যশোর বেনাপোল পৌর ট্রাক টার্মিনালে অবৈধ চাঁদাবাজি : বছরে আদায় করছে প্রায় অতিরিক্ত  ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত খুলনা বিশেষ প্রতিবেদন সারাদেশ

# বেনাপোল বন্দরের পৌর ট্রাক টার্মিনালে ট্রাক রাখলেও টাকা আবার না রাখলেও টাকা # টাকা দিতে অস্বীকার করলেই চক্রের সদস্যরা ট্রাকের জানালার গ্লাস ভেঙে দিচ্ছে  #  মারপিটের শিকার হচ্ছে চালকেরা  # অবৈধ চাঁদাবাজিতে বছরে আদায় প্রায় অতিরিক্ত ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা #

বেনাপোল পৌর ট্রাক টার্মিনাল আছে ট্রাক নেই চলতিপথে-ই টাকার হিসাব নিকাশ, অনিয়ম ই এখানে নিয়ম।

 

 

বিশেষ প্রতিবেদক :  যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর পৌর ট্রাক টার্মিনাল ঘিরে চালকদের জিম্মি করে ব্যাপক চাঁদাবাজি শুরু হয়েছে। প্রভাবশালী চক্রের অবৈধ চাঁদাবাজির প্রতিবাদে বিগত দিনে স্থলবন্দর ব্যবহারকারী সংগঠনগুলো আন্দোলন করেছে। আবার জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে অভিযোগও করা হয়েছে। কিন্তু চক্রের সদস্যরা কোনোকিছুর তোয়াক্কা করছে না। তারা অবৈধভাবে বেশুমার চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছে। বছরে আদায় করছে প্রায় ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা।


বিজ্ঞাপন
সারিবদ্ধ ট্রাকে চলছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পেটুয়া বাহিনীর চাঁদাবাজি, প্রকাশ্যে গাড়ির গ্লাস ভাংচুর ও চালকদের মারপিটের ঘটনা যেনো নিত্যকার।

 

 

অভিযোগে জানা যায়, বন্দরের পৌর ট্রাক টার্মিনালে ট্রাক রাখলেও টাকা আবার না রাখলেও টাকা গুনতে হচ্ছে চালকদের। এ চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করলেই চক্রের সদস্যরা ট্রাকের জানালার গ্লাস ভেঙে দেয়াসহ চালকদের মারপিট করে।


বিজ্ঞাপন

চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি জানিয়ে সর্বশেষ গত ১৩ মার্চ ২০২২ সালে বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন যশোর জেলা (ঝিকরগাছা, শার্শা ও বেনাপোল বন্দর ব্যবহারকারী ট্রাক ট্যাংকলরি, ট্রাক্টর ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতি। যার অনুলিপি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, শার্শা আসনের এমপি শেখ আফিল উদ্দিন ও পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দফতরে পাঠানো হয়েছে।

বেনাপোল পৌর ট্রাক টার্মিনালের ইজারাদার এর পেটুয়া বাহিনীর সদস্যরা চাঁদা আদায় করেছে।

 

 

ওই সংগঠনের বেনাপোল কার্যালয়ের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন গাজী স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছিল, সরকার প্রতি বছর বেনাপোল বন্দরের মাধ্যমে সাড়ে ৫৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে থাকে। কিন্তু এই বন্দরের সুনাম ক্ষুন্ন করতে স্থানীয় ট্রাক মালিক সমিতি ও ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক সমিতিসহ অন্যান্য সংগঠনের সাথে আলোচনা না করে ২০২১ সালের ১৩ এপ্রিল থেকে টার্মিনালের নামে চাঁদা উটছে। যারা এর প্রতিবাদ করেছিল আজ তারাই কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী দিয়ে চাঁদা আদায় করছে। তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার কেউ নাই।

বেনাপোল পৌর ট্রাক টার্মিনালের অভ্যস্তরে ট্রাক রাখলেও টাকা আবার ট্রাক না রাখলেও টাকা, ট্রাক চালকদের মারপিট সহ গাড়ির গ্লাস ভাংচুর ও করে ইজারাদার এর পেটুয়া বাহিনীর সদস্যরা।

 

স্থানীয় ৮/১০ জন চিহ্নিত একাধিক মামলার আসামি সন্ত্রাসী পৌরসভার নামে বেনাপোল বাইপাস সড়কে ট্রাক চালক ও হেলপারকে লাঠিসোঠার ভয় দেখিয়ে বেনাপোল ট্রাক টার্মিনালে প্রবেশ করাতে বাধ্য করছে। এরপর তাৎক্ষণিক ট্রাক বের করে দিয়ে ট্রাক প্রতি ১শ’ টাকা করে চাঁদা আদায় করছে। সেই হিসেবে প্রতিদিন ১০০০টি ট্রাক চালককে জিম্মি করে ১০০০০০ (এক লাখ) হাজার টাকা চাঁদা আদায় করছে দুর্বৃত্তরা। মাসে আদায় ৩০ লাখ । এ হিসেবে বছরে অবৈধ আদায় ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা। অথচ ইজারা মাত্র ৫০-৬০ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে করা অভিযোগের কপি। অভিযোগ করেও কোন প্রকার প্রতিকার পাচ্ছে না অভিযোগকারীরা একই ঘটনার বারংবার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে।

 

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, যশোর জেলা ট্রাক ট্যাংকলরি ট্রাক্টর ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতি বন্দর হতে ট্রাকে পণ্য লোডের সময় ট্রাক টার্মিনাল ফি বন্দরের চার্জের সাথে ট্রাক প্রতি একশ’ চুয়াল্লিশ টাকা সত্তর পয়সা, প্রতি ট্রাকের আনলোড ফি ১৪৫ টাকা হারে এবং প্রতি বছর টোকেন ফি বাবদ ৪৮ হাজার টাকা সরকারি তহবিলে জমা হয়। এরপরেও কেনো বেনাপোল ট্রাক টার্মিনালের নামে মোটা অংকের টাকা চাঁদাবাজি করা হচ্ছে, এ প্রশ্ন উঠেছে ট্রাক চালক ও মালিকদের মাঝে।

নিয়মবহির্ভূতভাবে ট্রাক চালকদের কাছ থেকে টাকা নেয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না।
স্হানীয় প্রশাসন কোন ব্যবস্হা নেয় না। এই পৌর ট্রাক টার্মিনালের অবৈধ চাঁদা আদায়ের সাথে বেনাপোল শ্রমিক ইউনিয়ন ও অবৈধভাবে জোর পূর্বক ১০০ টাকা নিচ্ছে।

অনেক শ্রমিকের অভিযোগ প্রশাসনের কিছু অসাধু ব্যক্তি এই চাঁদায় ভাগ পায় বলে স্হানীয় প্রশাসন এটি কখননো বন্ধ করে না। গত বছর ও যার নামে ইজারা হয়েছিল এ বছর ও তার নামে ইজারা হয়েছে।

এখন ইজারায় বলা আছে ট্রাক টার্মিনালে রাখলে ৫০ টাকা  নিবে আর ইজারাদার সন্ত্রাসীদের দিয়ে জোর পূর্বক আদালতের নির্দেশ অমান্য করে মহাসড়ক থেকে দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে একপ্রকার ছিনতাই এর স্টাইলে  ১০০ টাকা তুলছে। এই ইজারাদারদের ভয়ে কেউ কিছু বলার সাহস রাখে নাহ্।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *