বরিশাল বন বিভাগের উপ-বনসংরক্ষক মো: কবির হোসেন পাটোয়ারীর বিরুদ্ধে ১৭ স্ত্রীর মানববন্ধন কর্মসূচি পালন

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত গ্রাম বাংলার খবর জাতীয় বরিশাল বিশেষ প্রতিবেদন সারাদেশ

নিজস্ব প্রতিনিধি বরিশাল :  বহু বিবাহ ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে বরিশাল বন বিভাগের উপ-বন সংরক্ষক মো. কবির হোসেন পাটোয়ারী বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার।মানবন্ধনে থাকা স্ত্রীদের অভিযোগ ওই কর্মকর্তার ১৭ জন স্ত্রী রয়েছে।


বিজ্ঞাপন

গত বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে বরিশাল  নগরীর কাশিপুর বাজার সংলগ্ন বরিশাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সমনের ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময়ে তারা উপ-বন সংরক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ ও তাকে অপসরণের দাবি জানান। এতে মো. কবির হোসেন পাটোয়ারীর একাধিক স্ত্রী ও স্বজনরা অংশগ্রহণ করেন।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কবির হোসেনের এক স্ত্রী জানান, কবির হোসেন পাটোয়ারী এ পর্যন্ত যেসব স্টেশনে চাকুরি করেছেন সেই সব এলাকায় একটি করে বিয়ে করেছেন। আর প্রত্যেকটি স্টেশন ত্যাগ করার পরে তাদের আর কারই খোঁজ রাখেন না।


বিজ্ঞাপন

অন্য এক স্ত্রী বলেন, আমরা যতদূর খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি তার অন্তত ১৬ থেকে ১৭ জন স্ত্রী রয়েছে। তাদের কোনো খবর না নেওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তিনি এক বছর আগে বরিশালে যোগ দেওয়ার পরে এখানেও বিয়ে করার জন্য মেয়ে খুঁজছেন। তাই কবির হোসেনের স্ত্রী ও তাদের স্বজনরা এই কর্মসূচি পালন করছেন। তিনি জানান, ইতোমধ্যে নারী নির্যাতনে অভিযোগে থানায় ও আদালতে একাধিক মামলার রয়েছে তার বিরুদ্ধে।


বিজ্ঞাপন

মানববন্ধনকারীদের দাবি, উনার মত বিকৃত মানুষকে বন বিভাগ থেকে অপসরণসহ সব স্ত্রীকে যথাযোগ্য মর্যাদা দিতে হবে। এ ছাড়া তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। এ বিষয়ে জানতে বরিশাল বন বিভাগের উপ বন সংরক্ষক মো. কবির হোসেন পাটোয়ারী মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে তিনি সাংবাদিকদের পরিচয় জেনে মিটিং এ রয়েছে বলে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করেন দেন।

কে এই উপ বন সংরক্ষক মোঃ কবির হোসেন পাটোয়ারী :
বরিশাল বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার (ডিএফও) মো. কবির হোসেন পাটোয়ারী যখন যেখানে কর্মরত ছিলেন সেখানেই রেখেছেন ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতিসহ নারী কেলেঙ্কারির ঘটনা।২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর বরিশালে এসে ‘আউটসোর্সিং সরবরাহের দরপত্র’ এর বিজ্ঞাপন দিয়ে সমালোচনার পাত্র হয়ে উঠেছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে রয়েছে প্রধান কার্যালয়ে নানা অভিযোগ। অপকর্ম করতে গিয়ে একাধিক মামলা সহ জেলহাজতেও গিয়েছিলেন তিনি। তবুও অদৃশ্য ক্ষমতাবলে চাকুরির কর্মস্থল লবিং তদবিরে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছেন।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে- চারটি সি.আর মামলা, ফ্যামিলি কোর্ট দুইটি মামলাসহ অফিসিয়াল মামলা চলমান রয়েছে। স্ত্রীসহ একাধিক নারীর সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা তাদের অর্থ কূটকৌশলে আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। এ সকল অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরে চলতি বছরের ৯ এপ্রিল ডিএফও কবির হোসেন পাটোয়ারীর স্ত্রী খাদিজা বেগম ঢাকা আগারগাঁও বন ভবনের প্রধান বন সংরক্ষকের বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগের তথ্যমতে, চাঁদপুর জেলার মতলব উপজেলার তুষপুর (উত্তর বারগাঁও) গ্রামের মৃত মোশারেফ হোসেন পাটোয়ারীর ছেলে হলেন- ডিএফও মো. কবির হোসেন পাটোয়ারী। তার বিরুদ্ধে ঢাকা ও খুলনা ও চট্ট্রগ্রাম সহ কয়েক জেলায় দুর্নীতি ও প্রতারণাসহ নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলা চলমান রয়েছে এবং একাধিকবার জেলহাজতেও গিয়েছিলেন। সরকারি একজন পদস্থ কর্মকর্তা হয়ে চাকুরি জীবনে যেখানেই কর্মরত ছিলেন সেখানেই একের পর এক অপকর্মে লিপ্ত রয়েছেন।

বরিশালে এমন তথ্য প্রমাণ যুক্তিগতভাবে ছড়িয়ে পড়া মাত্রই তার কার্যক্রম নিয়ে সিংহভাগ কর্মকর্তা কর্মচারীদের মনে নানা প্রশ্নের দানা বেধেছে। খুলনা বিভাগ থেকে ২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর বরিশালে যোগদান করার পরই গত ১৭-০৫-২০২৫ইং তারিখে ‘আউটসোর্সিং সরবরাহের দরপত্র’ প্রকাশ করেন।

যা নিয়ম বহির্ভূতভাবে এ বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মকর্তা ব্যক্ত করেন। নাম উল্লেখ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন- বিষয়টি নিয়ে গোপনে ঢাকা অফিসে আমি আলোচনা করেছিলাম। কিন্তু ঢাকা অফিস থেকে লিখিত অভিযোগ চায়। অভিযোগ পেলেই ওই বিজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন।

তবে প্রমাণ উপস্থাপন করে জানান দেন- ঢাকা সিপিটিইউ পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় যোগাযোগ করলে এর প্রমাণ মিলবে। আর বরিশালে যোগদানের পর থেকে কতিপয় অসাধু ঠিকাদারের সাথে উঠাবসা শুরু হয়। সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে গভীর রাত পর্যন্ত বাহিরে এবং কাশিপুর ডাকবাংলোতে আড্ডা জমায়। যা যে কেউ খোঁজ নিলেই প্রমাণ মিলবে।

মো. কবির হোসেন পাটোয়ারী ২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর বরিশালে উপ বন সংরক্ষক, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা,সামাজিক বন বিভাগে যোগদান করেন।এর পুর্বে তিনি খুলনায় কর্মরত ছিলেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *