রহস্যজনক কারণে গ্রেফতারি পরোয়ানা তামিল হচ্ছে না  :  একই সাথে দুই নারীর সর্বনাশ করেও বহাল তবিয়তে অফিস করছেন স্থাপত্য অধিদপ্তরের বাবলু চন্দ্র বর্ম্মন !

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী

বিশেষ প্রতিবেদক  :  শাপলা তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচবো না। শারমিন তুমি আমার জীবন। কি চমতকার অভিনয়? এ যেন সিনেমার কাহিনীকেও হার মানায়। এভাবেই প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে একই সাথে দুই নারীর সর্বনাশ করেছে ঢাকা সেগুনবাগিচাস্থ স্থাপত্য অধিদপ্তরের থ্রীডি এনিমেটর বাবলু কুমার বর্ম্মন। হিন্দু হয়েও প্রেমের জালে ফাঁসিয়েছেন এক মুসলিম নারীকে। নিজে ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ওই মুসলিম নারীর দেহ ভোগ করেছেন বছরের পর বছর।


বিজ্ঞাপন

স্বামী স্ত্রী পরিচয়ে আবাসিক হোটেলে নিয়ে রাতও কাটিয়েছেন। করেছেন ফুলশয্যা। কলিগ প্রেমিকা শারমিনকে স্ট্যাডবাই রেখে নিজের বিবাহিতা মামাতো বোন শাপলাকেও বিয়ের আশ^াস দিয়ে তার শ^্শাুর বাড়ীতে গিয়ে দেহ ভোগ করেছেন। ত্রা কাছ থেকে ৫/৬ লাখ টাকাও ধার নিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত ধরা খেয়ে এখন সব সম্পর্কের কথা অস্বীকার যাচ্ছেন। কিন্তু তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে অপরাধ করে অস্বীকার করে কি বাঁচা যায়? প্রতিটি প্রমাণ রয়েছে ভিকটিমদের কাছে। তারা সেগুলো আদালতে সাবমিট করেছে।


বিজ্ঞাপন

ভয়ংকর এই প্রেম, প্রতারক ও ঠগবাজের নাম বাবলু চন্দ্র বর্ম্মন। তার বর্তমান ঠিকানা: ৩ডি এনিমেটর বিভাগ-সার্ভিস, সার্কেল- সমন্বয় স্থাপত্য বিভাগ, স্থাপত্য অধিদপ্তর, সেগুনবাগিচা, ঢাকা -১০০০। গ্রামের ঠিকানা: রংপুর জেলার কাউনিয়া উপজেলার শিবু গ্রামে। বাবার নাম- মুত অধিন চন্দ্র বর্ম্মন। বড় ভাইয়ের নাম: রতন চন্দ্র বর্ম্মন। এলাকায় নারীখোর পরিবার বলে তাদের পরিচিতি রয়েছে।


বিজ্ঞাপন

রংপুরে এই ঘটনা নিয়ে তোলপাড় চলছে। প্রতারক ও নারীখাদক বাবলু চন্দ্র বর্ম্মনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী তুলেছেন এলাকাবাসী। একই সাথে নৈতিক অধ:পতন হেতু তাকে স্থাপত্য অধিদপ্তরের সরকারী চাকুরী থেকে সাময়িক বরখাস্ত করার আবেদন জানানো হয়েছে।


বিজ্ঞাপন

এ দিকে নিজে হিন্দু হয়ে একজন মুসলিম নারীকে প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে তার সর্বনাশ করার ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের হয়েছে রংপুর জেলার তাজহাট থানায়। মামলা নং ৭ তারিখ: ২৩/৪/২০২৫। জিআর নং ৫১। ধারা: ৯ এর (খ) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০। এই মামলায় বাবলু চন্দ্র বর্ম্মন ও তার ভাই রতন চন্দ্র বর্ম্মনের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। মামলার বাদী হয়েছেন প্রেম প্রতারণার শিকার শারমিন আক্তার।

এ দিকে মামলা হওয়ার পর থেকেই বাবলু চন্দ্র বর্ম্মন বাদী শারমিন আক্তারকে গুম,হত্যা,এসিড নিক্ষেপ সহ অপহরণের হুমকি দিচ্ছেন। তার অফিসে গিয়ে সিনক্রিয়েট করছেন। অফিস বসের কাছে নানা প্রকার অভিযোগ দিচ্ছেন। ভাড়াটিয়া গুন্ডা লেলিয়ে দিয়েছেন। এক কথায় নরকময় করে তুলেছেন বাদী শারমিন আক্তারের জীবন।

বিষয়টি নিয়ে এই প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় মামলার বাদী শারমিন আক্তারের। তিনি সমন্ত প্রমাণ উপস্থাপন করে জানান, ২০২২ সালে অফিসের একই স্টাফ বাসে আসা যাওয়ার সময় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর বাবলু চন্দ্র বর্ম্মন শারমিন আক্তারের অতিরিক্ত কেয়ার নেওয়া শুরু করেন।

