বিশেষ প্রতিবেদক : অবশেষে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ইয়াবা সম্রাট মতিউর রহমান চুনুকে কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশন থেকে জুড়ী থানা পুলিশ আটক করেছে। বুধবার সন্ধ্যায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জুড়ী থানার ওসি তদন্ত আমিনুল ইসলাম সেলিমের নেতৃত্বে একদল পুলিশ কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশনে এক অভিযান চালিয়ে সিলেটের একটি মামলার ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামি ইয়াবা সম্রাট মতিউর রহমান চুনুকে আটক করা হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার আসামি চুনুকে মৌলভীবাজার কোর্টে প্রেরণ করা হয়। এ ব্যাপারে জুড়ী থানার ওসি তদন্ত আমিনুল ইসলাম সেলিম আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মতিউর রহমান চুনু সিলেটের জিআর ১৯২/১৮ মামলার ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামী। জুড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার বলেন, সিলেট শাহপরান থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের ধারায় দায়েরকৃত মামলায় গ্রেপ্তারী পরোয়ানা থাকায় আদালতের আদেশে মতিউর রহমান চুনুকে গ্রেফতার করে কোর্টে হাজির করা হয়।
এদিকে দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত ছিলো মতিউর রহমান চুনু। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে দেয়া অভিযোগ অনুসন্ধানে জানা যায়, স্থানীয় প্রভাবশালী জামাত-বিএনপি নেতা মতিউর রহমান চুনুসহ একটি সংঘবদ্ধচক্র জুড়ী উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ শহরে ইয়াবা ব্যবসার নেটওয়ার্ক স্থাপন করে গোপনে চালিয়ে যাচ্ছে ইয়াবা ব্যবসা। যার ফলে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীসহ এলাকার বেকার তরুন যুবকরা সহজলভ্যতার কারণে ইয়াবা সেবনে আসক্ত হয়ে পড়ছে দিনদিন। একাধিক সূত্রে জানা যায়, সব সেক্টর ম্যানেজ করেই এসব ব্যবসা চালানো হয়। মতিউর রহমান চুনু উপজেলা সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়ন (২৩৫৯) এর দীর্ঘদিনের সভাপতি হওয়ার সুবাদে অনেক সিএনজি চালককে কৌশলে এই ব্যবসায় নিয়োগ দিয়েছেন। অনেক সিএনজি চালককে পুলিশ গ্রেফতার করলেও রহস্যজনক কারণে মতিউর রহমান চুনু সব সময়ই ছিলেন ধরা ছোয়ার বাইরে। এছাড়াও এই ব্যবসায় জড়িত রয়েছেন স্থানীয় অনেক প্রভাবশালী লোক। গত বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি ইয়াবা সম্রাট মতিউর রহমান চুনুর ছোট ভাই সুমেল আহমদকে ২০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ গ্রেফতার করে পুলিশ। পাশাপাশি জুড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ইয়াবা সেবন, বিক্রি ও বহনের সময় নারীসহ অন্তত ২০/৩০ যুবক-যুবতি পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তাদের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। তবুও বন্ধ হচ্ছে না অবৈধ ইয়াবা ব্যবসা। বিপথগামী হচ্ছে ভদ্র ঘরের স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছেলে মেয়েরা। এলাকাবাসীর অভিমত, একাধিক মামলার আসামী থাকার পরও মতিউর রহমান চুনু অনেকটা প্রকাশ্যে চালিয়ে যাচ্ছিল তার ইয়াবা ব্যবসা। এখন যেহেতু সে গ্রেফতার হয়েছে, আমরা চাই তাকে রিমান্ডে নিয়ে সকল অপকর্মের তথ্য বের করা হউক। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অসীম চন্দ্র বনিক বলেন, এ বিষয়ে গত বছর একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছিলাম। তখন অভিযোগটি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জুড়ী থানার ওসি বরাবরে পাঠিয়েছিলাম।