নিজস্ব প্রতিনিধি (পঞ্চগড়) : পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের মোমিনপাড়া সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশে গরু পাচারের সময় ভারতের অভ্যন্তরে শিংপাড়া নামক স্থানে বিএসএফের গুলিতে আনোয়ার হোসেন (৪০) নামের এক বাংলাদেশী নাগরিক নিহত হয়েছে।
উক্ত বাংলাদেশী নাগরিক নিহত হওয়ার ঘটনায় বিএসএফের নিকট জোরালো প্রতিবাদ ও তীব্র নিন্দা জানিয়ে প্রতিবাদলিপি প্রেরণ করেছে বিজিবি। একইসাথে বিজিবি-বিএসএফ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক ও আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করতঃ নিহতের লাশ ফেরত এনে পরিবারের নিকট হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
আজ শুক্রবার ৬ ডিসেম্বর, আনুমানিক সকাল সাড়ে ৫ টার সময় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবির নীলফামারী ব্যাটালিয়ন (৫৬ বিজিবি) এর অধীনস্থ ঘাগড়া বিওপির ০২টি টহলদল দায়িত্বপূর্ণ পঞ্চগড় সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী মোমিনপাড়া এলাকায় নিয়মিত টহল পরিচালনাকালীন সীমান্ত পিলার ৭৫১/৮-এস এবং ৯-এস এর মধ্যবর্তী শূন্যলাইন হতে আনুমানিক ১৫ গজ ভারতের সীমান্ত অভ্যন্তরে শিংপাড়া নামক স্থানে প্রতিপক্ষ ৯৩ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের চানাকিয়া ক্যাম্পের দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় ০৩/০৪ রাউন্ড ফায়ারের শব্দ শুনতে পায়। প্রতি উত্তরে বিজিবি টহলদল তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলের বিপরীতে সীমান্ত শূন্যলাইন হতে প্রায় ৫০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মোমিনপাড়া নামক জায়গায় কয়েক রাউন্ড সতর্কতামূলক ফায়ার করে।
বিএসএফ সূত্রে জানা যায়, আজ শুক্রবার ৬ ডিসেম্বর, আনুমানিক ৫ টা ২৫ মিনিটের সময় চানাকিয়া বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা দায়িত্বরত অবস্থায় দেখতে পায় সীমান্তের শূন্যলাইন থেকে আনুমানিক ১০০ গজ ভারতের অভ্যন্তরে কতিপয় ভারতীয় ও বাংলাদেশী চোরাকারবারী যোগসাজশ করে সীমান্ত দিয়ে গরু পাচারের চেষ্টা করছে। এ সময় বিএসএফ তাদেরকে বাধা প্রদান করলে চোরাকারবারীরা আক্রমণাত্মক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় এবং বিএসএফ জওয়ানদের ওপর হামলা চালায়।
এ প্রেক্ষিতে বিএসএফ সদস্যরা প্রথমে সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে তাদেরকে নিবৃত করার চেষ্টা করে। পরে ০৩/০৪ রাউন্ড ফায়ার করে। উক্ত ফায়ারে একজন চোরাকারবারী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়।
বিএসএফ আরো জানায়, ঘটনাস্থলে চোরাকারবারিদের কাছ থেকে ০২টি ভারতীয় গরু আটক করা হয়েছে। এসময় বিজিবির ঘাগড়া বিওপির টহলদলও ঘটনাস্থলের বিপরীতে মোমিনপাড়া সীমান্ত থেকে চোরাচালানের একটি গরু আটক করতে সক্ষম হয়। নিহত ব্যক্তি পঞ্চগড়ের তেতুঁলিয়া উপজেলার দেবনগরের রফিকুল ইসলামের ছেলে মোঃ আনোয়ার হোসেন (৪০) বলে জানা যায়।
এ ব্যাপারে বিজিবির নীলফামারী ব্যাটালিয়ন (৫৬ বিজিবি) জানায়, সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধ, চোরাচালান দমন এবং সীমান্ত হত্যা বন্ধে বিজিবির টহল কার্যক্রম ও গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
পাশাপাশি অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপার রোধে সীমান্তবর্তী জনসাধারণ, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে নিয়মিতভাবে মতবিনিময় সভা ও বিভিন্ন ধরনের জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বিজিবি।