মো: রফিকুল ইসলাম, নড়াইল : নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী কে হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় উদ্ধারের পরে মামলা দায়ের করেন কলেজ ছাত্রীর বাবা।
গত শনিবার (১৭ অক্টোবর) রাতে মেয়েটির বাবা বাদি হয়ে নড়াইল সদর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে মামলা দায়ের করেন।
এর আগে ওইদিন রাত ১০ টার দিকে নড়াইল শহরের এস এম সুলতান স্মৃতিসংগ্রহশালার পাশ থেকে তাকে উদ্ধার করার পরে নড়াইল সদর হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়েছে।
মেয়েটির বাড়ি নড়াইলের চাঁচুড়ি ইউনিয়নের আরাজি বাঁশগ্রামে এবং নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বলে জানা যায়।
ভূক্তভোগীর বাবা জানান,আমার মেয়ে প্রতিদিনের নেয় সকালে প্রইভেট পড়তে নড়াইলে যায়,প্রতিদিনের নেয় আজও সকালে প্রইভেট পড়তে গেলে দুপুর হয়ে যায় এবং মেয়ের আসতে দেরি দেখে তার মোবাইল ফোনে কল করলে মেয়ের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এমন অবস্থা দেখে আমি নড়াইল সদর হাসপাতাল সহ সকল জায়গায় খোজাখুজি করেও না পেলে নড়াইল সদর থানায় অভিযোগ করতে গেলে আমার কাছে আমার মেয়ের নাম্বার থেকে একটি কল আসে যে আপনি কি আপনার মেয়ে কে খুচ্ছেন,আপনার মেয়েকে পেতে হলে আমাদের ৫ লাখ টাকা দিতে হবে এবং আমি এসব কথা থানার অফিসারদের সুনিয়েছি।
কিছুখন পরে আবার আমাকে ফোন করে একটি মেয়ে বলেন,আমি বাচি কি মরি আপনার মেয়ে কে বের করে দিয়েছি আপনি আপনার মেয়েকে এস এম সুলতান স্মৃতিসংগ্রহশালার সামনে থেকে নিয়ে জান।
একথা সুনে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মেয়েটিকে হাত পা ও মূখ বাধাঁ অবস্থায় উদ্ধারে করে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
ভূক্তভোগী মেয়ে জানান,প্রতিদিনের মতো শনিবার সকালে বাড়ি থেকে নড়াইল শহরে প্রাইভেট পড়তে আসি।
দুপুরে বাড়ি ফিরে যাওয়ার সময় নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজ মোড় মসজিদের সামনে থেকে ভ্যানে ওঠি পরে নিশিনার তলা হতে একজন মেয়ে আমার ভ্যানে ওঠেন এবং নড়াইল সদর উপজেলা চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে থেকে আরেক জন যুবক ওঠেন এবং নড়াইল মাছিমদিয়া ব্রিজের নিচ থেকে আমার মূখে বিশাক্ত পয়জোন দিয়ে আমাকে অজ্ঞান করে তুলে নিয়ে জায়।
পরে আমাকে আবারও ইন্জেক্সন দিয়ে অজ্ঞান করে আমার ফোন দিয়ে আমার বাবা কে ৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দিতে বলে এবং আমার বাবা ভ্যান রিক্সার মিস্তিরি বলে টাকা দিতে রাজি হন নি ও আমার বাবাকে বলে তোর কি আছে কি না আমরা জানা বলে ফোন কেটে দেন।
পরে আমার বাবা কে আবারও ফোন করে বলে আপনার মেয়েকে এস এম সুলতান স্মৃতিসংগ্রহশালার সামনে থেকে নিয়ে জান।
এসময় পুলিশ আমাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
মেয়েটির নতুন ফোন নাম্বর তার পিতাসহ পরিবারের কেউই জানেন না (০১৬০৮-৪৭৬৪৬০) থেকে তার বাবার নাম্বারে ফোন করে মেয়ের মুক্তিপণের জন্য পাঁচ লাখ টাকা দাবি করা হয়।
এ ঘটনার বিষয়ে নড়াইল মাছিমদিয়ায় কেউ কিছু জানেন না বলে জানান স্থানীয়”রা।
এমন ঘটনা দিনের বেলায় ঘটলে মেয়েটি চিৎকার সহ চেঁচামেচি করে লোকজন জড়ো করতে পারতো বলেও জানান স্থানিয় এলাকাবাসি।
এদিকে মেয়ে সহ তার পরিবার সাংবাদিকদের একএক জন একএক রকম বয়ান দিচ্ছেন যেটি কারো সাথে কারো মিল হচ্ছে না এটা নিয়ে রয়েছে সাংবাদিকদের অন্য ধারনা।
দিনে দুপুরে একটি মেয়েকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে কিন্তু কেউ কিছু দেখতে পাচ্ছে না আবার ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে আবার টাকা বাদে মেয়েটিকে ছেড়ে দিচ্ছে হাত পা বেধেঁ এটা কি নাটক না কি সেই বিষয়ে সন্ধেহ রয়েছে
আরাজি বাঁশগ্রা বাসির।
এটা সাজানো নাটক নাকি মুক্তিপণের জন্য টাকা হাতানোর জন্য কিডন্যাপ এমন প্রশ্ন নড়াইল বাসির।
এদিকে ভুক্তভোগী মেয়ের বয়ান ও তার পিতার সাংবাদিকদের সামনে বয়ান এক এক রকম দিয়েছেন এবং কোন নিউজ বা ছবি না তোলে এজন্য রিকোয়েস্ট করেন।
মেয়েটি সাংবাদিকদের সংক্ষিপ্ত ভাবে জানান, আমাকে দুইটি ছেলে এবং একটি কালো সাদা বোরকা পরা মেয়ে তুলে নিয়ে যায়, আমাকে হত্যা করবে বলে আমার গলায় চাঁকু ধরে আমাকে মেরে ফেলবে বলে। আমার হাতে কয়েক বার আঘাত করে চাঁকু দিয়ে এবং ৫ লাখ টাকা আমার বাবার কাছে আমার মোবাইল থেকে কল করে মুক্তিপণ দাবি করে। পরে আমার একটু হুস হলে বুঝতে পারি আমাকে একটি বাগানে নিয়ে রেখে আসে কিন্তু তারা আমার কোন ক্ষতি করেনি বলেও জানান।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মশিউর রহমান বাবু জানান, মেয়েটির চিকিৎসা চলছে। তার শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন দেখা যায়নি।
এছাড়া তাকে ধর্ষণ বা শারীরিক ভাবে অন্য কোনো ক্ষতি করা হয়েছে কিনা,তা পরীক্ষার পর জানা যাবে।
নড়াইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিয়াজুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় মেয়েটির বাবা বাদি হয়ে সদর থানায় শনিবার রাতে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে মামলা করেছেন,এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।