নিজস্ব প্রতিবেদক : যানজটের কারণে দৈনিক ৫০ লাখ কর্মঘণ্টার অপচয় ঘটছে যার আর্থিক ক্ষতি বছরে প্রায় ৩৭ হাজার কোটি টাকা। হাঁটার গতির মতো ঘণ্টায় প্রায় পাঁচ কিলোমিটার নেমে এসেছে যানবাহনের গতি। রোববার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে দ্য ফিউচার প্ল্যানিং অব আর্বান ট্রান্সপোর্টেশন ইন ঢাকা শীর্ষক এক গবেষণাপত্রে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। ঢাকা শহরে প্রতি স্কয়ার কিলোমিটারের ৪ লাখ ৪৫ হাজার মানুষ বসবাস করেন বলে উল্লেখ করা হয় গবেষণায়। এটি পৃথিবীতে সর্বাধিক সংখ্যক মানুষের বসবাস কোন শহরে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, এটি ভয়ঙ্কর সমস্যা। চার বছর আগে যে রাস্তা কাটা হয়েছে তার কাজ এখনো শেষ হচ্ছে না। এসব সমস্যার কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রায়শ আমরা বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করি কিন্তু সেটি বাস্তবায়ন খুবই কম এবং এটি খুবই দুর্বল ব্যবস্থা। সামনে আরো নানান সমস্যা আসছে কিন্তু যানজট কতটুকু কমানো সম্ভব হবে সেটি নিয়ে শঙ্কা থেকে যাচ্ছে আমার।
গবেষণায় আরো উল্লেখ করা হয়, গত ৪৮ বছরে ঢাকা শহরে ৩৪৫ স্কয়ার কিলোমিটার এলাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। আর বৃদ্ধি পেয়েছে ভাসমান মানুষের সংখ্যা ২৮ মিলিয়নেরও বেশি। বর্তমানে বৃহত্তর ঢাকার গাজীপুর, সাভার, নারায়ণগঞ্জ মানিকগঞ্জে ২০ মিলিয়ন লোকের বসবাস রয়েছে। সব কারণে রাজধানী ঢাকায় মানুষের চাপ বাড়ছে এবং যানজট বৃদ্ধি পাচ্ছে।
অন্যদিকে বর্তমানে নতুন যানবাহন যুক্ত হচ্ছে কিন্তু সড়কের বেহাল দশায় ও সংখ্যা থেকে যাচ্ছে সেই আগের মতই। চলমান পরিস্থিতি উত্তরণের যেসকল পরিকল্পনা বা সুপারিশ গৃহীত হচ্ছে তার বেশির ভাগই স্বল্পমেয়াদী। সমন্বিত পরিকল্পনা উল্লেখযোগ্য ভাবে দৃশ্যমান নয়।সারাদেশের যাত্রী বান্ধব গণপরিবহন ব্যবস্থা কার্যকরভাবে গড়ে তুলতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে যাত্রীসেবার মান তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। বেড়েছে দুর্ঘটনা।
অনুষ্ঠানে যত্রতত্র বাসে যাত্রী উঠানামা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার সমালোচনা করেন বক্তারা। বক্তব্যে উঠে আসে মানহীন গণপরিবহন সমস্যার বিষয়টিও।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আরবান হ্যাবিট্যাট কনসালট্যান্টস-এর চেয়ারম্যান স্থপতি-পরিকল্পনাবিদ তানউইর নেওয়াজ। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ এর নির্বাহী পরিচালক জনাব খন্দকার রকিবুর রহমান, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কন্ট্রাস্ট ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি প্রকৌশলী খোরশেদ আলমসহ আরও অনেকে।