একদিন শেরেবাংলা নগরস্থ তার এক বন্ধুর বাড়ীতে বেড়াতে নিয়ে বিয়ে করার শর্তে দৈহিকভাবে  মেলামেশা করেন। এরপর নিয়মিত তারা মিলিত হতে থাকেন। সরকারি কোয়ার্টারে উঠেও তাদের শাররীক সম্পর্ক অটুট থাকে।

এ ভাবে ২ বছর চলার পর একদিন গভীর রাতে বাবলু চন্দ্র বর্ম্মন তার প্রাক্তন প্রেমিকা মামাতো বোন শাপলার সাথে কথা বলতে গিয়ে শারমিনের কাছে ধরা খেয়ে যান। শারমিন ওই মেয়ের সাথে কথা বললে সে জানায় যে, বাবলু চন্দ্র বর্ম্মন তার মামাতো ভাই এবং ছোট বেলার প্রেমিক। ১০ বছর ধরে তাদের প্রেমের সস্পর্ক। শাপলার শশুর বাড়ি  ব্রাম্মনবাড়ীয়া জেলায়। সেখানে যেয়ে লম্পট বাবলু চন্দ্র বর্ম্মন বিয়ের আশ্বাস  দিয়ে তার দেহ ভোগ করে।

এ ছাড়া নানা কাজের কথা বলে তার কাছ থেকে বাবলু ৫/৬ লাখ টাকাও নিয়েছে। এ কথা শোনার পর শারমিনের মাথায় বিনামেঘে বজ্রপাত ঘটে। সে বাবলুর আসল চরিত্র জেনে যায়। সে রাতে প্রচন্ড ঝগড়া ঝাটি করে বাবলুর বাসা ত্যাগ করে। এরপর সে বাবলুকে বিয়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করে। ছুঁটে যায় তাদের রংপুরের বাড়ীতে। সেখানে এলাকাবাসীর মধ্যস্থতায় সালিশ দরবার হয়।

বাবলু চন্দ্র বর্ম্মনের বড় ভাই রতন চন্দ্র বর্ম্মন সালিশের সিদ্ধান্ত মোতাবেক স্ট্যাম্প লিখে দেন যে, তিনি ১৫ দিনের মধ্যে শারমিনের সাথে বাবলুর বিয়ের ব্যবস্থা করবেন। তখন স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে রংপুরের একটি হোটেলে রাত কাটিয়ে শারমিন ঢাকায় ফিরে আসে। সে রাতেও বাবলু হোটেল রুমে শারমিনের দেহ ভোগ করেন। কিন্তু স্ট্যাম্পের শর্তমত বিয়ে না করায় শানমিন আক্তার গত ২৩/৪/২০২৫ তারিখে রংপুরের তাজহাট থানায় মামলা দায়ের করেন।

এ দিকে এ ঘটনা ফাঁস হওয়ায় বাবলু চন্দ্র বর্ম্মন এর প্রাক্তন প্রেমিকা তার মামাতো বোন শাপলার সংসারেও দাউ দাউ করে আগুন জ¦লছে। সেই আগুনে শাপলার সংসারটিও বিরতিহীন পুড়ছে। কখন যেন চুড়ান্ত বিস্ফোরণ ঘটে। অর্থাত: এক বাবলু চন্দ্র বর্ম্মন দুইজন নারীর জীবনকে নরকে পরিণত করেছেন। তাই তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।

এ দিকে ক্রিমিনাল অফেন্সে মামলা দায়ের হলেও নৈতিক স্খলণজনিত কারণে কেন তাকে সরকারি চাকরি থেকে আজো সাময়িক বরখাস্ত করা হয়নি সেটাই সবার প্রশ্ন। গণপূর্ত অধিদপ্তর ও স্থাপত্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা কেন এ বিষয়ে নিরব রয়েছেন সেটাও জাতি জানতে চায়।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর মত গুরুতর অপরাধের একটি মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় ানয়ে ঢাকার সেগুন বাগিচার মত জায়গায় স্থাপত্য অধিদপ্তরে কিভাবে নিয়মিত অফিস করছেন লম্পট বাবলু চন্দ্র বর্ম্মন?

এ প্রশ্নের কোন জবাব মিলছে না। সর্বাপরি একজন হিন্দু হয়ে একজন মুসলিম নারীকে প্রেম প্রতারণায় ফাঁসিয়ে তার চুড়ান্ত সর্বনাশ করার সাহস কোথায় পেলো বাবলু চন্দ্র বর্ম্মন? এ ক্ষেত্রে দেশের মানবাধিকার ও নারী কল্যাণ সংগঠনের নেত্রীরা নিরব কেন?


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *