হুয়াওয়ে ‘সিডস ফর দ্য ফিউচার ২০২৫ বাংলাদেশ’-এর নিবন্ধন শুরু

Uncategorized অর্থনীতি কর্পোরেট সংবাদ জাতীয় ঢাকা বানিজ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী

নিজস্ব প্রতিবেদক  :  শিক্ষার্থীদের জ্ঞান বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশের আইসিটি খাতের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে হুয়াওয়ে আবারও উদ্বোধন করেছে ’সিডস ফর দ্য ফিউচার’ প্রতিযোগিতা। স্নাতক পর্যায়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা এই প্রোগ্রামে অংশ নিতে পারবে।


বিজ্ঞাপন

এই বছর প্রতিযোগিতাটির বাংলাদেশ রাউন্ডের চ্যাম্পিয়ন পুরস্কার হিসেবে পাবে হুয়াওয়ে মেটবুক। এছাড়া প্রথম রানার-আপ এবং দ্বিতীয় রানার-আপের জন্য থাকছে যথাক্রমে হুয়াওয়ে প্যাড এবং হুয়াওয়ে স্মার্ট ওয়াচ। এর পাশাপাশি বাংলাদেশ রাউন্ডের সেরা ৮ শিক্ষার্থী টেকফরগুড প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য চীন ভ্রমণের সুযোগ পাবে।


বিজ্ঞাপন

আজ হুয়াওয়ে বাংলাদেশ একাডেমিতে ‘সিডস ফর দ্য ফিউচার ২০২৫ বাংলাদেশ’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নিবন্ধন শুরুর ঘোষণা দেয়া হয়। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাননীয় ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, বাংলাদেশে চীনা দূতাবাসের কালচারাল কাউন্সিলর লি শাওপেং ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোঃ মহিউদ্দিন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আব্দুল হান্নান চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন হুয়াওয়ে সাউথ এশিয়া অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট ও হুয়াওয়ে বাংলাদেশের সিইও উ জি এবং অন্যান্য উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা।


বিজ্ঞাপন

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, “বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এআই, ক্লাউড এবং সেমিকন্ডাক্টর খাতের জন্য জাতীয় নীতিমালা প্রণয়নের কাজ করছে। এসব বিষয়ের জন্য আমরা একটি বৃহৎ ডিজিটাল রূপান্তরের মাস্টার প্ল্যান চালু করব। টেলিযোগাযোগ এবং আইসিটি খাতে হুয়াওয়ের উল্লেখযোগ্য অংশীদারিত্ব রয়েছে। অতএব, এখানে তাদের একটি ভূমিকা রয়েছে, যেটি এই রূপান্তরকে সাহায্য করতে পারে। আমি হুয়াওয়েকে এআই এবং ডিজিটাল ও কম্পিউটার প্রযুক্তির ল্যাবের মাধ্যমে আরও বেশি সংখ্যক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যুক্ত হওয়ার জন্য স্বাগত জানাতে চাই, যাতে দেশের তরুণরা সুযোগ পেতে পারে।”

ড. মোঃ মহিউদ্দিন বলেন, “২০১৪ সালে শুরু হওয়া ‘সিডস ফর দ্য ফিউচার’ কর্মসূচি বাংলাদেশকে একটি জ্ঞানভিত্তিক, প্রযুক্তিনির্ভর জাতিতে রূপান্তরের যাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। এই কর্মসূচি বিজ্ঞানের অগ্রগতি ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের প্রতি হুয়াওয়ের অবিচল প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করে। এ ধরনের উদ্যোগ আমাদের তরুণদের হাতে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ তৈরি করে এবং দেশের ডিজিটাল অবকাঠামোকে আরও শক্তিশালী করে তোলে। আমরা খুব শিগগিরই চীনে শিক্ষার্থীদের পাঠানোর জন্য নির্বাচন করব, যারা সেখানে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে একজন অ্যাম্বাসেডরের মতো।”

প্রফেসর ড. আব্দুল হান্নান চৌধুরী বলেন, “হুয়াওয়ের ‘সিডস ফর দ্য ফিউচার ২০২৫’ কর্মসূচি শিক্ষার্থীদের ক্ষমতায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে, যা তাদের বৈশ্বিক জ্ঞান, চীনা সংস্কৃতি এবং আধুনিক আইসিটি প্রযুক্তি সম্পর্কে অমূল্য অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ দিচ্ছে। এ ধরনের অভিজ্ঞতা বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব গঠনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন “সিডস ফর দ্য ফিউচার আমাদের তরুণদের জন্য সম্ভাবনা উন্মোচন করেছে।বাংলাদেশ সরকার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে হুয়াওয়ের কৌশলগত সহযোগিতা একটি জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি গঠনের একই দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রতিফলিত করে। এই দৃষ্টিভঙ্গি বাংলাদেশের ডিজিটাল অগ্রগতির প্রত্যাশার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এটি আইসিটি অ্যাকাডেমি, উইমেন ইন টেক ও আইসিটি ইনকিউবেটরসহ নানা উদ্যোগের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হচ্ছে। হুয়াওয়ে এমন একটি সহায়ক পরিবেশ গড়ে তুলছে যেখানে তরুণরা মেধা বিকাশ ও সৃজনশীলতার উপযুক্ত সুযোগ পাচ্ছে।”

