নাজুক অবস্থায় সাতক্ষীরা জেলা বিএনপি! 

Uncategorized গ্রাম বাংলার খবর জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজনীতি সারাদেশ

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : ৫ই আগষ্ট স্বৈরাচার হাসিনার পতনের পরে সাতক্ষীরা জেলা বিএনপি নেতাদের আচরণ এমন হয়েছে যে,তারা মনে করছে -বিএনপি সরকার গঠন করে ফেলেছে। বিশেষ করে স্কুল কলেজ, সরকারী প্রতিষ্ঠান সমূহে এবং বিভিন্ন হাট-বাজার, বাস-ট্রাক স্টান্ড, মাছের ঘের, ইটভাটা,প্রেস ক্লাব, কোর্ট-কাছারী ইত্যাদি। আর এ সকল দখল বাণিজ্য ও জ্বালাও পোড়াও সংঘটিত হয়েছে সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি , বর্তমানে দল থেকে বহিস্কৃত নেতা মো: আব্দুর রউফ ও জেলা বিএনপির সমন্বয়ক মো: হাবিবুর রহমান হবি এবং তাদের বড় ভাই আওয়ামী লীগ নেতা মো: আব্দুস সবুর ও সবুরের বখে যাওয়া ছেলে সাইদের প্রত্যক্ষ নেতৃত্বে। এদের সংগে পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করছে জেলা বিএনপির আহবায়ক সৈয়দ ইফতেখার আহম্মদ, সদস্য সচিব মো: আব্দল আলিম ও তার ছেলে হাসান (মাছের ঘের দখল কারী)।


বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য যে, সাতক্ষীরা জেলার সদরের আলিপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মো: আব্দুস সবুর (বড়),মো: আব্দুর রউফ ( মেঝ), মো: হাবিবুর রহমান হবি (সেজো) এবং ছোট চেয়ারম্যান (সকলের ছোট) এরা ৪ ভাই। এর মধ্যে সবুর আওয়ামী লীগ নেতা, বিগত ১৬ বসরে এমন কোন খারাপ কাজ নেই (জমি দখল, ঘের দখল, পরের জমি জোর করে লিখে নেয়া, অনৈতিক ব্যবসা ইত্যাদি) যা সে করে নাই।


বিজ্ঞাপন

এই ১৬ বসরে সবুর প্রায় শত কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছে যা তদন্ত করলে প্রমানিত হবে। পরের জন মো: আব্দুর রউফ এলাকার মূর্তিমান আতংক।তার নিজস্ব একটি লাঠিয়াল বাহিনী রয়েছে যা এলাকার সকলেই জানে। রউফ জেলা বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি (বর্তমানে বর্হিস্কৃত)। ৫ই আগষ্ঠের পরেই তার সমার্থিত বিএনপির ও নিজস্ব লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে (জেলা বিএনপির সমন্বয়ক ছোট ভাই হবির সহযোগিতায়) বাস ও ট্রাক স্টান্ড দখল করে নেয়। থানা লুটপাট, বিভিন্ন বাড়ীঘর জ্বালাও পোড়াও , গাড়ী পোড়ানোসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তাদের দখল দারিত্ব কায়েম করে।

সেজো ভাই-জেলা বিএনপির সমন্বয়ক হাবিবুর রহমান হবি বড় ভাই সবুরকে সাথে নিয়ে সদর বিএনপির নেতৃবৃন্দ সহ ভোমরা স্থল বন্দরের সিএন্ড এফ অফিস সহ বন্দরের দখল নিয়ে নেয় এবং বড়ভাই (আওয়ামী নেতা) সবুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মিটিং এ নিজেকে সিএন্ড এফ এজেন্ট এর আহবায়ক ঘোষনা করে ৫ সদস্য বিশিষ্ঠ আহবায়ক কমিটি গঠন করে চাঁদাবাজি শুরু করে।

জনশ্রুতি আছে প্রতিদিন বন্দর থেকে প্রায় ১ থেকে ১.৫ লক্ষ টাকা চাঁদা তুলে ৫০% জেলা বিএনপির আহবায়ক সৈয়দ ইফতেখারের অফিসে বসে ভাগাভাগি করে আর বাকী ৫০% হতে প্রশাসনকে কিছু দিয়ে নিজে আতœসাৎ করে। হবির বড় ভাই সবুরের বড় ছেলে বিএনপির নেতারা সহ সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব দখল করে নিজেকে আহবায়ক ঘোষনা দিয়ে একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করে।

অন্যদিকে জেলা বিএনপির আহবায়ক ইফতেখার আহম্মদ সাতক্ষীরা বারের সাবেক পিপি ছিল। সে কোর্টে নুতন এপিপি/পিপি/জিপি নিয়োগ দেয়ার জন্য তালিকা তৈরী করেছে এবং সেখানে প্রত্যেকের নিকট হতে মোটা অংকের আর্থিক সুবিধা নিয়েছে বলেও অনেকে অভিযোগ করেছে। এছাড়া ৭টি উপজেলায় বিভিন্ন পর্য্যয়ের নেতা/কর্মীদের মাধ্যমে মামলা করেছে এবং মামলার ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ে লিপ্ত আছে।

বিএনপি নেতাদের এহেন কার্য্যকলাপে সাধারন মানুষের মনে বিএনপির প্রতি বিতশ্রদ্ধা দেখা দিয়েছে এবং অনেকে বিএনপির রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছে, যা বিএনপির জন্য ক্ষতিকারক। অন্যদিকে বিগত ১৬ বসরে সাতক্ষীরা জেলার রাজনীতিতে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ জামায়াত -শিবির কোন প্রকার সহিংসতায় না যেয়ে তারা দল গোছানোর কাজে নিজেদের নিয়োজিত রেখেছে। ৫ই আগষ্টের পরে বিভিন্ন মন্দির, প্যাগোডো, রাতে হিন্দুদের বাড়ী-ঘর পাহারায় নিজেদের নিয়োজিত রেখে জামায়াত-শিবির সকলের প্রশংসা কুড়িয়েছে। অনেক হিন্দুদের বলতে শোনা গেছে, পরবর্তীতে ভোট হলে তারা জামায়াতের প্রার্থীকেই ভোট দিবে।

স্থানীয়দের দাবী, বিএনপি নেতারা যদি এ সকল অবৈধ কাজ থেকে নিজেদের সরিয়ে না নেয় এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা না নেয় তাহলে পরবর্তী ভোটের সময় এর প্রভাব পড়বে এবং এ জন্য দলটিকে অনেক মূল্য দিতে হবে। স্থানীয় জনসাধারন এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *