নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের গণপূর্ত অধিদপ্তরে ঘটেছে নজিরবিহীন এক কেলেঙ্কারি। বিসিএস পরীক্ষা পাশ না করেই শেখ পরিবারের ছত্রছায়ায় কয়েকজন প্রকৌশলী সরাসরি উচ্চতর পদে চাকরি পেয়েছেন। শুধু তাই নয়, আদালতের রায় উপেক্ষা করে তাদের পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে এবং ‘ব্যাকডেট’ দেখিয়ে কোটি কোটি টাকার বেতন হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।

শেখ পরিবারের আশীর্বাদে ভাগ্য বদল : ২০১২ সালে সমীরণ মিস্ত্রি, জাহাঙ্গীর আলম, জিয়াউর রহমান, মো. আবু তালেব, নাফিজসহ কয়েকজন প্রকৌশলী বিসিএস পরীক্ষা বাইপাস করে শুধুমাত্র ভাইভা দিয়ে ষষ্ঠ গ্রেডে নিয়োগ পান। সাধারণ কর্মকর্তা যেখানে নবম গ্রেড থেকে শুরু করেন, সেখানে এই আশীর্বাদপুষ্টরা পরীক্ষাহীনভাবে উচ্চ পদে ঢুকে পড়েন।
আদালতের নির্দেশ অমান্য করে পদোন্নতির উৎসব : গণপূর্তের বিসিএস কর্মকর্তারা নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ করলে হাইকোর্ট পদ সংরক্ষণের নির্দেশ দেন। কিন্তু সেই নির্দেশ অমান্য করে অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্তদের পদোন্নতি দেওয়া হয়। তারা হয়ে যান সিনিয়র, অথচ প্রকৃত কর্মকর্তারা পড়ে থাকেন পিছনে।

ব্যাকডেট নাটক: এক চাকরি, দুই বেতন: : সবচেয়ে আলোচিত নাম মো. জাহাঙ্গীর আলম। ২০১২–১৬ পর্যন্ত তিনি বিআইডাব্লিউটিএ-তে চাকরি করলেও গণপূর্তে দেখানো হয় ব্যাকডেট যোগদান। আদালতের স্থগিতাদেশ চলাকালীন সময়ে যোগদান দেখানো শুধু আদালত অবমাননাই নয়— বরং রাষ্ট্রীয় অর্থ লুটের মহাকাব্য। চার বছরের এককালীন বকেয়া বেতন গণপূর্ত থেকে তোলা হয়, যখন একই সময়ে তিনি বিআইডাব্লিউটিএ থেকেও বেতন নিচ্ছিলেন। অর্থাৎ, একই সময়ে দুই প্রতিষ্ঠানের বেতন ভোগ!

আসন্ন বিচার ও শ্বাসরুদ্ধকর প্রতীক্ষা : ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর ক্ষুব্ধ কর্মকর্তারা ফের হাইকোর্টে মামলা করেছেন। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে মামলার শুনানি। প্রশ্ন একটাই— বিচার হবে, নাকি আবারও অদৃশ্য শক্তির ছায়ায় চাপা পড়বে এই মহা দুর্নীতির কাহিনি?