মো:রফিকুল ইসলাম,(নড়াইল) : নড়াইলের লোহাগড়ায় রিপোর্টার্স ইউনিটি’র অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা দায়েরের অভিযোগ উঠেছে একই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এস এম আলমগীর কবিরের বিরুদ্ধে।

গত মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) নড়াইল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন তিনি। অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি’র) ওসিকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

মামলায় আসামি করা হয়েছে,লোহাগড়া রিপোর্টার্স ইউনিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক মানবকণ্ঠের লোহাগড়া উপজেলা প্রতিনিধি শ ম কামাল হোসেন এবং মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও দৈনিক সকালের সময়ের স্টাফ রিপোর্টার রিয়া শারমিনকে।

মামলার বিবরনে বাদী উল্লেখ করেছেন, বাদী লোহাগড়া রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক। আসামী’রা প্রায়ই বাদীর অফিসে আসা-যাওয়া করতো। গত ১৫ মার্চ ঘটনার দিন সন্ধ্যায় আসামি’রা বাদীর অফিসে আসেন। এ সময় অফিসে কেউ না থাকার সুযোগে অফিসে থাকা দুটি ল্যাপটপ,দুটি ক্যামেরা, একটি টেলিভিশন,নগদ টাকা,মালামাল ও মূল্যবান ফাইলপত্র চুরি করে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে মামলার আসামি দৈনিক মানবকন্ঠের সাংবাদিক শ, ম কামাল হোসেন বলেন,মামলার বাদী এস এম আলমগীর কবির এলাকায় থাকেন না। তিনি ঢাকায় থাকেন। কয়েক মাস পর এসে বিভিন্ন অফিস থেকে আমাদের কে দিয়ে চাঁদা উঠিয়ে নিয়ে চলে যান।
এছাড়া তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি’র সহ সাংগঠনিক সম্পাদক। গত ৫ আগস্টের পর অফিসের ব্যবহৃত কম্পিউটারটি গোপনে এসে নিয়ে চলে যান। আমরা অফিসে গিয়ে কম্পিউটার দেখতে না পেয়ে তাকে ফোন করি।
তিনি আমাকে মুঠোফোনে জানান, কম্পিউটার হয়তো অফিসের পিয়ন জনি নিয়ে গেছে। সে ছাড়া আর কম্পিউটার কে নিবে। বাদীর সাথে ওইদিনের কথোপকথনের অডিও রেকর্ড আমার সংরক্ষণে আছে। তিনি এলাকায় না থেকে এবং সংগঠনের কোন দায়িত্ব পালন না করেও কর্তৃত্ব দেখাতে চান।
যা নিয়ে তার সাথে আমাদের দুই সাংবাদিকের দীর্ঘদিন ধরে অভ্যন্তরীণ সাংগঠনিক দ্বন্দ্ব চলছিল। এরই জের ধরে ক্ষিপ্ত হয়ে এবং কম্পিউটার চুরির দায় এড়াতে উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলা আসামি করা রিপোর্টার্স ইউনিটি’র মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও দৈনিক সকালের সময়ের স্টাফ রিপোর্টার রিয়া শারমিন জানান,আমার মত মহিলা সদস্য রিপোর্টার্স ইউনিটে ৪-৫ জন ছিলো,তার কথা সুনলে তারা ভালো,যে তার কথায় রাজি হয় না,তাকে অফিস থেকে বের করে দেয়।
এস এম আলমগীর কবির আমাকে কু-প্রস্তাবসহ ভারতে যেতে বলে,আমি তার এমন অনৈতিক কাজে রাজি না হওয়ায়,আমার সাথে ঝগড়া হয় এবং আমি ৫-৬ মাস অফিসে যায় না,সেই সাথে অফিসের কারো সাথে আমি যোগাযোগ রাখিনা। এস এম আলমগীর কবিরের বিরুদ্ধে লোহাগড়া উপজেলায় একাধীক নারী কেলেংকারী রয়েছে এবং জেল হাজতও খেটেছে এবং সাংবাদিকদের সাথে কথা কাটা-কাটি হলেই তার নামে মামলা করে হয়রানি করে।
আমরা আইনের প্রতি ছ্রোদ্ধাশীল,আইনের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে প্রশাসনের কাছে মামলাবাজ সাংবাদিকের শাস্তি দাবি করে ওই দুই সাংবাদিক। নড়াইল জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ডিবি’র (ওসি) সাহাদারা খান জানান,এখনও আদালতের আদেশের কপি হাতে পাইনি। পেলে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। এদিকে,কথিত সাংবাদিকের মিথ্যা মামলা করার প্রতিবাদে নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, লোহাগড়া উপজেলার স্থানীয় সংবাদকর্মীরা।