স্পোর্টস ডেস্ক : বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভারতের মুখোমুখি বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন নবাগত টাইগার অধিনায়ক মুমিনুল হক। নিজেদের ইনিংসের শেষ ১০ রানেই ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। যেখানে কোনো ব্যাটসম্যানই ফিফটির দেখা পাননি। সর্বোচ্চ ৪৩ রান আসে মুশফিকুর রহিমের ব্যাট থেকে। প্রথম ইনিংসে ৫৮.৩ উইকেটে সব ক’টি উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে মাত্র ১৫০ রান। ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ২টি করে উইকেট তুলে নেন মোহাম্মদ সামি এবং উমেষ যাদব।
১৫০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দিন শেষে ভারতের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৮৬ রান। বাংলাদেশের ১৫০ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি ভারতের। শুরুতে রোহিত-আগারওয়াল সাবধানে খেললেও অষ্টম ওভারেই প্রথম উইকেট হারিয়েছে ভারত। দলীয় ১৪ রানে ভারতীয় ওপেনার সাজঘরে পাঠিয়েছেন টাইগার পেসার আবু জায়েদ রাহি। লিটন দাসের তালুবন্দী হয়ে ফেরার আগে ১৪ বলে ৬ রান তুলেছেন রোহিত শর্মা। এরপর দলের হাল ধরেন মায়াঙ্ক আগারওয়াল এবং চেতেশ্বর পূজারা। ধৈর্যশীল ব্যাটিংয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন এই দুই ব্যাটসম্যান। দিন শেষে মায়াঙ্ক অপরাজিত রয়েছেন ৩৭ রানে এবং পূজারা ৪৩ রানে। ৬৪ রানে পিছিয়ে থেকে দিন শেষ করে ভারত।
সকালে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন নবাগত টাইগার অধিনায়ক মুমিনুল হক। প্রথম ইনিংসে ৫৮.৩ উইকেটে সব ক’টি উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে মাত্র ১৫০ রান। টাইগারদের হয়ে সর্বোচ্চ রান আসে মুশফিকুর রহিমের ব্যাট থেকে। ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ২টি করে উইকেট তুলে নেন মোহাম্মদ সামি এবং উমেষ যাদব। ভারতের মধ্য প্রদেশের ইন্দোরের হোলকার স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হয়েছে বাংলাদেশ সময় সকাল ১০ টায়। টি-টুয়েন্টি সিরিজে প্রথম ম্যাচ জয় পেলেও শেষ দুই ম্যাচ হেরে ভারতের মাটিতে ইতিহাস গড়তে পারেনি বাংলাদেশ। তাই টেস্ট সিরিজের দিকে বাড়তি নজর থাকবে টাইগারদের।
তবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপ খেলতে নেমে শুরু থেকেই ভারতীয় বোলারদের তোপের মুখে পড়ে টাইগার দুই ওপেনার। ভারতীয় বলের পেসের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি দুই ওপেনার সাদমান ও ইমরুল। দলীয় ১২ রানে ঈশান্ত শর্মার বলে সাহার ক্যাচ হয়ে ফিরেন দীর্ঘদিন পর টেস্টে ফেরা ইমরুল কায়েস (৬)। স্কোরকার্ডে আর কোন রান যোগ না হতেই সাজঘরে ফিরেছেন আরেক ওপেনার সাদমান (৬)। উমেশ যাদবের বলে রাহানের তালুবন্দী হয়ে ফিরেছেন তিনি।
দ্রুত দুই উইকেটের পর মিথুন-মুমিনুলে ধীরেসুস্থেই খেলছিল বাংলাদেশ। কিন্তু দুজনের জুটিতে মাত্র ১৯ রান হতেই শামির বলে এলবির শিকার হতে হলো মিথুনকে। সাজঘরে ফেরার আগে ৩৬ বলে ১২ রান তুলেছেন তিনি।
প্রথম সেশনেই ৩ উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে মুশফিক-মুমিনুলের ৬৮ রানের জুটিতে আশা দেখছিল বাংলাদেশ। কিন্তু লাঞ্চের পর ক্রিজে বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন দলপতি মুমিনুল। ৮০ বলে ৩৭ রান তুলতেই অশ্বিনের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয়েছে তাকে।
দলীয় শতক পূর্ণ হওয়ার আগে ফিরে যায় টাইগারদের টপ অর্ডারের চার ব্যাটসম্যান। এরপর উইকেটে আসেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে তিনিও বেশিক্ষণ উইকেটে থাকতে পারেননি। দলীয় ১১৫ রানের মাথায় ব্যক্তিগত মাত্র ১০ রানে আশ্বিনের দ্বিতীয় শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান তিনিও।
এরপর লিটন দাসকে নিয়ে দলের হাল ধরতে চেষ্টা করেন মুশফিকুর রহিম। তবে বেশি দূর নিয়ে যেতে পারেননি দলকে। মোহাম্মদ সামির বলে বোল্ড হয়ে ৪৩ রানে ফিরে যান তিনি। ঠিক তার পরের বলে আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পরে উইকেট বিসর্জন দেন মেহেদী মিরাজ। এরপর চা-বিরতি থেকে ফিরে প্রথম বলেই প্যাভিলিয়েন ফিরে যান লিটন দাস (২১)। এরপর রান আউট হয়ে ফেরেন তাইজুল ইসলাম (১)।
চলতি বছরে শুরু হয়েছে প্রথমবারের মতো আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। ভারত এর আগে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে উইন্ডিজ এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলে ফেললেও ইন্দোরের ম্যাচ দিয়েই শুরু হচ্ছে বাংলাদেশের যাত্রা।
বাংলাদেশ একাদশ:
ইমরুল কায়েস, শাদমান ইসলাম, মোহাম্মদ মিঠুন, মুমিনুল হক (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, লিটন দাস (উইকেটরক্ষক), মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, আবু জায়েদ, এবাদত হোসেন।
ভারত একাদশ:
মায়াঙ্ক আগারওয়াল, রোহিত শর্মা, চেতেশ্বর পূজারা, বিরাট কোহলি (অধিনায়ক), আজিঙ্কা রাহানে, রবীন্দ্র জাদেজা, ঋদ্ধিমান সাহা (উইকেটরক্ষক), রবীচন্দ্রন আশ্বিন, উমেষ যাদব, মোহাম্মদ শামী, ইশান্ত শর্মা।