সুমন হোসেন, (যশোর) : ইতিহাস ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক শতবর্ষী যশোর জেলা পরিষদ ভবন রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে যশোরের ঐতিহ্য রক্ষা সংগ্রাম কমিটি। বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধন থেকে নেতৃবৃন্দ, অবিলম্বে শতবর্ষী যশোর জেলা পরিষদ ভবন ভাঙ্গার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
ঘণ্টাব্যাপি মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন, সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক প্রবীণ সাংবাদিক মুক্তিযোদ্ধা রুকুনউদ্দৌলাহ, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মোবাশ্বের হোসেন বাবু, সদস্য সচিব শিল্পকলা একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহমুদ হাসান বুলু, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যশোরের সভাপতি হারুন অর রশীদ, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি সাজেদ রহমান বকুল, বর্তমান সভাপতি মনোতোষ বসু, প্রেস ক্লাব যশোরের যুগ্ম সম্পাদক হাবিবুর রহমান মিলন, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় নেতা জিল্লুর রহমান ভিটু ও জেলা সাধারণ সম্পাদক তসলিমুর রহমান, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট যশোরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দীপঙ্কর দাস রতন, উদীচী যশোরের সহসভাপতি খন্দকার রাজিবুল ইসলাম টিলন, বিবর্তনের সভাপতি নওরোজ আলম খান চপল, আইইডি’ ব্যবস্থাপক বিথীকা সরকার, যুবমৈত্রী নেতা সুকান্ত দাস, ঝিকরগাছা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সুজন দত্ত, সাংবাদিক সালমান হাসান প্রমুখ।
মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা মনে করি এটি ইতিহাস-ঐতিহ্য বিরোধী সর্বনাশী সিদ্ধান্ত। তবে জেলা পরিষদ ভবনটি সংস্কারের প্রয়োজন হতে পারে। এক্ষেত্রে মূল নকসা অপরিবর্তিত রেখে সংষ্কার করে ভব্যিষৎ প্রজন্মকে যশোরের ইতিহাস জানার সুযোগ দেওয়া উচিত বলে মনে করি।
আমরা লক্ষ করছি যে ‘একে একে নিভিছে দেওটি’ এর মতো যশোরের ঐতিহ্যের ধারক সব স্মারকগুলো নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে। যার মধ্যে অন্যতম হলো আধুনিক প্রশাসনিক ব্যবস্থা পরিচালনার প্রথম ভবন যশোর জেলা রেজিস্ট্রি অফিসের পরিত্যক্ত ভবন। এই ভবনটি যশোরের প্রথম কালেক্টরেট ভবন। এই ভবনটির ঐতিহ্য রক্ষায় কারো কোনো উদ্যোগ নেই। সেটি আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। শুধু তাই নয় যশোরের জেলা জজ আদালত, পুলিশ সুপারের কার্যালয়ও ইতিহাস ঐত্যিহের স্মারক। এগুলোও আমরা সংরক্ষণের দাবি করি। যে জাতির ইতিহাস নেই সে জাতি নিঃস্ব।
যশোর জেলাবাসী সমৃদ্ধ ইতিহাস ঐতিহ্যের অধিকারী। কিন্তু এসব ঐতিহ্যের স্মারকগুলো রক্ষার দায়িত্বে যারা তাদের অজ্ঞতা, অদূরদর্শীতা ও স্বার্থপ্রীতির কারণে একে একে ধংস্ব হয়ে যাচ্ছে। আমরা ভব্যিষত প্রজন্মের কথা চিন্তা করে, যশোরের ইতিহাস ঐতিহ্য সমুন্নত রাখতে ঐতিহাসিক এই ভবনগুলো সংস্কার করে সংরক্ষণের জোর দাবি জানাচ্ছি।