* হুমকির মুখে নদী পাড়ের বাড়ী-ঘর ও ফসলি জমি
* এলাকাবাসীর ক্ষোভ: বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি
মির্জাপুর প্রতিনিধি : মহামারি করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সারাদেশে চলছে লকডাউন। যে পরিস্থিতি দেশের অধিকাংশ কর্মকান্ড স্থগিত। এরমধ্যেও টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়নের যোগীর কোফা গ্রামের উপর দিয়ে যাওয়া বংশাই নদীতে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে বালু বিক্রির হিড়িক চলছে। হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এর ফলে নদী পাড়ের বাড়ী-ঘরগুলো ও ফসলী জমিগুলো হুমকির মুখে পড়েছে।
মির্জাপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক এক প্রভাবশালী নেতার তত্ত্বাবধানে এ বালু উত্তোলন চলছে। তার বাড়ী মির্জাপুর উপজেলার পোস্টকামুরী গ্রামে। তাকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করছে প্রভাবশালী কিছু নেতা। নদী ভাঙ্গন রোধে এলাকাবাসী বালু উত্তোলনে বাঁধা দিলেও ওই প্রভাবশালীরা কোনো তোয়াক্কা করেনি।
প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দেয়ার পরও অবাধে চলছে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন। বালু উত্তোলনের ফলে নদীর তীরবর্তী এলাকা ভাঙনের মুখে পড়েছে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নদীর পাড় ভেঙ্গে তছনছ হয়ে যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, সরকারীভাবে বালু উত্তোলনের কাজ চললেও সেই বালু নদীর পাড় ভরাটে কাজে লাগানো হয়। কিন্তু এখানে বালু উত্তোলন করে পাইপের মাধ্যমে আধা কিলোমিটারেরও বেশি দূরত্বে বালু বিক্রি করা হচ্ছে। যা সম্পূর্ণ অবৈধ।
মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রভাবশালী মহল ড্রেজার মেশিন দিয়ে যোগীর কোফা এলাকায় বালু উত্তোলন করছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, দীর্ঘ দিন ধরে এই চক্রটি নদীতে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। বালু উত্তোলন করলেও প্রশাসন প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে কঠোর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে ভূমি দস্যুরা চুরি করে অবাধে কেটে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকার বালু। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এলাকার লোকজন। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে নদী তীরবর্তী এলাকা।
মির্জাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর কাছে ড্রেজার দিয়ে নদীতে বালু উত্তোলন বন্ধের জন্য অনুরোধ করলেও আজ পর্যন্ত তা বন্ধ না হওয়ায় এলাকায় ক্ষোভ বিরাজ করছে।
একটি চক্র ক্ষমতার দাপট খাটিয়ে এবং লোকজনকে ভয়ভীতি দেখিয়ে দিনরাত ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে নিচ্ছে। মাটি কাটা বন্ধ করার জন্য তাদের অনুরোধ করা হলে উল্টো তাদের নানা ধরণের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানো হয়।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী পরিবারের এক সদস্য বলেন, যেখানে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করছে তার পাশেই আমার বাড়ি। নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমার বাড়িটি ভেঙ্গে তছনছ হয়ে যাবে। এতে আমি নিঃস্ব হয়ে যাবো। ইতোমধ্যে বালু উত্তোলন না করার জন্য অনুরোধ করেছি। কিন্তু তারা কোনো কথাই শুনে না। আমি অবিলম্বে বালু উত্তোলন বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।