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, সরকারের যে নথি ব্যবস্থাপনা সিস্টেম, সরকারের পুরো কার্যক্রমকে পেপারলেস করার জন্য যে উদ্যোগটা সজীব ওয়াজেদ জয় নিয়েছিলেন ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নে নিয়েছিলেন আমরা অত্যন্ত গর্বের সাথে বলতে পারি- ই-নথি, ফাইল ডিজিটাল ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে এক কোটি ৬১ লাখ ফাইল গত পাঁচ বছরে সম্পাদন করেছি।
জেলা-উপজেলা পর্যায়ে ৩৯টি হাইটেক পার্ক নির্মাণ করে প্রযুক্তি খাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অভাবনীয় সফলতা দেখিয়েছে সরকার। কাগজের টাকার লেনদেনও হয়তো ইতিহাস হতে যাচ্ছে কিছুদিনের মধ্যে।
পলক আরও বলেন, জিআরপি সলিউশন, ই-নথি এসবের পরে আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য হচ্ছে কেশলেস সোসাইটি। কারণ একটা ডিজিটাল সোসাইটি গড়তে গেলে প্রয়োজন তিনটি অনুষঙ্গের। প্রথমত লাগবে ইন্টারনেট, দ্বিতীয়ত লাগবে ডিজিটাল পেমেন্ট সলিউশন, তৃতীয়ত লাগবে ইন্টারঅপারেবিলিটি।
এভাবেই প্রতিদিন দেশের কোটি কোটি মানুষ ডিজিটাল বাংলাদেশের সেবা নিচ্ছে। সবার চোখের সামনে যেন বদলে যাচ্ছে সবকিছু। বদলে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আর এভাবেই হয়তো রচিত হয় দিন বদলের এক একটি রূপকল্প।