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হুয়াওয়ে সাউথ এশিয়া অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট ও হুয়াওয়ে বাংলাদেশের সিইও উ জি বলেন, “অনেক বছর ধরে এই প্রতিযোগিতা বৈশ্বিক উদ্ভাবন ও স্থানীয় সম্ভাবনার মধ্যে এক সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করেছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ, আন্তঃসাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা এবং আধুনিক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি হাতে-কলমে শেখার সুযোগ পেয়েছে। তাদেরকে অনুপ্রাণিত করতে, দক্ষ করে গড়ে তুলতে এবং ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করার লক্ষ্যে আমরা এই ধরনের উদ্যোগের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছি যাতে তারা দেশের ডিজিটাল অগ্রগতির নেতৃত্ব দিতে পারে।”

স্নাতক পর্যায়ের ৩য় বা ৪র্থ বর্ষের নিয়মিত শিক্ষার্থীরা হুয়াওয়ে ’সিডস ফর দ্য ফিউচার ২০২৫ বাংলাদেশ’ প্রোগ্রামে আবেদন করতে পারবে। আবেদনকারীদের শেষ সেমিস্টার অক্টোবর ২০২৫-এর পর শুরু হতে হবে। এছাড়া আবেদনকারীদের সিজিপিএ ন্যূনতম ৩.৩০ হতে হবে। এই প্রতিযোগিতায় রেজিস্ট্রেশনের জন্য আগ্রহীদেরকে নিজেদের সাম্প্রতিক একটি ছবিসহ জীবন বৃত্তান্ত sftfbd@huawei.com ঠিকানায় ইমেইল করতে হবে। জীবন বৃত্তান্তে শিক্ষাগত যোগ্যতা, সিজিপিএ, সহশিক্ষা কার্যক্রম, টেলিকমিউনিকেশন ও প্রযুক্তি বিষয়ে আগ্রহ ও এর কারণ, এবং খণ্ডকালীন কাজের অভিজ্ঞতা (যদি থাকে) উল্লেখ করতে হবে।

সিভি যাচাইয়ের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীরা অনলাইন সাক্ষাৎকারে অংশগ্রহণ করবেন। নির্বাচিত অংশগ্রহণকারীদের জন্য হুয়াওয়ে ২০ ঘণ্টার একটি বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করবে যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ক্লাউড প্রযুক্তি ও ডিজিটাল পাওয়ারসহ আরও বিভিন্ন বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। প্রশিক্ষণ শেষে একটি চার দিনব্যাপী বুট ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হবে, যাতে ব্যবসা, প্রযুক্তিনির্ভর ধারণা এবং দক্ষতা উন্নয়নের উপর গুরুত্ব দেওয়া হবে। বুট ক্যাম্প শেষে অংশগ্রহণকারীদের একটি প্রকল্প জমা দিতে হবে এবং সেটি উপস্থাপন করতে হবে। এসব মূল্যায়নের পরে বাংলাদেশ থেকে ৮ জন বিজয়ী নির্বাচিত হবে যারা হুয়াওয়ের চীনের প্রধান কার্যালয়ে আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ ও টেকফরগুড প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে।

হুয়াওয়ে ‘সিডস ফর দ্য ফিউচার’ প্রোগ্রামটি সারা বিশ্বে বেশ সাড়া ফেলেছে। ১৪১টি দেশের ১৮,০০০-এরও বেশি শিক্ষার্থী সরাসরি এর ফলে উপকৃত হয়েছে। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ চালু হওয়ার পর থেকে ‘সিডস ফর দ্য ফিউচার’ দেশের তরুণরা এই প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করে আসছে। এর মাধ্যমে তারা অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও শিল্পখাতের বিশেষজ্ঞদের মতামত সম্পর্কে জানতে পারছে।

আরও বিস্তারিত জানার জানতে আগ্রহী অংশগ্রহণকারীরা হুয়াওয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারে: https://www.huawei.com/minisite/seeds-for-the-future/index.html.


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *