বিশেষ প্রতিবেদক : প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে বেশকিছু পণ্য ও সেবার ওপর বাড়তি কর আরোপের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হবে জুলাই থেকে। অথচ প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপনের পরেরদিনই বাজারে দাম বেড়েছে সব ধরণের সিগারেট ও গুঁড়ো দুধে। বিক্রেতারা বলছেন, কোম্পানিগুলো দাম বাড়িয়ে দেওয়ার কারণেই তাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে, অপরিবর্তিত রয়েছে স্মার্টফোনের দাম ও ভয়েস কল রেট।
শুক্রবার রাজধানীর শপিংমল ও বিভিন্ন দোকান ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।
দেখা গেছে, বেনসন প্রতি শলাকা বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা। যা বৃহস্পতিবার বিকেলেও ছিলো প্রতি শলাকা ১২ টাকা। মার্লবোরো প্রতি শলাকায় ৩ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা। গোল্ডলিফ প্রতি শলাকায় ১ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা। প্রতি শলাকায় ১ টাকা করে বেড়ে স্টার সিগারেট বিক্রি হচ্ছে ৭ টাকা, নেভি ৭ টাকা, পাইলট সিগারেট ৫ টাকা, হলিউড সিগারেট ৫ টাকা, ডারবি সিগারেট ৫ টাকা, শেখ সিগারেট ৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সিগারেটের দাম বাড়ার বিষয়ে বসুন্ধরা গেইট সংলগ্ন আঁখি জেনারেল স্টোরের মালিক বিল্লাল হোসেন বলেন, ১৩ জুন সকালে বেনসন সিগারেট প্রতি কার্টন কিনেছেন ২১০০ টাকায়। কিন্তু সন্ধ্যায় সেই একই সিগারেট কিনেছেন ২৪৬০ টাকায়। তাহলে এখন তারা কি করবেন। বেশি দামে তাদের বিক্রি করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
দাম বাড়ার বিষয়ে ধূমপায়ী শাহ-আলম বলেন, তিন দোকান ঘুরে দেখলাম। সব দোকানেই বেনসন সিগারেট ১৫ টাকা। বৃহস্পতিবারও যা কিনেছি ১২টাকায়। এখন অভ্যাস যেহেতু হয়েছে তখন কম বেশি তো খেতেই হবে। তাই তারাও এক প্রকার বাধ্য হয়েই বেশি দামে কিনছি।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ডিপ্লোমা ১ কেজি ওজনের গুঁড়ো দুধ বিক্রি হচ্ছে ৬১০ টাকায়। যা বৃহস্পতিবারও বিক্রি হয়েছে ৫৯০ টাকা। ৫শ গ্রাম ওজনের ডিপ্লোমা গুঁড়ো দুধ বিক্রি হচ্ছে ৩১০ টাকা যা গতকালও ছিলো ২৯৫ টাকা। মার্কস গুঁড়ো দুধ ৫শ গ্রাম বিক্রি হচ্ছে ২৬৫ টাকা যা গতকালও ছিলো ২৫০ টাকা। কোয়ালিটির এক কেজি গুঁড়ো দুধ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায় যা গতকালও ছিলো ৫৯০ টাকা।
এ বিষয়ে জিনিয়াস শপিং সেন্টারের ম্যানেজার আবুল কালাম বলেন, বৃহস্পতিবার গুঁড়ো দুধের কোম্পানি যে দুধ সরবরাহ করেছে সেখানে আমাদের বেশি দামে কিনতে হয়েছে। তবে, চিনির দাম এখনো বাড়েনি। আমরা আগের দামেই বিক্রি করছি। বাজেটে দ্রব্যমূল্যে বাড়লে আমাদের কিইবা করার আছে। আমরা ব্যবসায়ী আমরা যেমন কিনব তেমনিই বিক্রি করব।
প্রস্তাবিত বাজেটে মোবাইল সেট ও ভয়েস কলের ওপর শুল্ক বাড়ানো হলেও এখনও বাজারে এর প্রভাব দেখা যায়নি। মোবাইল সেটের দাম বাড়ার বিষয়ে গুলশানের ডিজিটন মোবাইল শো-রুমের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার সাকিবুল হাসান বলেন, মোবাইলফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে আমরা দাম বাড়ানোর বিষয়ে এখনো কোনো ধরনের নির্দেশ পাইনি। এখনও আগের দামেই মোবাইল সেট বিক্রি করা হচ্ছে।
তবে, মোবাইল ফোনের কলরেটের ওপর ভ্যাট বাড়ানোর বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে গ্রামীণফোনের হেড অফ এক্সটার্নাল কমিউনিকেশনস সৈয়দ তালাত কামাল বলেন, অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) পক্ষ থেকে এ বিষয়ে জানানো হবে। এরপর আপনাদের বিষয়টি সম্পর্কে জানানো হবে। তবে, কলরেটের ওপর ভ্যাট বসানো হলে অবশ্যই গ্রাহকদের ওপর চাপ বাড়বে। ফলে, এক ধরনের বিরূপ পরিবেশ তৈরি হতে পারে।