কিশোর গ্যাংয়ের দ্বন্দ্বে বেড়েছে হত্যা

এইমাত্র অপরাধ

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : সামান্য বিষয়ে খুন হচ্ছে শিশুরা। একই সাথে কিশোর গ্যাংয়ের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বেড়েছে হত্যার ঘটনা। গত ১৭ বছরে শুধু ঢাকায় কিশোর অপরাধীদের হাতে ১২০ জন খুন হয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন সামাজিক অবক্ষয়ের বলি হচ্ছে শিশু-কিশোররা। পুলিশ বলছে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে দায়িত্বশীল হতে হবে অভিভাবকদেরও।
চার মাসের মেয়ে সাদিয়ার জন্য শখ করে চুড়ি কিনেছিলেন মা। কিন্তু ঝাড়ু দেওয়ার পর আবর্জনা পাশের ঘরে উড়ে যাওয়াকে কেন্দ্র দুই পরিবারের দ্বন্দ্বে জবাই করে খুন করা হয় শিশুটিকে। তার কাপড় এখনো সযতেœ রেখেছেন মা মোর্শেদা বেগম।
বিভিন্ন সংঠনের পরিসংখ্যান বলছে গত বছরই ধর্ষণ, ধর্ষণচেষ্টা, হত্যা, অপহরণ, নিখোঁজ ও নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা গেছে ১৪৫ শিশু। নানা তুচ্ছ ঘটনার জেরে ২০১৯ সালে হত্যা করা হয় ৪৪৮ শিশুকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ে এ ধরণের অপরাধ কমছে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, সূত্রটা অন্য জায়গায়, কোনোভাবেই সে কিছুই করতে পারছে না। প্রচ- রকমভাবে সামাজিক বিচ্ছিন্নতা তার মধ্যে ঝড় বয়ে যাচ্ছে তার একটা প্রতিফলন।
আরেক আতঙ্কের নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে কিশোর গ্যাং। রাজধানীর উত্তরা, মিরপুর, বাড্ডাসহ ঢাকার ৪০টি এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, সিনিয়র জুনিয়র দ্বন্দ্বে গত ১৭ বছরে ১২০ জন খুন হয়েছেন। গত দুই বছরে কিশোর অপরাধীদের হাতে মারা গেছে ৩৪ জন।
অপরাধ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন বলেন, সমাজের মধ্যে বৈষম্য দারিদ্র তারপর অনেক রকম সমস্যা থাকে সেইটার একটা প্রতিফলন কিন্তু শিশু কিশোর অপরাধের মধ্যদিয়ে হয়।
পুলিশ বলছে গত কয়েক বছরে কিশোর অপরাধী নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। অভিভাবকদের আরো দায়িত্বশীল হওয়ার তাগিদ তাদের।
গোয়েন্দা অপরাধ তথ্য বিভাগের উপ-কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, আইন আদালত, পুলিশ বিভাগ যথেষ্ট না, পারিবারিক মূল্যবোধ বাড়াতে পরিবারের সবাইকে বোঝাতে হবে। এই অপরাধ হ্রাস করার জন্য শুধু শাস্তি দেয়ার জন্য জেলখানায় পুরে রাখলে একটা জাতি কারাগারে অবরুদ্ধ হয়ে পড়বে।
গত এক সপ্তাহে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের হাতে ৫ জন কিশোর এবং সারা দেশে ৭ জনের বেশি শিশু বড়দের হাতে খুন হয়েছে।


বিজ্ঞাপন