নিজস্ব প্রতিবেদক : তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপি গণতান্ত্রিক রীতিনীতিতে বিশ্বাস করে না, বিধায় সংলাপ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। সোমবার দুপুরে মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিমযকালে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতি সংলাপ আহ্বান করেছেন, সেখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সংলাপে অংশ নিচ্ছে। আশা করবো, বিএনপিও সংলাপে অংশ নেবে। বিএনপির আপত্তি বা বিএনপি যে কথাগুলো রাজপথে কিংবা গণমাধ্যমের সামনে বলছে সেগুলো রাষ্ট্রপতিকে বলে আসতে পারে। তাদের আপত্তি, পরামর্শ সবকিছুই রাষ্ট্রপতিকে বলে আসতে পারে। কিন্তু সেটা না করে বরং সংলাপকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো কাম্য নয়।’
‘রাজনীতিতে সংলাপ প্রয়োজন, আলাপ-আলোচনা ছাড়া রাজনীতি ও গণতন্ত্র এগিয়ে যায় না’ উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তারা (বিএনপি) আসলে গণতান্ত্রিক রীতিনীতিতে বিশ্বাস করে না। গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করতে চায়, বিধায় সংলাপ নিয়ে অবান্তর কথা বলছেন, নানা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন।’
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন প্রসঙ্গে ‘দেশে আ’লীগের বিকল্প আ’লীগই’ উল্লেখ করে আ’লীগের এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘গতবার ও এবারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হয়েছে। চতুর্থ ধাপে নির্বাচন হওয়ার পর দেখা যাচ্ছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আ’লীগই জয়লাভ করেছে। এরপরের অবস্থান হচ্ছে আ’লীগের যেসব প্রার্থী মনোনয়ন পাননি তারা। বিএনপি দলীয়ভাবে নির্বাচন না করলেও স্বতন্ত্র নির্বাচন করেছে এবং বিএনপি প্রার্থীদের জয়লাভের সংখ্যা হাতেগোনা কয়েকজন। আর জাতীয় পার্টির ক্ষেত্রে আরও কম। এতে প্রমাণিত হয়, দেশে আ’লীগের বিকল্প আ’লীগই, অন্য কোনো বিকল্প নেই। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সেটাই উঠে এসেছে। এতে বোঝা যায়, আ’লীগের জনপ্রিয়তা কোনোভাবেই কমেনি বরং বেড়েছে।’
এসময় বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর মন্তব্য নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বেগম জিয়াকে দেশের অভ্যন্তরে সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। তিনি যেভাবে চেয়েছিলেন সেভাবেই, যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে চেয়েছিলেন সেই হাসপাতালেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। শাস্তিপ্রাপ্ত আসামির ক্ষেত্রে এটি প্রধানমন্ত্রীর নজিরবিহীন মহানুভবতা। তাকে যে বিদেশ পাঠানো যায় না, তা নিয়ে আইনমন্ত্রী এর আগে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। সাধারণভাবে তার চিকিৎসা হওয়া উচিত ছিল সরকারের তত্ত্বাবধানে, কোনো একটি সরকারি হাসপাতালে। সেটা হোক বঙ্গবন্ধু মেডিকেল হাসপাতাল বা অন্য কোনো হাসপাতাল। যেহেতু বিএনপির তত্ত্বাবধানে তার সম্পূর্ণ চিকিৎসা হচ্ছে, এখন যদি বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের কোনো হানি হয় সেজন্য বিএনপি ও তার চিকিৎসার দায়িত্বে যারা আছেন তারাই দায়ী থাকবেন।’
এসময় দ্রুত উন্নত হয়ে ওঠা দেশ সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ায় গণমাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ ও এ বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘সিঙ্গাপুরে চারটি টেলিভিশন চ্যানেল সরকার নিয়ন্ত্রিত। বাংলাদেশে ৩৩টি টেলিভিশন চ্যানেল সম্প্রচারে আছে এবং সেগুলো প্রাইভেট চ্যানেল, সরকার নিয়ন্ত্রিত নয়। সরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আলাদা। সিঙ্গাপুরে হাতেগোনা কয়েকটি পত্রিকা এবং সেগুলো অনেকটাই সরকার নিয়ন্ত্রিত। কীভাবে একটা জেলে-পল্লী থেকে সিঙ্গাপুর উন্নত দেশে রূপান্তরিত হলো আমরা সেই উদাহরণ দিই, কিন্তু সিঙ্গাপুরের এ দিকটা নিয়ে কেউ কিছু বলি না। আমাদের দেশে গণমাধ্যমের যে স্বাধীনতা আছে, যে বাক-স্বাধীনতা আছে, সিঙ্গাপুরসহ বহু উন্নয়নশীল দেশের জন্য সেটা উদাহরণ।’