চট্টগ্রাম প্রতিনিধি ঃ রবিবার ১১ ডিসেম্বর, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও বিএসসি পরিচালনার পর্ষদের চেয়ারম্যান খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি বলেছেন,গত ১৪ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সঠিক পদক্ষেপের কারণে মৃতপ্রায় বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। বিএসসি ২০২১-২২ অর্থ বছরে নীট লাভ করেছে ২২৫.৮১ কোটি টাকা। শেয়ার মার্কেটে বিএসসি একটি প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি হিসেবে দাঁড়িয়েছে। জাতীয় সংসদে ‘বাংলাদেশ জাতীয় পতাকাবাহী জাহাজ (স্বার্থরক্ষা) আইন ২০১৯’ পাশ হয়েছে। এর ফলে সরকারি তহবিলে আমদানি বা রপ্তানিকৃত পণ্য সমুদ্রপথে পরিবহনের ক্ষেত্রে বিএসসি অগ্রাধিকার পাবে।
বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নির্দেশনার আলোকে এবং তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার কর্তৃক সামগ্রিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় বিএসসি’র উন্নয়নে নানাবিধ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা দায়িত্ব গ্রহণের পর বিএসসি আবার জেগে উঠেছে।
২১টি জাহাজ সংগ্রহের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। বিএসসি’র বহরে ৬টি নতুন জাহাজ যুক্ত হয়েছে। আরো বেশ কয়েকটি নতুন জাহাজ সংগ্রহের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি ও পদক্ষেপের কারণে বিএসসি শুধু দেশে নয়; আন্তর্জাতিক শিপিং ব্যবসায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
প্রতিমন্ত্রী চট্টগ্রামে চট্টগ্রাম বোট ক্লাবে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের (বিএসসি) ২০২১-২২ অর্থ বছরের ৪৫তম বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মোস্তফা কামাল, বিএসসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর এস এম মনিরুজ্জামান, শেয়ারহোল্ডার কবির আহমেদ চৌধুরী, হীরালাল বণিক, কামাল উদ্দিন আহমেদ, আব্দুল কাদের প্রমুখ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক নৌপথে নিরাপদ ও দক্ষ শিপিং সেবা প্রদান করা এবং বাংলাদেশের সিংহভাগ আমদানি ও রপ্তানি পণ্য নিজস্ব জাহাজ বহর দ্বারা পরিবহন করার উদ্দেশ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিগত উদ্যোগ ও পৃষ্ঠপোষকতায় ১৯৭২ সনের ০৫ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল জাতীয় ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন। বঙ্গবন্ধুর সুচিন্তিত দিক নির্দেশনায় তাঁর জীবদ্দশায় ১৯৭৪ সালের মধ্যে ২৬টি সমুদ্রগামি জাহাজ বিএসসির জাহাজ বহরে সংযোজনের ব্যবস্থা করেন।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতার পাশাপাশি মোংলা বন্দরের উন্নয়ন ও নতুন সমুদ্র বন্দর পায়রা বন্দরের উন্নয়নে হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হচ্ছে। দক্ষ নাবিক তৈরির লক্ষ্যে চারটি নতুন মেরিন একাডেমী প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে; আরো তিনটি মেরিন একাডেমী প্রতিষ্ঠা করা হবে। বরিশাল ও মাদারীপুরে ন্যাশনাল মেরিন ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। কুড়িগ্রামে একটি ন্যাশনাল মেরিন ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হবে। এর ফলে যথেষ্ট পরিমাণ নাবিক তৈরি হবে। তারা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন আরো ভূমিকা রাখবে এবং দেশের অর্থনীতিকে আরো গতিশীল করে তুলবে। সুনীল অর্থনীতি বাস্তবায়নে বিএসসি অন্যতম অংশীদার হিসাবে ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশের অর্থনীতি পরনির্ভরশীল নয়; বাংলাদেশের অর্থনীতি স্বনির্ভর অর্থনীতি। আগে এক কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণের জন্য ঋণের জন্য বিদেশীদের কাছে ধর্ণা দিতে হতো। এখন আমরা নিজস্ব অর্থায়নে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি। পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী নদীতে বঙ্গবন্ধু টানেল, ঢাকা শহরের মেট্রোরেলসহ অনেক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে, হচ্ছে। নৌ, সড়ক ও আকাশ পথে যোগাযোগের ব্যপ্তি বেড়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সম্ভাবনার দ্বার খুলে গেছে। গতি তৈরি হয়েছে। তাবত দুনিয়ায় বাংলাদেশের গুরুত্ব বেড়ে গেছে। বিশ্ব বাংলাদেশকে এখন করুনা নয়; সমীহের দৃষ্টিতে দেখে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গোপসাগরে অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটাকে কাজে লাগাতে হবে। সঠিকভাবে ব্যবহার করে অর্থনীতিতে অবদান রাখবে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রী আগামী বছর মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করবেন। আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নিশ্চিতভাবে বাংলাদেশকে ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশে পরিণত করব।