নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকারি হাসপাতালের কোনো তথ্য বা সংবাদ কর্তৃপক্ষের সম্মতি ছাড়া প্রকাশ করা যাবে না। একই সঙ্গে জামানতের মাধ্যমে দেয়া হবে দর্শনার্থী পাস। স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে সরকারি সব স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে পাঠানো এক নির্দেশনাপত্র থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
‘সরকারি হাসপাতালের দর্শনার্থী ব্যবস্থাপনা’ শিরোনামের ওই নির্দেশনাপত্রে বলা হয়েছে, গবেষণা, জরিপ অন্য কোনো তথ্য বা সংবাদ সংগ্রহের জন্য তথ্য সংগ্রহকারী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন। সংগৃহীত তথ্য বা সংবাদের বস্তুনিষ্ঠতার বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন। বিনা অনুমতিতে হাসপাতালের ভেতরে রোগী বা স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রমের কোনো স্থির চিত্র বা ভিডিও চিত্র ধারণ করতে পারবেন না। সংগৃহীত তথ্য প্রকাশের আগেই বস্তুনিষ্ঠতা বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সম্মতি গ্রহণ করতে হবে।
এতে বলা হয়, প্রত্যেক হাসপাতালে দর্শনার্থী পাস চালু করতে হবে এবং প্রতিটি পাসের জন্য নিরাপত্তা জামানত চালু করা যেতে পারে। রোগীর অসুস্থতা বিবেচনায় একজন রোগীকে সহায়তার জন্য সর্বোচ্চ দুজন দর্শনার্থীকে পাস দেয়া যেতে পারে। হাসপাতাল ত্যাগের আগেই পাস জমা দিয়ে নিরাপত্তা জামানত ফেরত নিতে পারবেন।
হাসপাতালের সকল চিকিৎসক, নার্সসহ কর্মচারীদের বৈধ পরিচয়পত্র দৃশ্যমানভাবে ঝুলিয়ে রাখার নির্দেশনা দিয়ে চিঠিতে বলা হয়, আগত দর্শনার্থীদের জন্য পাস ইস্যু করার সময় নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, পরিদর্শনের কারণ ইত্যাদি তথ্য-সম্বলিত রেজিস্টার সংরক্ষণ করা যেতে পারে। দর্শনার্থীবিষয়ক নিয়মাবলী রোগী ও রোগীর সহায়তাকারীদের অবহিত করতে হবে। এছাড়া এসব নিয়মাবলী সহজে দৃষ্টিগোচর হয় এমন স্থানে প্রদর্শন করতে হবে।
এ নির্দেশনা জারির প্রেক্ষাপট তুলে ধরে চিঠিতে আরো বলা হয়, দেশের সব সরকারি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে মানসম্মত চিকিৎসা সেবা প্রদান সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্ব ও নির্দেশনায় এ খাতের অগ্রগতি বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। মানসম্মত ও নিরাপদ চিকিৎসা প্রদান করতে হলে রোগীর সঙ্গে আগত দর্শনার্থীদের নিয়ন্ত্রণ করা অতীব জরুরি। কেননা তাদের স্বাস্থ্যবিষয়ক অভিজ্ঞতা এবং জীবাণু সংক্রমণ রোধে করণীয় বিষয়ে সাম্যক জ্ঞানের অভাবে অধিকাংশ সময় কাঙ্ক্ষিত পরিবেশ বা পরিস্থিতির অবনতি হয়।
এছাড়া ‘ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত দর্শনার্থী হওয়ায় হাসপাতালে নিরাপত্তা, পরিচ্ছন্নতা, ইউটিলিটি সার্ভিস, রোগীর গোপনীয়তা এবং চিকিৎসাসেবীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়’ বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
নির্দেশনাটি স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, সব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক, সব বিশেষায়িত হাসপাতালের পরিচালক, হাসপাতাল ও ক্লিনিকের পরিচালক, সব বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য), সব সিভিল সার্জন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাদের পাঠানো হয়েছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সম্মতি ছাড়া কোনো তথ্য প্রকাশ করা যাবে না- এমন নির্দেশনা দেয়ার বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, যে কোনো তথ্য সংগ্রহ করা যাবে। তথ্য সংগ্রহে বাধা নেই। এটা তো সাংবাদিকতার নীতি যে, যার সম্পর্কে তথ্য পেয়েছি, সেই বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলে ক্রস চেক করে নিতে হয়, তার বক্তব্য নিতে হয়। সেটাই আমরা বলেছি।