নিজস্ব প্রতিবেদক : সম্প্রতি মহান বিজয় দিবস ২০২১ উপলক্ষে দুর্নীতি দমন কমিশনের সম্মেলন কক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ।
এতে আরো উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সম্মানিত কমিশনারদ্বয়, সকাল মহাপরিচালক, পরিচালক, উপ-পরিচালকবৃন্দ। এছাড়াও অনলাইনের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন সকল বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক ও সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপপরিচালকগণ। পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত এর মাধ্যমে আলোচনা অনুষ্ঠান শুরু হয়।
স্বাধীনতা যুদ্ধের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা করেন রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সম্পর্কে আলোচনা করেন পরিচালক শেখ মোঃ ফানাফিল্যাহ।
স্বাধীনতা যুদ্ধে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ, ষড়যন্ত্র ও সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেন মহাপরিচালক মোঃ জাকির হোসেন এবং স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনা ও বর্তমান বাংলাদেশ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন লিগ্যাল ও প্রসিকিউশন অনুবিভাগের মহাপরিচালক মীর রুহুল আমিন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান তার বক্তব্যে বলেন, মুজিব শতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তীর কারনে এবারের মহান বিজয় দিবস ২০২১ বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।
তিনি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
তিনি আরও স্মরণ করেন মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী ৩০ লক্ষ শহীদ ও ২ লক্ষ মা-বোন যাদের জন্য আমরা আজ এই স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি।তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে ছাড়া মুক্তিযুদ্ধকে ভাবা যায় না।
১৯৭৫ পরবর্তী ২১ বছর বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানার সুযোগ পায়নি। তাই আমাদের নিজেদের চেষ্টায় আমাদের সন্তানদের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে। তাদের মধ্যে দেশের প্রতি মমত্ববোধ তৈরি করতে হবে।
মুক্তিযুদ্ধে দেশের সাধারণ মানুষের অবদানের কথাও তুলে ধরতে হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের মানসিক প্রশিক্ষণ মাতৃভূমি থেকেই দেয়া হয়েছিল বলে তিনি উল্লেখ করেন।
চেয়ারম্যান তার বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী মাত্র সাড়ে তিন বছরে দেশ বিনির্মানে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা তুলে ধরেন৷ তিনি ১৯৭১ সালের বাংলাদেশ এবং বর্তমান বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য আর্থসামাজিক অগ্রগতির তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরেন। দুর্নীতিমুক্ত উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মানের অগ্রযাত্রায় সকলের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে তিনি বক্তব্য সমাপ্ত করেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার (তদন্ত) জহুরুল হক বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের উদ্দেশ্য ছিল নিজেদের অধিকার আদায়, সামাজিক ন্যয় বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা।
আপোসহীন বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করার।স্বাধীনতা অর্জনের ফলে আমরা আমাদের অধিকার ফিরে পেয়েছি।তবে সার্বজনীন শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবায় আমরা এখনো লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারিনি। এগুলো নিশ্চিত করতে হবে। এ দুটি যদি মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যায় তখন তারা এগুলো মেটানো জন্য দুর্নীতির আশ্রয় নেয়।
এদুটি খাতে মানসম্পন্ন শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হলে দেশ দ্রুত এগিয়ে যাবে এবং দুর্নীতি হ্রাস পাবে।আমাদের এখন অ্যাকশনে যেতে হবে। ভিআইপিতন্ত্র দূর করতে হবে, বৈষম্য দূর করতে হবে। দুর্নীতিবাজদের শাস্তি দিতে না পারলে বৈষম্য দূর করা যাবে না।
দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার ড. মোঃ মোজাম্মেল হক খান বলেন, আমাদের আচরণ পরিবর্তন করতে হবে। কথার সাথে কাজের মিল থাকতে হবে। স্বাধীনতা অর্জনের পেছনে আমাদের সাধারণ মানুয়ের যে অবদান তা স্বীকার ও স্মরণ করতে হবে।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের বিভাজনের কারণে আমাদের অর্জন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারছিনা।
যার যার অবস্থান থেকে সঠিকভাবে তার উপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করলে স্বাধীনতার প্রকৃত সুফল অর্জন করা সম্ভব। এজন্য আমাদের আন্তরিক অঙ্গীকার থাকতে হবে।