সড়কে কঠোরতা
নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চলমান লকডাউনের তৃতীয় দিনে রাজধানীর সড়কগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে যথারীতি কঠোর অবস্থানে দেখা গেছে। কিন্তু বিভিন্ন মহল্লা এবং বাজারগুলোতে অনেকটাই শিথিল বিধিনিষেধ।
শুক্রবার যাত্রাবাড়ী এলাকার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক এবং আশেপাশের বিভিন্ন মহল্লা ও বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে যাত্রাবাড়ীর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গিয়ে দেখা গেছে, শুধু পণ্যবাহী ট্রাক, পিকআপ ভ্যান এবং প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস চলাচল করছে। তাও সংখ্যায় খুব বেশি নয়। মাঝে মাঝে দু-একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশাও দেখা যাচ্ছিল।
এই মহাসড়কের রায়েরবাগে ‘পুনম’ সিনেমা হলের দিকে মহাসড়কে বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। সেখান থেকে যাতায়াতকারী প্রতিটি প্রাইভেটকার এবং সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে পুলিশের চেকের মুখে পড়তে হচ্ছে।
চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ব্যক্তিগত কোনো গাড়ি আমরা চেক না করে ছাড়ছি না। উপযুক্ত অনুমতিপত্র না দেখাতে পারলে ফিরিয়ে দিচ্ছি। প্রয়োজনে শাস্তিও দেয়া হচ্ছে।’
এই বাসস্ট্যান্ডে রাস্তার উভয়পাশেই বিভিন্ন গন্তব্যে রওনা দেয়া যাত্রীদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। এছাড়া, ভ্যানগাড়িতে চড়ে লোকজনকে এই মহাসড়ক দিয়ে সাইনবোর্ড এলাকার দিকে যেতে দেখা গেছে।
মহাসড়কে চোখে পড়ছে ব্যাটারিচালিত ও পায়ে চলা রিকশা। পায়ে চলা রিকশার প্রতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কিছুটা শিথিল হলেও ব্যাটারিচালিত রিকশা পেলেই আটকে দেয়া হচ্ছিল।
রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ডের দক্ষিণ পাশে একসঙ্গে চারটি ব্যাটারিচালিত রিকশা উল্টো করে রাখতে দেখা গেছে।
এই মহাসড়কে পাশেই যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগ, উত্তর রায়েরবাগ, শনির আখড়া, জনতাবাগ, গোবিন্দপুর, কাজলা, দনিয়া এলাকা। এসব এলাকার ভেতরে চলাচল কিংবা স্বাস্থ্যবিধি পালনের ক্ষেত্রে তেমন কড়াকড়ি চোখে পড়েনি।
মহল্লার ভেতরের বেশিরভাগ দোকানপাটই খোলা দেখা গেছে। এলাকার রাস্তার পাশে অস্থায়ী এবং স্থায়ী কাঁচাবাজারগুলোতে ছিল লোকজনের ভিড়। উত্তর রায়েরবাগে দোতলা মসজিদ এলাকায় বাজার করতে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে।
সেখানকার মুদি দোকানি বাবুল মিয়া বলেন, ‘বেচা-বিক্রি অনেক কম। বেশিরভাগ মানুষই দেশে চলে গেছে।’
গত দুইদিনে দেখা গেছে, বিকেল হলেই মহল্লার ইফতারির খাদ্যপণ্যের দোকানগুলোতে ভিড় চরম পর্যায়ে পৌঁছায়। তখন স্বাস্থ্যবিধির বালাই থাকে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত বুধবার (১৪ এপ্রিল) ভোর ৬টা থেকে আটদিনের কঠোর লকডাউন (বিধিনিষেধ) শুরু হয়েছে। আগামী ২১ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত এই বিধিনিষেধ বহাল থাকবে।
লকডাউন ঘোষণা করে গত ১২ এপ্রিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এ সময়ের মধ্যে পালনের জন্য ১৩টি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।
লকডাউনের আটদিন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। বন্ধ থাকবে গণপরিবহন। তবে জরুরি সেবা দেয়া প্রতিষ্ঠান-সংস্থা খোলা রয়েছে। খোলা রয়েছে শিল্প-কারখানা। সীমিত পরিসরে দেয়া হচ্ছে ব্যাংকিং সেবা।
এই সময়ে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হওয়া যাবে না। খোলা স্থানে কাঁচাবাজার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কেনা-বেচা করা যাবে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত।