খাগড়াছিতে প্রতীকী ম্যারাথনে ইতিহাসের ছায়া : ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান দিবস উদযাপন

Uncategorized ইতিহাস ঐতিহ্য গ্রাম বাংলার খবর চট্টগ্রাম জাতীয় বিশেষ প্রতিবেদন সংগঠন সংবাদ সারাদেশ

খোকন বিকাশ ত্রিপুরা (খাগড়াছড়ি)  : ঐতিহাসিক ছাত্র-জনতার জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান দিবস ও ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ উপলক্ষে খাগড়াছিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে এক ব্যতিক্রমী প্রতীকী ম্যারাথন। প্রতীকী দৌড়ের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে জানানো হলো গণআন্দোলনের  গৌরবগাঁথা, আর শ্রদ্ধা জানানো হলো আন্দোলনের  শহীদদের প্রতি।


বিজ্ঞাপন

শুক্রবার সকালে জেলা শহরের চেঙ্গী স্কয়ারে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এবং যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহযোগিতায় আয়োজিত এ ম্যারাথনের উদ্বোধন করেন খাগড়াছি পার্বত্য জেলা পরিষদের সম্মানিত চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা।


বিজ্ঞাপন

উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন, “আমাদের ইতিহাসে এমন অনেক আন্দোলন আছে, যেগুলো আজকের স্বাধীনচেতা বাংলাদেশকে গড়ে তুলেছে। খাগড়াছির শহীদ মো. মহিন-সহ অসংখ্য সাহসী মানুষ নিজেদের জীবন দিয়ে যে আলোর পথ দেখিয়েছেন, আজকের এই প্রতীকী ম্যারাথন সেই আলোকে স্মরণ করার এক অভিনব প্রয়াস। এই আয়োজন শুধু দৌড় নয়-এ এক চলমান চেতনার বহিঃপ্রকাশ।”


বিজ্ঞাপন

প্রধান অতিথি আরও বলেন, “আজকের তরুণ প্রজন্মকে আন্দোলনের ইতিহাস জানাতে হবে,এই আয়োজন শুধু খেলা নয়—এটি একটি শিক্ষা, একটি অনুপ্রেরণা।”


বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার। চেঙ্গী স্কয়ার মোড় থেকে ধর্মপুর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এই প্রতীকী দৌড়ে অংশ নেন প্রায় তিন শতাধিক প্রতিযোগী।

বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ  :  প্রতিযোগিতায় মাইকেল ত্রিপুরা প্রথম স্থান অর্জন করেন, দ্বিতীয় হন সোমেশ ত্রিপুরা এবং তৃতীয় মো. পারভেজ। পরে ঐতিহাসিক খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

জেলা প্রশাসক পুরস্কার বিতরণকালে বলেন, “শহীদ মো. মহিন-এর পরিবারের সদস্যদের আজকের এই আয়োজনে উপস্থিতি আমাদের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। গণঅভ্যুত্থান শুধু রাজপথের আন্দোলন নয়, এটি মানুষে মানুষে সংযোগের একটি মহান অধ্যায়।”

উপস্থিত ছিলেন গণআন্দোলনের সাক্ষীরা : অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আন্দোলনে বিশেষ অবদান রাখা তৎকালীন ছাত্রনেতা জাহিদ হাসান, শাকিল শামস ও রাকিব মনি ইফতি। তাঁদের উপস্থিতি নতুন প্রজন্মকে ইতিহাস জানার বিরল সুযোগ করে দেয়।

এ ছাড়া অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. ফরিদ মিঞা, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক নাজমুন আরা সুলতানা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) রুমানা আক্তার, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হাসান মারুফ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুজন চন্দ্র রায়, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক বিপেন্দু চাকমা, ক্রীড়া সংস্থার সদস্য নজরুল ইসলাম প্রমুখ।

স্বাস্থ্য নিরাপত্তায় ছিল বিশেষ ব্যবস্থাপনা  :  ম্যারাথনের সময় প্রতিযোগীদের স্বাস্থ্য সহায়তায় একটি বিশেষজ্ঞ মেডিকেল টিম এবং রেডক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবক দল সার্বক্ষণিক প্রস্তুত ছিল।

এই প্রতীকী ম্যারাথনের মাধ্যমে খাগড়াছিবাসী শুধু দৌড়ায়নি—তারা একযোগে স্মরণ করেছে আত্মত্যাগ, ঐক্য আর সাহসিকতার সেই দিনগুলোকে, যেগুলো আজকের গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের ভিত্তি রচনা করেছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *