নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও চারজন আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন চিকিৎসক রয়েছেন। ফলে ভাইরাসটিতে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৮ জনে। তবে নতুন করে কারও মৃত্যু হয়নি ।
শুক্রবার বেলা ১১টায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা করোনাভাইরাস সংক্রান্ত অনলাইন লাইভ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ৩২১টি কল পেয়েছে আইইডিসিআর। এছাড়া নতুন করে ১০৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। সবমিলিয়ে ১০২৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
ডা. ফ্লোরা বলেন, নতুন আক্রান্তদের মধ্যে একজন আগে থেকে চিহ্নিত ছিলেন। এছাড়া বাকিদের প্রথম কোথা থেকে ছড়িয়েছে, তা এখনও পুরোপুরিভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আমরা তথ্য অনুসন্ধান চালাচ্ছি। এছাড়া এই ৪ জনের মধ্যে একজনের বয়স ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। অরেকজনের ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে একজন। আবার ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে আরেকজন।
তিনি বলেন, এই চারজনের মধ্যে দুইজন চিকিৎসক রয়েছেন। যারা করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিয়েছিলেন। এছাড়া চরজনের মধ্যে দুইজন ঢাকার বাইরে। আর দুইজন ঢাকার মধ্যে অবস্থান করছেন। আবার চারজনের মধ্যে দুইজনের দীর্ঘমেয়াদি রোগ আছে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে ৪ জনই এখন শারীরিকভাবে স্বাভাবিক রয়েছেন। তাদের মধ্যে কোনো রকমের জটিলতা নেই। এছাড়া আমাদের আগের যারা করোনা আক্রান্ত, তাদের পরিস্থিতিও স্বাভাবিক রয়েছে। তাদের মধ্যেও কোনো ধরনের জটিলতা নেই।
এদিকে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস বিশ্বের ২০০ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাস বিশ্বজুড়ে ৫ লাখ ৩১ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে সাড়ে ২৪ হাজার জনের। তবে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে এক লাখ ২২ হাজার মানুষ।
সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছে ইতালিতে। দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ৮২১১। এরপর স্পেনে মারা গেছে ৪৩৬৫ জন। চীনে মারা গেছে ৩২৯১ জন। এ ছাড়া ইরানে মারা গেছে ২২৩৪ জন। ফ্রান্সে মৃতের সংখ্যা ১৬৯৮। যুক্তরাষ্ট্রে মারা গেছে ১২৯৬ জন মানুষ।
গত আড়াই মাসের বেশি সময় ধরে মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যায় এগিয়ে ছিল চীন। দেশটিতে সংক্রমণ থেমে যাওয়ায় ভাইরাসটির নতুন কেন্দ্র হয়ে দাঁড়ায় ইউরোপ। ফলে গত কয়েক দিনে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যায় চীনকে ছাড়িয়ে গেছে ইতালি ও স্পেন।
এদিকে আক্রান্তের সংখ্যায় সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে ৮৫ হাজার ৬৫৩ জন মানুষের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এরপর ইতালিতে আক্রান্ত হয়েছে ৮১ হাজার ৭৮২ জন। স্পেনে ৫৭ হাজার ৭৮৬ জন মানুষকে আক্রান্ত হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকলেও ইউরোপে আক্রান্তের কমে এসেছে। তবে আমেরিকায় সে সংখ্যা বাড়ছে। তাই অঞ্চলটি করোনার নতুন উপকেন্দ্র হয়ে ওঠার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।