“ইতিহাসের পাতা থেকে নেওয়া ” বাঙালির মুক্তির দাবিতে অনড় বঙ্গবন্ধুর চূড়ান্ত কর্মসূচির দিনগুলি

Uncategorized জাতীয়



!! ১৯৭১ সালে ৫ মার্চের পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদগুলো থেকে এসব তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়েছে !!



আজকের দেশ ডেস্ক ঃ ১৯৭১ সালের মার্চের শুরু থেকেই নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর গণহত্যা চালাতে শুরু করে পাকিস্তানি জান্তারা। ১ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিতের ঘোষণা আসার পরেই পরবর্তী দুই দিনের জন্য হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমান। উত্তাল হয়ৈ ওঠে ঢাকাসহ পুরো বাংলাদেশ। বিক্ষুব্ধ মিছিলের নির্বাচারে গুলি চালাতে শুরু করে পাকিস্তানিরা। ৩ মার্চ পল্টনের সমাবেশ থেকে এই বর্বরতার তীব্র প্রতিবাদ জানান বঙ্গবন্ধু। এরপর সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আহতদের দেখতে জান তিনি। শত শত আহত মানুষের প্রাণ বাঁচানোর জন্য ব্লাড ব্যাংকে রক্ত দানের জন্য নাগরিকদের আহ্বান জানান তিনি।

গণহত্যাকারী পাকিস্তানিদের শাসনব্যবস্থা অকার্যকর করার জন্য বাঙালিদের সব রকমের খাজনা-ট্যাক্স বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেন বঙ্গবন্ধু। তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর উদ্দেশে বলেন, ‘বাংলার গণপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা সমর্পণ করিয়া ব্যারাকে ফিরিয়া না যাওয়া পর্যন্ত স্বাধিকারকামী বাংলার মানুষ আর সহযোগিতা করিবে না, কোনো কর-খাজনাও দেবে না। বাংলার মানুষ খাজনা দেয়, ট্যাক্স দেয় রাষ্ট্র চালানোর জন্য। গুলি খাওয়ার জন্য না।’ এমনকি সরকারি-বেসরকারি সব চাকরিজীবীদের অফিস বয়কট করার চূড়ান্ত নির্দেশ দেন তিনি এসময়।

পাকিস্তানিরা একদিকে জান্তা লেলিয়ে দিয়ে গণহত্যা শুরু করে, আবার অন্যদিকে ১০ মার্চ পার্লামেন্টারি গ্রুপের নির্বাচিত নেতাদের নিয়ে ঢাকায় বৈঠকের আহ্বান জানায়। কিন্তু স্বৈরাচার ইয়াহিয়া খানের এই প্রস্তাবকে ‘নিষ্ঠুর তামাশা; অভিহিত করে নাকচ করে দেন নির্বাচনে বিজয়ী নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। পল্টনের জনাকীর্ণ সমাবেশে তিনি বলেন, ‘যেই মুহূর্তে এইসব বীর শহীদদের রক্তের দাগ রাজপথের বুক হইতে এখনো শুকায়া যায় নাই, যখন বহু শহীদের নশ্বরদেহ দাফনের প্রতীক্ষার পড়িয়া আছে, যখন শত শত বুলেটবিদ্ধ সাধারণ মানুষ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা করিয়া চলিয়াছে, সেই অবস্থায় হামলাকারীদের সাথে কোনো বৈঠক হইতে পারে না।’

এদিকে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে রাজপথ উত্তাল করে তোলে আপামর জনতা। ফলে সুযোগসন্ধানীরা যাতে এই পরিস্থিতি থেকে কোনো নাশকতা না করে, কোনো দাঙ্গা ঘটাতে না পারে, সেজন্য উচ্ছৃঙ্খলতা ও লুটতরাজ ঠেকাতে ছাত্রলীগ, ডাকসু ও আওয়ামী লীগের সহযোগিতায় গঠন করা হয় একটি স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী। যারা শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করে।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *