তদন্তে অভিযোগ প্রমানিত হলেও ঠিকাদানকে বিল পরিশোধ  :  প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রকল্প পরিচালক ডা: মকবুল হোসেন কি আইনের উর্ধ্বে?

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী

বিশেষ প্রতিবেদক :  প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অধীনে বাস্তবায়নাধীন “জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় পাবলিক হেলথ সার্ভিস জোরদারকরন (১ম সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্পে সুনিদিষ্ট অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিগত ১২/১১/২৩ ইং তারিখে ৩৩.০০.০০০০.১৪২.১৪.০০৮.২২.৫৫ সংখ্যক পত্রে মন্ত্রণালয়ের যুগ্ন সচিব শাহীনা ফেরদৌসিকে সভাপতি , মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব মাহমুদাকে সদস্য এবং বিসিএস লাইভস্টক একাডেমীর পরিচালক মো: শাহজামান খানকে সদস্য সচিব করে ৩ সদস্য বিশিষ্ঠ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত কমিটি অভিযোগে উল্লেখিত মোট ১১টি অভিযোগের উপর ভিত্তি করে বিগত ১৭/১০/২০২৩ ইং তারিখে প্রথম তদন্ত কাজ শুরু করে। উক্ত তদন্ত কাজে সাবক্ষনিক সহযোগিতা করেন প্রকল্প পরিচালক ডা: মো: মকবুল হোসেন।


বিজ্ঞাপন

অভিযোগের মধ্যে অন্যতম ছিল (ক) প্রকল্পের ভেটিরিনারী পাবলিক হেলথ এন্ড মাইক্রোবায়োলজি ল্যবরেটরী ভবন নিম্মানে অনিয়ম। (খ) ল্যাবরেটরী যন্ত্রপাতি সরবরাহে অনিয়ম বা দূনীতি(চায়না মালের উপর স্টিকার লাগিয়ে ইউরোপীয় বলে চালিয়ে দেয়া) ।(গ) ল্যাবরেটরী ভবনে নুতনভাবে সভাকক্ষ নিম্মান এবং ল্যাবের যন্ত্রপাতি, গ্লাসওয়ার , রিয়েজেন্ট ও তৈজষপত্র ক্রয় না করে বিল পরিশোধ করা। (ঘ) ডিপিপির বত্যয় ঘটিয়ে ৪র্থ ও ৫ম তলার ল্যাব সমূহে ল্যাব ফানিচারের পরিবর্তে আর সিসি স্ট্রাকচার নিম্মান করা,(ঙ)স্ট্রাকচার ও ইউটিলিটি সংযোগ নিশ্চিত না করে কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি ক্রয় ও সরবরাহ গ্রহন করায় যন্ত্রপাতিগুলি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে যাওয়া অন্যতম।


বিজ্ঞাপন

মোট ১২টি অভিযোগের মধ্যে ২টি ছাড়া বাকী সবগুলি সন্দেহতাতীতভাবে প্রমানিত হয়ে মর্মে তদন্ত কমিটি বিগত ৯/১/২০২৪ ইং তারিখে ৩৩.০০.০০০০.১০৯.২৭.০১০.২২.০৬ সংখ্যক পত্রে সচিব বরাবরে প্রমানাদির স্বপক্ষে যাবতীয় ডকুমেন্ট সহ সচিব বরাবরে তদন্ত প্রতিবেদন জমা প্রদান করে।যা প্রকল্প পরিচালক ডা: মো: মকবুল হোসেন সমাক্ষ অবহিত।
বিষয়টি প্রকল্প পরিচালক স্বচক্ষে দেখা এবং জানার পরেও মন্ত্রণালয়ের কোন প্রকার অনুমোদন /সম্মতি ব্যতিরেকে নিম্মান ঠিকাদারের প্রায় ৪ কোটি টাকার এবং যন্ত্রপাতি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান “ বাংলাদেশ সায়েন্স হাউস”-কে ১২ কোটি টাকার বিল পরিশোধ করেছে।বর্তমানে অধিকাংশ যন্ত্রপাতিই ব্যবহারের /সংযোজনের আগেই নষ্ঠ হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ সায়েন্স হাউস চায়নার যন্ত্রপাতিকে ইউরোপীয় স্টিকার লাগিয়ে সরবরাহ দিয়ে বিল উত্তোলন করলেও উক্ত প্রতিষ্ঠানকে কোন প্রকার শো-কেইচ পর্যন্ত করা হয়নি।

