জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা ছাত্র ইউনিয়নের সমাবেশ ও কাউন্সিল অধিবেশনে দুর্বৃত্তদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় তারাকান্দি পোগলদিঘা ডিগ্রী কলেজ ক্যাম্পাসের অডিটরিয়ামে অধিবেশন শুরু হলে একদল দুর্বৃত্ত লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় । এতে অধিবেশনটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় ।
এরপর হামলাকারীরা ছাত্র ইউনিয়নের নেতা-কর্মীদের কলেজ ক্যাম্পাসের ভিতরে লাঠি-সোঁটা দিয়ে ৩০/৪০ জনকে মারধর করেন । তথ্য সংগ্রহ করার সময় ডেইলি স্টারের সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম নীরবকেও মারধুর করে গুরুত্বর আহত করে হামলাকারীরা ৷
এদিকে বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে হামলাকারীরা সাংবাদিক নীরবের মোটর সাইকেল সহ ৪ টি মোটর সাইকেল নিয়ে যায় । শনিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুর ১২ টায় সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মো: চাঁদ মিয়া জানান, এই বিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কথা হলে জামালপুর কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক মারুফ আহমেদ মানিক জানান, ছাত্র ইউনিয়নের সমাবেশে অতর্কিত ভাবে হামলা চালানো হয়েছে৷ সে হামলায় সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিক সহ অনেকেই আহত হয়েছে। ছাত্র ইউনিয়নের ইতিহাস সংগ্রামের ইতিহাস ৷ ছাত্র ইউনিয়নের সমাবেশে হামলা করে প্রমাণ করল ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার মতো করে আগামীর বাংলাদেশ দেখতে চায়। অতি দ্রুত হামলা কারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবী জানাই।
এ বিষয়ে সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম বলেন, ছাত্র ইউনিয়নের অধিবেশনের সংবাদ কাভার করার জন্যে দাওয়াত দেয় আমাকে । সংবাদ সংগ্রহের জন্যে আমি ওই কলেজের অডিটরিয়ামে যাচ্ছিলাম। এ সময় রাস্তায় লোকজনকে ছুটাছুটি করতে দেখি। কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই হামলাকারীরা আমাকেও মারধর করতে শুরু করে । আমি সংবাদকর্মী পরিচয় দেওয়ার পরও লাঠি দিয়ে আমার মাথায় ও সারা শরীরে আঘাত করে। পরে আমার মোটরসাইকেলটিও তারা নিয়ে যান ।
জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রেদোয়ান খন্দকার মাহিন বলেন, ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকার পতনের পর অনেক ছাত্র-ছাত্রী ছাত্র ইউনিয়নের দিকে ঝুঁকেছে । এর অংশ হিসেবে উপজেলা ছাত্র ইউনিয়নের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয় । শিক্ষার্থীদের জমায়েত দেখে এটিকে ছাত্রলীগের অনুষ্ঠান মনে করে একদল দুষ্কৃতিকারী অতর্কিত হামলা করে । হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি করেন তারা।
আহত যুব ইউনিয়ন নেতা মাহবুব জামান জুয়েল বলেন, সমাবেশ এবং কাউন্সিল অধিবেশনে বিকাল থেকেই ছাত্র-ছাত্রীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশে আসতে শুরু করে । সন্ধ্যায় কাউন্সিল অধিবেশন শুরুর পরপরই স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা অতর্কিত এবং কোন কারন ছাড়াই হামলা করে । এই হামলায় আনুমানিক প্রায় এক দেড়শ বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মী অংশ নেয় । আমি এই হামলায় আহত হই এবং আমার গাড়ীসহ বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে। হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেন এই যুব নেতা।
তবে এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দৈনিক মানব জমিন পত্রিকার সরিষাবাড়ী প্রতিনিধি এম এ রউফ জানান, সাংবাদিক কোন দলের নয়,কারোর পক্ষের নয় । নীরবের ওপর হামলার ঘটনায় দৃষ্ঠান্ত মুলক শাস্তি হোক এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
এদিকে সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: রবিউল ইসলাম জানান, সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম নীরব ভাই আঘাত প্রাপ্ত হয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় এসেছেন। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ৷ তিনি মোটামুটি এখন সুস্থ আছেন৷