কুষ্ঠরোগীদের সহানুভূতির সাথে দেখতে হবে

এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন রাজধানী স্বাস্থ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক : কুষ্ঠরোগীদের সহানুভূতির সাথে দেখতে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনে সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি। বুধবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত কুষ্ঠবিষয়ক জাতীয় সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
কুষ্ঠকে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে সরকার আন্তরিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কুষ্ঠরোগসহ অন্যান্য রোগের হার কমিয়ে আনতে সরকার কাজ করছে। কুষ্ঠরোগে আক্রান্তদের বিষয়ে রোগী ও স্বজনদের মানসিকতা পরিবর্তনেও কাজ চলছে।
প্রধানমন্ত্রী কুষ্ঠ রোগকে প্রাথমিক পর্যায়ে চিহ্নিত করা এবং তাদের নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিতে সামাজিক সচেতনতার প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, যে সব এলাকায় কুষ্ঠরোগী বেশি, সে সব এলাকায় বিশেষ নজর দিলে ২০৩০ সাল নাগাদ এ রোগ নির্মূল করা সম্ভব হবে।
তিনি আরো বলেন, কুষ্ঠরোগীদের ঘরে বাইরে আসার সুযোগ করে দিতে ও স্বাভাবিক জীবন দিতে আইনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। আইন সংশোধনের মাধ্যমে তাদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা ও বাইরের পৃথিবী দেখার সুযোগ করে দিয়েছি। এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতেও কাজ করছি।
স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে ১০ বেডের হাসপাতাল গড়ে তোলার পদক্ষেপ নিয়েছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে ও দেশের প্রতিটি মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের পদক্ষেপ হিসেবে কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশের গ্রামগুলোতে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার স্বামীর চাকরির সুবাদে আমি যখন মহাখালী কোয়াটারে থাকতাম তখন সেখানে বেশ কিছু কুষ্ঠরোগী আসতো। আমি তাদের খেতে দিতাম এবং টাকা-পয়সা দিয়ে সাহায্য করতাম। আবার যখন বিরোধীদলীয় নেতা ছিলাম এবং মিন্টো রোডে বসবাস করতাম তখনও সেখানে কুষ্ঠরোগী যেত। তাদেরও সাহায্য করতাম। প্রথম প্রথম অনেকে তাদের কাছে যেত না, তারপর আমি যখন যাওয়া শুরু করলাম তখন সবাই যাওয়া শুরু করল। তখন থেকেই ভাবতাম কোনোদিন ক্ষমতায় গেলে কুষ্ঠরোগীদের জন্য স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা করব।
শেখ হাসিনা বলেন, ক্ষমতায় যাওয়ার পর এই কুষ্ঠরোগীদের জন্য গাজীপুরে আশ্রয়ণ প্রকল্প করা হলো। ৭০টি পরিবারকে সেখানে আশ্রয় দেয়া হলো। সরকারির পাশাপাশি বেসরকারিভাবেও অনেকে এগিয়ে এল। সেখানে বসবাস করা অনেকেই এখন রোগমুক্ত হয়েছে। তারা এখন সমাজের অন্য মানুষের সঙ্গে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে। তাদের এখন আর ভিক্ষাবৃত্তি করতে হচ্ছে না। তারা এখন আর অবহেলার পাত্র নয়।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে কুষ্ঠরোগের ওপর একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *