!!   “তথ্য সন্ত্রাস” নয়, বরং ‘দুর্নীতি সন্ত্রাস’-এর কবলে পড়েছে গণপূর্ত অধিদপ্তর  !!  মোহন ও আলী আকবর গংদের ভুয়া প্রচারণা ব্যর্থ  !!  অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসছে কোটি টাকার অনিয়ম !!  টাকা-ই কায়কোবাদ সিন্ডিকেটের মূল উদ্দেশ্য ! 

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী সারাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক   : গণপূর্ত অধিদপ্তরের কুখ্যাত তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ কায়কোবাদ নিজের বিরুদ্ধে প্রকাশিত দুর্নীতির খবর ধামাচাপা দিতে আবারও সক্রিয় হয়েছেন। সম্প্রতি “তথ্য সন্ত্রাসের কবলে গণপূর্ত অধিদপ্তর” শিরোনামে একটি বানোয়াট প্রতিবেদন প্রকাশ করে কায়কোবাদ-নিয়ন্ত্রিত সিন্ডিকেট — যাতে তিনি নিজেকে হাস্যকরভাবে ‘নিরপরাধ’, ‘উন্নয়নবান্ধব’ কর্মকর্তা হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। কিন্তু বাস্তবে এই তথাকথিত প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে কায়কোবাদ-ঘনিষ্ঠ সাংবাদিক নামধারী ঠিকাদার- চক্র — আলী আকবর, মোহন ও নিজাম উদ্দীন দরবেশের নেতৃত্বে।


বিজ্ঞাপন

ভুয়া সংবাদে আত্মরক্ষার নাটক :  গণপূর্তের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, কায়কোবাদ ও তার ঘনিষ্ঠ কয়েকজন সাংবাদিকর নামধারী ঠিকাদার- কয়েকটি নামসর্বস্ব অনলাইন ও সাপ্তাহিক পত্রিকা ব্যবহার করে নিজেদের দুর্নীতি আড়াল করতে মাঠে নেমেছেন। “তথ্য সন্ত্রাসের কবলে গণপূর্ত অধিদপ্তর” শিরোনামে প্রকাশিত তথাকথিত এ প্রতিবেদনটি প্রকৃতপক্ষে কায়কোবাদ নিজেই স্পনসর করেছেন, যাতে নিজের দুর্নীতির তদন্ত থেকে মনোযোগ অন্যদিকে সরিয়ে নেওয়া যায়।

প্রতিবেদনটিতে “ফ্যাসিবাদ”, “উন্নয়ন ব্যাহত” ইত্যাদি নাটকীয় শব্দচয়ন ব্যবহার করে প্রকৃত অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের ‘তথ্য সন্ত্রাসী’ হিসেবে উপস্থাপনের ব্যার্থ চেষ্টা করা হয়েছে। কায়কোবাদ-ঘনিষ্ঠ মোহন ও আলী আকবর নিজেদের ঠিকাদার পরিচয় আড়াল করে সাংবাদিক সেজে তার হয়ে ভুয়া নিউজ তৈরি করেন, এবং বিনিময়ে সরকারি টেন্ডার সুবিধা পান বলে অভিযোগ রয়েছে।


বিজ্ঞাপন

১০ কোটি টাকার পদোন্নতি মিশন ও সিন্ডিকেটের চক্র : তদন্তে জানা গেছে, কায়কোবাদ বর্তমানে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী পদে পদোন্নতির জন্য প্রায় ১০ কোটি টাকার অবৈধ ফান্ড গঠন করেছেন। তার সহায়ক হিসেবে কাজ করছে মোহন-আলী আকবর-নিজাম উদ্দীন দরবেশের একটি প্রোপাগান্ডা টিম। এই টিমের কাজ—প্রকৃত অনুসন্ধানী সংবাদগুলোকে “উদ্দেশ্যপ্রণোদিত” আখ্যা দিয়ে পাল্টা সংবাদ তৈরি করা এবং পত্রিকাগুলোতে পেইড নিউজ হিসেবে ছাপানো।


বিজ্ঞাপন

প্রধান প্রকৌশলী মোঃ শামীম আখতারের আস্থাভাজন হিসেবে কায়কোবাদ দীর্ঘদিন ধরেই গণপূর্তের ই/এম এর বিভিন্ন টেন্ডারের কমিশন বণ্টনের “কেন্দ্রীয় রুট” নিয়ন্ত্রণ করছেন। একটি অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, তার নেতৃত্বাধীন ইএম সার্কেল-২ এর প্রায় সব নির্বাহী প্রকৌশলীই কমিশন নির্ভর কাজের সঙ্গে যুক্ত।