অন্যদিকে নিম্মান ঠিকাদার মেসাস মাস্তুরা এন্টার প্রাইজ ল্যাবরেটরীর ভবনের ১ম তলায় স্যাম্পল কালেকশন ও সংরক্ষন কক্ষ, পোষ্ট মোটেম কক্ষ, জেনারেল কন্ফারেন্স কাম প্রশিক্ষন কক্ষ সমূহে প্রয়োজনীয় সুবিধা সংযোজন না করেই বিল গ্রহন করলেও পিডি তাদের কোন ব্যাখা তলব করেন নি।একইভাবে ঐ সময়ে ২য় তলায় প্রশাসনিক কমপ্লেক্স্রের জন্য ফানিচার স্থাপন এবং লজিস্টিক সরবরাহ সহ সজ্জিত করনের কাজ সম্পন্ন না হলেও পিডি মোটা অংকের আর্থিক সুবিধা নিয়ে তাদের বিল পরিশোধ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।।

তথ্যমতে নির্¤§ান ঠিকাদার ও যন্ত্রপাতি সরবরাহকারী ঠিকাদার তাদের অনিয়মের ও দূনীতির কথাটি তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে জানতে পেরেই পিডিকে আর্থিক সুবিধা দিয়ে বিলের টাকা উঠাইয়া নিয়েছে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।সাভারে সরোজমিনে যাচাইকালে জানা যায় জেনারেটর চুরি হলেও পিডি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেনি।এছাড়া সাবস্টেশন বসানোর পরে জেনারেটর দরকার না হলেও ২টি জেনারেটরের বিল পরিশোধ করা হয়েছে। এছাড়া অদ্য পর্যন্ত কোন যন্ত্রপাতি স্থাপন/সংযোজন করা হয়নি।শীতাতাপ যন্ত্র নির্¤§ান ঠিকাদার দেয়া কথা থাকলেও পুনরায় সরাসরি ক্রয় দেখান হয়েছে ।

প্রায় ২ কোটির টাকার উপর ক্রয়কৃত ও সংযোজনকৃত পানি শোধনের মেশিনটিও ব্যবহারের আগেই অচল হয়ে পড়ে আছে। নিদিষ্ঠ সময়ের মধ্যে ঠিকাদার কাজ শেষ না করলেও তাদের বিরুদ্ধে বর্তমান পিডি কোন ব্যবস্থা নেন নি। সর্বপরি আলোচ্য ল্যাবটি বিএসএল-+২ ল্যাব হিসাবে কাগজে কলমে দেখালেও বাস্তবে বিএসএল-+১ এর সুবিধাও নেই।
এ সকল অভিযোগের বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহা পরিচালক ডা: মোহাম্মদ রেয়াজুল হকের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান তদন্তের বিষয়টি তিনি শুনেছেন কিন্তু মন্ত্রণালয় কি ব্যবস্থা নিয়েছেন সে বিষয়ে তিনি অবহিত নন। আর পিডি অনিয়মতান্ত্রিকভাবে বিল পরিশোধ করলে তার দায়ভার পিডিই নিবেন।

দাখিলকৃত তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে সে বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের সচিবের নিকট জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান বিষয়টি তার নৌটিশে নেই। তবে তিনি দেখবেন এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিবেন।পিডি ডা: মো: মকবুল হোসেনের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেন নি। অধিদপ্তরের সিনিয়র পর্য্যায়ের একাধিক কর্মকর্তা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষনের পরামর্শ দেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *