নিজস্ব প্রতিবেদক : গত বছরের ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর পতিত হয় সাবেক আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার। এরপর গঠিত ছাত্র জনতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সারাদেশে দুর্নীতি দমন ও প্রশাসনিক সংস্কারের অংশ হিসেবে “অপারেশন ডেভিড হান্ট” পরিচালনা করছে। এরই মাঝে আবারো আলোচনায় এসেছে গণপূর্ত অধিদপ্তরের কিছু দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলীর বিদেশ ভ্রমণ কেলেঙ্কারি।

বিদেশ ট্যুরে টেন্ডারের টোপ : অভিযোগ আছে, ওয়ালটন কোম্পানি গণপূর্তের চার প্রকৌশলীকে অবৈধ সুবিধার টোপে ফেলে বিদেশ ভ্রমণের ব্যবস্থা করেছে, যাতে করে তাদের লিফট একচেটিয়াভাবে গণপূর্তের সব অফিসে সিডিউলভুক্ত করা যায়। টিমে ছিলেন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শেখর চন্দ্র বিশ্বাস, নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল আলম রব্বানী, নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী মাশফিক আহমেদ, নির্বাহী প্রকৌশলী মোর্শেদ ইকবাল, এমনকি একজন প্রকৌশলী তার স্ত্রীকেও নিয়ে গেছেন এই ট্যুরে। ব্যয়ভার বহন করেছে ওয়ালটন।
মূল উদ্দেশ্য কী? : সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিদেশি ভ্রমণের আড়ালে ওয়ালটনের তৈরি লিফটকে বিদেশি লিফটের সমতুল্য ঘোষণা করানোর জন্যই এই পুরো আয়োজন। কাগজপত্রে নাম দেখানো হয়েছে ইতালির একটি যন্ত্রাংশ প্রস্তুতকারী কোম্পানির, যেটি আসলে লিফট নির্মাতা নয়। অর্থাৎ, ‘লিফট পরিদর্শন’-এর নামে কর্মকর্তারা ওয়ালটনের খরচে ইউরোপ ভ্রমণ করেছেন।

মদদদাতা কারা? অভিযোগ রয়েছে, গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী মো. শামীম আখতার এবং অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক এই সিন্ডিকেটকে প্রত্যক্ষ ও নীরব সমর্থন দিয়েছেন। শামীম আখতার সরাসরি মদদ দিয়েছেন বলে অভিযোগ, আর আশরাফুল হক রহস্যজনক নীরবতা পালন করছেন।

নীরবে চুক্তি, নীরব দুর্নীতি : এই ভ্রমণ ও টেন্ডার কেলেঙ্কারির লক্ষ্য হলো—ওয়ালটন লিফটকে বিদেশি লিফটের সমান স্বীকৃতি দিয়ে একচেটিয়া বাজার দখল নিশ্চিত করা। অথচ দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিদেশ ট্যুরে বিশেষ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। মন্ত্রণালয়কেও রাখা হয়েছে সম্পূর্ণ অন্ধকারে।
মন্তব্যহীন অভিযুক্তরা : এ বিষয়ে প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতার, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হকসহ অভিযুক্ত প্রকৌশলীদের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি। ওয়ালটন কোম্পানির কর্তৃপক্ষের সাথেও যোগাযোগ করা হলে তারাও কোনো বক্তব্য দেননি।