সিন্ডিকেটের সদস্যদের তালিকা ও ভূমিকা  : এই সিন্ডিকেটে রয়েছেন: মোহন — কথিত সাংবাদিক, ঠিকাদার ও কায়কোবাদ এর দূরসম্পর্কের শ্যালক। আলী আকবর — মিলেনিয়াম ট্রেডার্সের মালিক এবং গণপূর্তের নিয়মিত কনট্রাক্টর; নিজাম উদ্দীন দরবেশ — তথাকথিত ‘সংবাদকর্মী’, যিনি নিয়মিতভাবে পেইড নিউজ ছাপান; কায়কোবাদ, হালিম, আতিক সহ প্রধান প্রকৌশলী নিয়ন্ত্রিত কর্মকর্তারা, যাদের মাধ্যমে টেন্ডার কমিশন তোলা হয়।

এই চক্রের সবাই গণপূর্তে ঠিকাদারি করে এবং একই সঙ্গে ভুয়া সাংবাদিক পরিচয়ে কায়কোবাদ, হালিম, আতিক গংদের “ধোয়া তুলসীপাতা” হিসেবে প্রচার করে থাকেন।  ফলে এখনো পর্যন্ত গণপূর্তের কোনো দূর্ণীতিবাজ কর্মকর্তার কোনো শাস্তি হয়নি।

ইতিপূর্বে হালিম এর বিরুদ্ধে লিফট দূর্ঘটনায় দুইজন মানুষ মৃত্যুর খবর ছাপানো হয়েছে কিন্তু তার কোনো শাস্তি হয়নি অথচ বাংলাদেশে আর কোনো ইঞ্জিনিয়ার এর এমন ঘটনা ঘটেনি। Adroit consultants and Engineers এর মাধ্যমে আতিও এর ১৪০ কোটি টাকা লুটপাট এর খবর ছাপানো হয়েছে সেটিও ধামাচাপা দেয়া হয়েছে।

দুর্নীতির বাস্তব চিত্র  :  বহু বছরের অনুসন্ধানে প্রমাণিত— কায়কোবাদ ইএম ডিভিশন-৭, সার্কেল-১ ও চট্টগ্রাম সার্কেলে দায়িত্বে থাকাকালে ভুয়া প্রাক্কলনের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। মুজিববর্ষ উদযাপন প্রকল্পে বরাদ্দ ৪০০ কোটির মধ্যে প্রায় ২০০ কোটি টাকা তার নিয়ন্ত্রণে গিয়েছিল। মুগদা মেডিকেল কলেজ, মিরপুর সরকারি আবাসিক ভবনসহ একাধিক প্রকল্পে বিল তোলার পরও কাজ সম্পন্ন হয়নি। তার নামে ও পরিবারের নামে রাজধানী ঢাকা ও শেরপুরে রয়েছে বিপুল পরিমান জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ।

প্রকৃত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি প্রদর্শন :  কায়কোবাদ সিন্ডিকেট এখন প্রকৃত অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করছেন। যেসব গণমাধ্যম তার দুর্নীতির খবর প্রকাশ করেছে—তাদের ফোন, মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে হুমকি বার্তা পাঠানো হচ্ছে। “তথ্য সন্ত্রাস” শব্দটি ব্যবহার করে কায়কোবাদ এখন উল্টো সাংবাদিকদেরকেই অভিযুক্ত করতে চাইছেন। কিন্তু গণপূর্তের কর্মকর্তারা বলেন, প্রকৃতপক্ষে “তথ্য প্রকাশ তথ্য সন্ত্রাস নয় তথ্য আড়ালই তথ্য সন্ত্রাস” আর কায়কোবাদ সিন্ডিকেটের আসল উদ্দেশ্যই তথ্য আড়াল।

স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার দাবি :  সচেতন মহল বলছে, কায়কোবাদের মতো বিতর্কিত কর্মকর্তা ও তার প্রোপাগান্ডা সিন্ডিকেটকে এখনই তদন্তের আওতায় আনা জরুরি। দুদক, মন্ত্রণালয় ও গোয়েন্দা সংস্থার উচিত কায়কোবাদের সম্পদ, কমিশন লেনদেন ও তথাকথিত “তথ্য সন্ত্রাস” শিরোনামে প্রকাশিত পেইড নিউজগুলোর উৎস খতিয়ে দেখা।

তথ্য সন্ত্রাস” নয়, বরং ‘দুর্নীতি সন্ত্রাস’- এর কবলে পড়েছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। যেখানে আলী আকবর-মোহন-নিজাম দরবেশদের মতো দালাল-ঠিকাদার-সাংবাদিকরা মিলে কায়কোবাদের দুর্নীতি আড়াল করছে—আর প্রকৃত অনুসন্ধানী সাংবাদিকরা হয়ে পড়ছেন টার্গেট।   মনে রাখতে হবে,
সত্য প্রকাশ বন্ধ করা যাবে না—এটাই গণমাধ্যমের অঙ্গীকার।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *