বাংলাদেশ আজ বিশ্বসভার উদাহরণ

জাতীয়

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এসে বাংলাদেশ আজকে অনেক দূর এগিয়ে গেছে এবং এটি সম্ভবপর হয়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের কারণে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতি এমন পর্যায়ে উন্নতি হয়েছে যে আজ বিশ্ব সভায় উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপিত হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতির প্রশংসা করছে। বিশ্বের অর্থনীতিবিদরা প্রশংসা করছে, জাতিসংঘের প্রেসিডেন্ট প্রশংসা করেছে। রোববার স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং মুজিববর্ষ উপলক্ষে ১৪ দল আয়োজিত অনলাইন আলোচনা সভায় এইসব কথা বলেন তিনি।
হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসেবে টিকে থাকতে পারবে কি না অনেকের সন্দেহ ছিল। আশঙ্কা প্রকাশ করে এমনও বলেছিলেন বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় এক হাজার ডলার উন্নীত করতে ১০০ বছর সময় লাগবে। কিন্তু আজকে বাংলাদেশ মাথাপিছু আয়ের দিক দিয়ে পৃথিবীর ৯২তম দেশ। পৃথিবীতে ধান উৎপাদনে ৩, মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে চতুর্থ। বাংলাদেশ সবজি উৎপাদনে চতুর্থ। এটি সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার জাদুকরি নেতৃত্বে। বাংলাদেশ আজকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের এই দেশে খাদ্য ঘাটতি শুরু হয় পঞ্চাশের দশকের শেষের দিকে। যখন লোকসংখ্যা সাড়ে ৫ কোটি ছিল। এখন লোকসংখ্যা ১৭ কোটি এবং মাথাপিছু জমির পরিমাণ পৃথিবীতে সর্বনি¤œ এবং কৃষি জমির পরিমাণ ২৫ থেকে ৩০ অংশ কমেছে। আজ থেকে ১০ বছর আগে যে ছেলেটা বিদেশে গেছে আজ দেশে ফিরে সে তার গ্রাম চিনতে পারে না। কারণ শহর গ্রাম বদলে গেছে। আকাশ থেকেও কুঁড়ে ঘর খুঁজে পাওয়া যায় না। খালি পায়ে মানুষ দেখা যায় না। শহর কিংবা গ্রামে এখন আর ডাক শোনা যায় না ‘মা আমাকে একটু বাসি ভাত দেন’।
তিনি আরও বলেন, আশির দশকে আমাদের দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা স্লোগান দিত, শ্রমিকের মজুরি হতে হবে সাড়ে তিন কেজি চালের সমান। বিশেষ করে বাম ধারার রাজনীতি যারা করেন তারা এই স্লোগান দিত। আজকে শ্রমিকের মজুরি এমন জায়গায় উন্নিত হয়েছে যে একজন শ্রমিক তার উপার্জন দিয়ে দশ থেকে ১২ কেজি চাল কিনতে পারে।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য আমাদের দেশে একটা দল এবং তাদের সমমনা দলগুলো দেশের এই উন্নয়ন অগ্রগতি দেখতে পারে না। গতকালও মির্জা ফখরুল সাহেব বলেছেন, পঞ্চাশ বছরের মধ্যে কোন উন্নয়ন অগ্রগতি হয় নাই। পঞ্চাশ বছরে মাথাপিছু আয় ভারতকে ছাড়িয়ে গেছে। ২৫৫৪ ডলারে ছড়িয়ে গেছে।পাকিস্তানকে অনেক আগেই ছাড়িয়েছি আমরা। আগে দারিদ্র্য সীমার নিচে বাস করা লোকের সংখ্যা ছিল ৪১ শতাংশ, আজকে সেটি ২০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। এটা আমার বক্তব্য নয় এটা বিশ্বব্যাংকসহ আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের বক্তব্য। কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবরা এগুলো দেখতে পায় না। আসলে পঞ্চাশ বছরে দেশ আরও বহু দূর এগুতে পারতো, যদি বাংলাদেশে নেতিবাচক রাজনীতি না থাকতো, সাংঘর্ষিক রাজনীতি না থাকতো। গণতন্ত্র বার বার শিকল বন্দী না হতো। বাংলাদেশ আরও বহু দূর এগিয়ে যেত।
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্র রচনার পর এই রাষ্ট্রকে যখন সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন তখনই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল। সেই অপশক্তি, যারা স্বাধীনতার বিরুদ্ধ উচ্চারণ করেছিল পাকিস্তানের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছিল। দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক শক্তি মিলে বাংলাদেশকে পিছিয়ে দেওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল। যেই বছর বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় সেই বছর বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ছিল ৯.৫৪ শতাংশ। যদি সেই অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি আমরা ধরে রাখতে পারতাম, তিনি যদি বেঁচে থাকতেন, সেই হারে যদি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হতে থাকতো, দেশ স্বাধীনতার অর্জনের পর সেই অর্থনীতির চাকা অন্যান্য উচ্চতায় পৌঁছে যেত।


বিজ্ঞাপন