নিজস্ব প্রতিবেদক : চলতি জাতীয় সংসদের শীতকালীন অধিবেশন বসছে আগামীকাল বৃহস্পতিবার। এটি চলতি সংসদের ষষ্ঠ ও বছরের প্রথম অধিবেশন। এদিন বিকেল ৪টায় অধিবেশন শুরু হবে। সংবিধান অনুযায়ী বছরের প্রথম অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি ভাষণ দেন। এ অধিবেশনেও তিনি সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে ভাষণ দেবেন।
সংসদের রেওয়াজ অনুযায়ী, সংসদের কোনো সদস্য (এমপি) যদি মারা যান, তাহলে শোক প্রস্তাব শেষে অধিবেশন মুলতবি করা হয়। সে অনুযায়ী গাইবান্ধা-৩ আসন থেকে নির্বাচিত চলতি সংসদের সদস্য ডা. ইউনুস আলী সরকারের মৃত্যুতে এ অধিবেশনে শোক প্রস্তাব আনার পর অধিবেশেন কিছুক্ষণ মুলতবি রাখা হবে। এরপর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সরকারের এক বছরের কর্মকাণ্ড তুলে ধরে ও আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে দিকনির্দেশনামূলক ভাষণ দেবেন।
এই অধিবেশন কত দিন চলবে তা সংসদের কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে। অধিবেশন শুরুর এক ঘণ্টা আগে সংসদ ভবনে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে কমিটির সদস্য প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকবেন।
রাষ্ট্রপতির ভাষণকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে সংসদ সচিবালয়। ফুল ও বিভিন্ন পাতাবাহার গাছ দিয়ে সাজানো হয়েছে সংসদের ভেতরট। ইতোমধ্যে মন্ত্রিসভার বৈঠকে রাষ্ট্রপতির ভাষণ অনুমোদন হয়েছে। সংসদ সচিবালয়ও ভাষণের বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েছে। রাষ্ট্রপতির আগমনকে সামনে রেখে সংসদ ভবনের রাষ্ট্রপতির দফতর ও অধিবেশন কক্ষ সাজানোর পাশাপাশি সংসদ ভবন এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির জন্য নির্ধারিত প্রেসিডেন্ট প্লাজা দিয়ে সংসদ ভবনে প্রবেশ করবেন আবদুল হামিদ। এ কারণে প্রেসিডেন্ট প্লাজা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তার হেঁটে যাওয়ার পথে বসানো হয়েছে লাল কার্পেট।
সংসদ সচিবালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, অধিবেশনের প্রথম দিনে গাইবান্ধা-৩ এর সংসদ সদস্য ডা. ইউনুস আলী সরকারের মৃত্যুতে আনীত শোক প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা ও শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হবে। শোক প্রস্তাব গ্রহণের পর অধিবেশন মুলতবির রেওয়াজ থাকলেও বছরের প্রথম অধিবেশনের প্রথম দিনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের বিধান থাকায় অধিবেশন কিছু সময়ের জন্য মুলতবি দিয়ে আবারও শুরু হবে। এরপর রাষ্ট্রপতি সংসদে ভাষণ দেবেন।
তারা আরও বলেন, ওই ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাব নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলের সদস্যরা আলোচনা করবেন। এজন্য এই অধিবেশনের মেয়াদ দীর্ঘ হয়।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের পর ৩০ জানুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদের যাত্রা শুরু। চলতি সংসদের দ্বিতীয় বছরের প্রথম অধিবেশন ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ হবে। এরপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিববর্ষ’ উপলক্ষে আগামী ২২ ও ২৩ মার্চ সংসদের বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করা হবে। যে অধিবেশনে বিভিন্ন দেশের স্পিকারসহ এমপিরা অংশ নেবেন।
অধিবেশনের জন্য সাতটি বিল
এ অধিবেশনে তিনটি সরকারি বিল নিয়ে আলোচনা ও পাস হওয়ার কথা রয়েছে। এগুলো হলো ‘কাস্টমস বিল-২০১৯’, ‘বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিল-২০১৯’, ‘বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন (সংশোধন) বিল-২০১৯’, ‘বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন বিল-২০১৯’, ‘বাংলাদেশ প্রকৌশল গবেষণা কাউন্সিল বিল-২০১৯’, ‘বাংলাদেশ বাতিঘর বিল-২০২০’ এবং ‘স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফাইন্যান্সশিয়াল কর্পোরেশনসহ স্বশাসিত সংস্থাসমূহের উদ্বৃত্ত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান বিল-২০২০’।